রান্নাঘরে আরশোলা থাকা খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। খাবার-দাবার খোলা অবস্থায় থাকা, জলের পাইপে লিক, আনাচ-কানাচ থেকে শুরু হয় আরশোলার উপদ্রব। আরশোলা অত্যন্ত ক্ষতিকারক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানাচ্ছে, আরশোলা থেকে ই-কোলাই, সালমোনেল্লার মতো ৩৩ ধরনের ব্যাক্টেরিয়া যেমন ছড়ায়, তেমনই ৬ ধরনের প্যারাসাইটের আঁতুরঘর আরশোলার শরীর। এক-দুটো আরশোলা বাড়িতে থাকলেই তা ক্ষতিকারক রোগ ছড়ানোর পক্ষে যথেষ্ট। আরশোলা থেকে ডায়রিয়া, আন্ত্রিক, কলেরা, প্লেগ, টাইফয়েডের মতো রোগ ছড়ায়। এ ছাড়াও অ্যাস্থমা, খাদ্যনালীর ও মূত্রনালীর সংক্রমণও হতে পারে আরশোলা থেকে।
আরশোলা তাড়াতে আমরা বাড়িতে বাজারচলতি রাসায়নিক স্প্রে করে থাকি। এই স্প্রে আরশোলা সাময়িক ভাবে তাড়ালেও সম্পূর্ণ তাড়াতে পারে না। অথচ এই সব রাসায়নিক বাড়ির লোকদের, পোষ্যদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক। এর থেকে ত্বকে বিভিন্ন রকম অ্যালার্জি, অ্যাস্থমার সমস্যা হতে পারে।
বোরিক অ্যাসিড পাউডার মানুষ ও পোষ্যদের জন্য ক্ষতিকারক না হলেও আরশোলাদের জন্য বিষাক্ত। বোরিক অ্যাসিড আরশোলার হাড় নষ্ট করে দেয় ও শরীর ডিহাইড্রেট করে দেয়। তাই আরশোলা তাড়াতে ব্যবহার করুন এই বোরাক্স বল। এই বল বাড়িতে ছড়িয়ে রাখার ২৪-৭২ ঘণ্টার মধ্যে কাজ করতে শুরু করবে। এবং ৩-৪ সপ্তাহের মধ্যে আপনার বাড়ি সম্পূর্ণ আরশোলামুক্ত হয়ে যাবে।
কী কী লাগবে
কাঁচা ডিমের কুসুম ২টো
বোরিক অ্যাসিড পাউডার: ৩০-৪০ গ্রাম
কী ভাবে বানাবেন
ডিম ও বোরিক অ্যাসিড পাউডার মিশিয়ে হাতের চাপে গোল গোল বল তৈরি করে নিন। এক ঘণ্টার মধ্যেই বল শুকিয়ে যাবে।
এই বল দিয়ে আরশোলা তাড়ানোর আগে কয়েকটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে-
কোনও খাবার যেন ঢাকনা ছাড়া না থাকে
খেয়াল রাখুন জলের পাইপ যেন ঠিক থাকে। কোনও জলের পাত্রও যেন আঢাকা না থাকে।
কোথায় কোথায় রাখবেন বোরাক্স বল
এমন জায়গায় এই বল রাখতে হবে যাতে তা আরশোলার চোখে পড়ে এবং আরশোলা তা চেখে দেখতে উদ্বুদ্ধ হয়। বাড়ির ঠিক কোন অংশে সবচেয়ে বেশি আনাগোনা আরশোলাদের? সন্ধের পর বা রাতে অন্তত দু’ঘণ্টার জন্য আলো নিবিয়ে অন্ধকার করে রাখুন। তারপর হঠাত্ আলো জ্বালিয়ে দিন। দেখবেন আরশোলারা দৌড়ে পালাতে যাচ্ছে। কোন দিকে যাচ্ছে ওরা? যে দিকে যাচ্ছে লুকোতে সেই জায়গাগুলোতেই রাখতে হবে বোরাক্স বল। সাধারণত জল বা খাবার যে দিকে থাকে সে দিকেই আরশোলাদের থাকার প্রবণতা বেশি। তাই যেখানে খাবার বা জল থাকে তার ৫ ফুটের মধ্যেই আরশোলাদের ঘোরাফেরা করতে দেখতে পাবেন। এ সব জায়গার জানলা, আসবাবের খাঁজে খাঁজে, ফ্রিজের কোনায় রেখে দিন বোরক্স বল।
এ ছাড়াও কাবার্ড, ইলেকট্রিনিক ওয়্যার, নর্দমার মুখেও রাখতে পারেন। বাথরুমেও রাখতে পারেন কিছু।
দেওয়াল, দরজা বা আলমারির ক্র্যাক থেকে বাড়িতে আরশোলা ঢোকে। তাই বাড়ি সুরক্ষিত রাখতে এই সব ফুটো, গর্ত সিলিকন দিয়ে সিল করুন।
আরও পড়ুন: কী খেতে ইচ্ছে করছে? বলে দেবে আপনি কেমন আছেন
আরশোলা মারার পর ঘর ভাল করে পরিষ্কার করা প্রয়োজন। আরশোলা থেকে অনেক রকম জীবাণু ছড়ায়। তাই বেকিং সোডা ও সাবান জলে পুরো বাড়ি মুছে ফেলুন।