মেদুবড়ার মধ্য ভাগে ছিদ্রটি কি শুধুই সৌন্দর্যের জন্য? ছবি: সংগৃহীত।
বিউলির ডালের তৈরি মুচমুচে বড়া। ঠিক বাঙালির আলুর চপ বা বেগুনি, পেঁয়াজির মতো নয়, বরং আকৃতিতে বেশ আলাদা। গোলাকার বড়ার মাঝখানে বড় একটি ছিদ্র। দেখতে যেমন পৃথক, খেতেও কিন্তু চিরপরিচিত ডাল বড়া, পকো়ড়ার চেয়ে আলাদা। দক্ষিণী এই খাবারই পরিচিত মেদুবড়া নামে।
দক্ষিণ ভারতের জনপ্রিয় খাবারটি বহু দিন ধরেই বাংলায় পরিচিত। ইদানীং কলকাতা থেকে শহরতলির পথেঘাটে ইডলি, দোসার পাশাপাশি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে মেদুবড়া। সকালের জলখাবার হোক বা দুপুরের খাবার, সান্ধ্য খিদেতেও মেদুবড়া বেছে নিচ্ছেন কলকাতার অনেকেই। জিনিসটি পরিবেশন করা হয় সম্বর (বিশেষ ধরনের টক ডাল) দিয়ে। কিন্তু মেদুবড়া যে খেয়েছেন বা খাচ্ছেন, কখনও মনে হয়েছে কি, আর পাঁচটা বড়ার চেয়ে এটি দেখতে কেন আলাদা? একি কেবল বাহ্যিক সৌন্দর্যের জন্য? নাকি মধ্যভাগের ছিদ্রের নেপথ্যে রয়েছে কোনও গূঢ় কারণ?
রান্নাবান্না নিয়ে যাঁরা চর্চা করেন, তাঁরা বলছেন শুধু নান্দকিতা নয়, মেদুবড়ার মাঝখানে ছিদ্র তৈরির পিছনে রয়েছে বাস্তব কারণও। বিউলির ডাল ভিজিয়ে বেটে তা দিয়ে তৈরি হয় বড়া। মিশ্রণটি হয় বেশ ঘন। জল দিতে হয় খুবই অল্প। স্বাভাবিক ভাবেই এত ঘন মিশ্রণ দিয়ে বেশ মোটাসোটা বড়া তৈরি করতে গেলে এবং দ্রুত ভাজতে হলে মধ্য ভাগের অংশটি কাঁচা থেকে যেতে পারে। কিন্তু যদি সেই অংশে ছিদ্র করে দেওয়া হয়, তেল পাবে মাঝের অংশটিও। ফলে, বড়া বেশ বড় আকারের হলেও মাঝখানটি মোটেও কাঁচা থাকবে না। সব অংশ সমান ভাবে রান্না হবে।
তা ছাড়া, গরম তেল বড়ার মধ্যভাগ দিয়ে প্রবেশ করার ফলে এটি বাইরে মুচমুচে অথচ ভিতর থেকে বেশ নরম হয়। মাঝের ছিদ্রটি থাকার জন্য তেল ঝরিয়ে ফেলাও কিছুটা সহজ হয়। সেই কারণেই ভাবনাচিন্তা করেই মেদুবড়ার এমন আকার তৈরি করা হয়েছে।