Covid Infection

উপসর্গ থাকা সত্ত্বেও কোভিড পরীক্ষার ফল নেগেটিভ? কী করবেন

বহু মানুষের করোনার যাবতীয় উপসর্গ থাকার পরেও রিপোর্ট নেগেটিভ আসছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০২১ ১৪:২০
Share:

কোন পরিস্থিতিতে ভুল রিপোর্ট আসতে পারে, জেনে নিন ফাইল চিত্র

করোনার প্রকোপে দেশ নাজেহাল। তাই আর-টি পিসিআর কোভিড পরীক্ষার চাহিদাও তুঙ্গে। কিন্তু বহু মানুষের করোনার যাবতীয় উপসর্গ থাকার পরেও রিপোর্ট নেগেটিভ আসছে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, ভুল রিপোর্ট থাকায় হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে না সময়ে। তাই কোভিডের প্রভাব অনেক গুরুতর হয়ে যাচ্ছে।

Advertisement

এমনিতে আরটি-পিসিআর টেস্ট কোভিড ধরা পড়ার জন্য এখনও অবধি সেরা পরীক্ষা। কিন্তু তার মানেই এই নয়, যে ফল সব সময় ঠিক হবে। কোন পরিস্থিতিতে ভুল রিপোর্ট আসতে পারে, জেনে নিন।

ভাইরাল লোড

Advertisement

করোনা ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার ৫ দিনের মধ্যে শরীরে সংক্রমণ দেখা যায়। কিন্তু ৩-৫ দিনের আগেই যদি পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া হয়, তা হলে শরীরে ভাইরাল লোড কম থাকবে। তাই রিপোর্ট প্রথমে নেগেটিভ এলেও হয়তো কয়েক দিন পর ফের পরীক্ষা করালে পজিটিভ আসতে পারে। এখানে বলে রাখা ভাল, অনেক নতুন রূপ পরিবর্তিত ভাইরাসের ক্ষেত্রে সংক্রমণ হতে পারে ৫ দিনের আগেই। তাই রিপোর্ট ভুল আসার পিছনে এটাই অন্যতম বড় কারণ নয়।

যাচাইয়ের পদ্ধতি

গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করার ল্যাবেরোটরি ছিল ১৪টা। সেটা বেড়ে এ বছরের এপ্রিল মাসে হয়েছে ২৪০০। কিন্তু দেশে সংক্রমণের স‌ংখ্যাও যে হারে বাড়ছে, তাতে আরটি-পিসিআর পরীক্ষার চাহিদা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে ল্যাবগুলি। সাধারণত সব ল্যাব থেকে পজিটিভ এবং নেগেটিভ স্যাম্পলগুলি যদৃচ্ছভাবে সংগ্রহ করে ফের পরীক্ষা করে দেখার কথা। যাতে ল্যাবের গুণগত মান বিচার করা যায়। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে সেগুলো কতটা করা হচ্ছে, তা নিয়ে বহু জনের বহু মত। এমনিতে একটা রিপোর্ট ভুল আসার পিছনে নানা রকম কারণ থাকতে পারে। ভুল স্যাম্পল সংগ্রহ, ভুল ভাবে সেটা রাখার ব্যবস্থা, পরীক্ষা করার সময় ভুল পদ্ধতি নেওয়া।

রূপ পরিবর্তিত ভাইরাস

আরটি-পিসিআর টেস্ট কিটগুলি তৈরি হয়েছিল করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময়। তখনকার ভাইরাস সঠিকভাবে ধরা পড়ত এই পরীক্ষায়। কিন্তু এখন ভাইরাস আর আগের মতো নেই। রূপ পরিবর্তন করে এখন অনেক বেশি ভয়ানক রূপ নিয়েছে করোনা। তাই অনেকগুলো নতুন স্ট্রেন আরটি-পিসিআর টেস্টে ঠিক মতো ধরা না-ও পড়তে পারে।

সিটি ভ্যালু

আরটি-পিসিআর পরীক্ষায় স্যাম্পল থেকে নিউক্লেইক অ্যাসিড বার করে তার সম্প্রসারণ করা হয়। করোনার সংক্রমণের জন্য দায়ী যেটা, সেটা ধরার জন্য। এই সম্প্রসরণ করা হয় বারে বারে (বা একেক সাইকেলে) একটা সীমা বজায় রেখে (সিটি ভ্যালু)। রক্তে ভাইরাল লোড যত বেশি হবে, তত কম বার সম্প্রসারণ করা প্রয়োজন হবে সেটা ধরার জন্য। আইসিএমআর নেগেটিভ রিপোর্ট জন্য ৩৫ সিটি ভ্যালু নির্দিষ্ট করেছে। এর বেশি বার সমপ্রসারণ করার প্রয়োজন পড়লে, ধরে নিতে হবে, রক্তে যে ভাইরাল লোড রয়েছে, তা নেহাতই কম। কিন্তু অনেক রাজ্যে এই সংখ্যাটা নাকি ২৪ পর্যন্ত নামিয়ে নেওয়া হয়েছে। তার মানে বহু মানুষ যাঁদের রক্তে ভাইরাল লোড কম হলেও উল্লেখযোগ্য, তাঁদের রিপোর্টও নেগেটিভ আসবে। আপাতত, কোন রাজ্যে কোন সংখ্যা মেনে রিপোর্ট তৈরি হচ্ছে বলা মুশকিল। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, কোভিড রিপোর্ট ভুল আসার অন্যতম কারণ হতে পারে সিটি ভ্যালু।

কী করণীয়

যদি আপনার কোভিডের যাবতীয় উপসর্গ থাকে তা হলে নেগেটিভ রিপোর্ট আসা সত্ত্বেও নিভৃতবাসে থাকুন। এবং রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা ঘন ঘন মাপুন। জ্বর থাকলে দেহের তাপমাত্রা মাপুন। মনে সংশয় থাকলে আরেকবার টেস্ট করাতে পারেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন