ঝাড়খণ্ডের প্রত্যন্ত গ্রামে অ্যানথ্র্যাক্সে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল ৭ জনের। পরিস্থিতি দেখতে আজ সিমডেগায় ঘটনাস্থলে যান রাজ্যের মুখ্যসচিব সজল চক্রবর্তী।
রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা সুমন্ত মিশ্র জানিয়েছেন, সিমডেগার বানো ব্লকের করুচডেগা টুংরি টোলায় রোগের প্রকোপ ছড়িয়েছিল। সংক্রামিত গবাদি পশুর মাংস খেয়ে কয়েক জন অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের পেটে ব্যথা, রক্তবমি শুরু হয়। গোটা শরীরে ফোস্কা পড়ে। সুমন্তবাবু বলেন, “ঝাড়খন্ডে এই প্রথম বার হানা দিল অ্যানথ্র্যাক্স। তবে চিকিৎসাধীন লোকেরা এখন বিপদমুক্ত।”
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, টুংড়ি টোলা একটি ছোট জনপদ। ২৫-২৬টি পরিবারের বাস। মাস তিনেক আগে সেখানে অজানা রোগে কয়েক জনের মৃত্যু হয়। গত সপ্তাহে ফের একই ভাবে ৪-৫ জন মারা যান। অসুস্থ হয়ে পড়েন অনেকে। এর পরই প্রশাসনিক স্তরে ঘটনার খোঁজ নেওয়া শুরু হয়।
আজ দুপুরে এ নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন রাজ্যের মুখ্যসচিব। সেখানে হাজির ছিলেন রাজ্যের ‘ইন্টিগ্রেটেড ডিজিজ সার্ভিল্যান্স প্রোগ্র্যাম’-এর অধিকর্তা রমেশ প্রসাদ। তিনি জানান, মৃত গবাদি পশুর মাংস থেকে রোগ ছড়িয়েছিল। মৃত পশুর মাংস কাটতে গিয়েও কয়েক জন আক্রান্ত হন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টুংড়ি টোলায় অ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধ বিলি করছে প্রশাসন। ওই জনপদে পশু চিকিৎসকদের একটি দল পাঠানোরও চিন্তাভাবনা করছে রাজ্য সরকার। মুখ্যসচিব সজলবাবু বলেন, “গবাদি পশু থেকেই মানুষের মধ্যে ওই রোগ সংক্রামিত হয়। চাষাবাদের জন্য পাহাড়-জঙ্গল ঘেরা ওই সব গ্রামে প্রায় প্রতিটি বাড়িতে গবাদি পশু প্রতিপালন করা হয়। সেই সব প্রাণীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে পশু চিকিৎসকদের সিমডেগা পাঠানো হবে।” তিনি আরও জানান, এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে ঝাড়খণ্ড সরকার। পরের সপ্তাহে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফেও চিকিৎসকদের একটি দল সিমডেগায় যাবে।
অন্য দিকে, অ্যানথ্র্যাক্সের আতঙ্কে ভুগছে টুংড়ি টোলা। পুলিশ জানায়, অসুস্থ কয়েক জনের রোগ সারাতে না পারায় মঙ্গলবার স্থানীয় এক হাতুড়ে চিকিৎসককে পিটিয়ে মেরে ফেলে ওই জনপদের বাসিন্দারা। নিহতের নাম লরেন্স ডাবিং (৫৪)। জেলার পুলিশ সুপার রাজীবরঞ্জন সিংহ বলেন, “নিহত ওই ব্যক্তি জঙ্গলের পাতা-শিকড় দিয়ে ওষুধ তৈরি করতেন। কিন্তু অ্যানথ্রাক্সের চিকিৎসা তিনি করতে পারেননি। কয়েক জনের মৃত্যুর পরই ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীদের গণপিটুনিতে তাঁর মৃত্যু হয়। অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে।”