অনিয়ম ধামাচাপা দিতে হাজিরা খাতার পাতা ছেঁড়ার নালিশ

হাসপাতালে চিকিৎসকদের হাজিরায় অনিয়ম ধামাচাপা দিতে রেজিস্ট্রার খাতার বেশ কিছু পাতা ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি চিকিৎসকদের হাজিরা নিয়ে অনিয়মের তদন্তে নেমে এমনই তথ্য পেয়েছেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ, শল্য বিভাগের কয়েকজন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে গত বছর জুন থেকে হাজিরার অনিয়ম রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:৪১
Share:

হাসপাতালে চিকিৎসকদের হাজিরায় অনিয়ম ধামাচাপা দিতে রেজিস্ট্রার খাতার বেশ কিছু পাতা ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি চিকিৎসকদের হাজিরা নিয়ে অনিয়মের তদন্তে নেমে এমনই তথ্য পেয়েছেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ, শল্য বিভাগের কয়েকজন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে গত বছর জুন থেকে হাজিরার অনিয়ম রয়েছে। স্টেটাস রিপোর্ট তৈরি নিয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের রোগী ক্যলাণ সমিতির চেয়ারম্যান গৌতম দেব নির্দেশ দিলে কর্তৃপক্ষ বিস্তারিত খতিয়ে দেখার কাজ শুরু করেন। প্রতিটি দফতর থেকে হাজিরার খাতা নির্দিষ্ট সময় পর অধ্যক্ষের দফতরে আনার জন্য এক জন কর্মীও আলাদা ভাবে নিয়োগ করা হয়েছে। প্রতিদিনের হাজিরার ওই খাতা খতিয়ে দেখতে গিয়েই সম্প্রতি অধ্যক্ষ সমীর ঘোষ রায়ের নজরে পড়ে রেজিস্ট্রি খাতায় কিছু পাতা একসঙ্গে ‘স্ট্যাপলড’ করা রয়েছে। কেন তা এ ভাবে স্ট্যাপলড করা রয়েছে তা খতিয়ে দেখতে গিয়ে অধ্যক্ষের নজরে পড়ে স্ট্যাপলড্ করা অংশে বেশ কিছু পাতা ছেঁড়া রয়েছে। এর পরেই বিষয়টি নিয়ে পুলিশে অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে।

Advertisement

মঙ্গলবার হাসপাতালে রোগী ক্যলাণ সমিতির বৈঠকের পর উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “চিকিৎসকদের হাজিরার অনিয়ম নিয়ে যে সমস্ত অভিযোগ রয়েছে তা নিয়ে আগামী মার্চে তার স্টেটাস রিপোর্ট নিয়ে রোগী ক্যলাণ সমিতির বৈঠকে আলোচনা করা হবে। তার আগে কলেজের পরিচালন কমিটির বৈঠকেও বিষয়টি আলোচনা হবে।”

এ দিকে আজ, বুধবার কলেজ কাউন্সিলিংয়ের বৈঠকে চিকিৎসকদের একাংশের হাজিরায় অনিয়ম নিয়ে ফের সতর্ক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের সুপার সমীর ঘোষ রায় বলেন, “রেজিস্ট্রার খাতার বেশ কিছু পাতা ছেঁড়া থাকার বিষয়টি নজরে এসেছে। পুলিশে একটি অভিযোগও করা হয়েছে। বিস্তারিত স্ট্যাটাস রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে।” তবে এত কিছুর পরেও হাসপাতালের সময় চিকিৎসকদের একাংশের অনুপস্থিতি নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ রয়েইছে। অনিয়ম এড়াতে বায়োমেট্রিক অ্যাটেনডেন্স পদ্ধতি চালু কার হয় মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। কিন্তু সেই ব্যবস্থা মাঝেমধ্যেই অকেজো হয়ে যায় বলে তার সঙ্গে পাশাপাশি রেজিস্ট্রার খাতাতে সই করানোর বিষয়টিও চালু রাখা হয়। এবং তা অধ্যক্ষ প্রতিদিন মিলিয়ে দেখতে শুরু করেছেন। হাসপাতালের একটি সূত্রই জানিয়েছে, অনুপস্থিত থাকলেও রেজিস্ট্রার খাতা অধ্যক্ষের ঘরে যাওয়ার আগে কিছু চিকিৎসক অন্য কাউকে দিয়ে ‘সই’ করাচ্ছেন বলে অভিযোগ। শল্য বিভাগের এক চিকিৎসকের ক্ষেত্রে বিষয়টি সন্দেহ হওয়ায় অধ্যক্ষ বিভাগীয় প্রধানকে খবর পাঠিয়ে তাঁকে তখনই দেখা করতে ডেকে পাঠান। কিন্তু ওই চিকিৎসক হাজির হতে পারেননি বলে অধ্যক্ষ নিজেই জানিয়েছেন। আলোচনায় যে সমস্ত অভিযোগ তুলে ধরা হবে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।

Advertisement

অন্য দিকে হাসপাতালের ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানে নিয়ম মেনে ১৪২ টি ওষুধ রাখা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। দোকান কর্তৃপ৭রে অভিযোগ ছিল চিকিৎসকরা জেনেরিক নামে প্রেসক্রিপশন লিখছেন না বলে। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে চিকিৎসকদের সচেতন করার কাজও শুরু হয়েছে। তাতে জেনেরিক নামে প্রেসক্রিপশন লেখা বেড়েছে বলে এ দিন মন্ত্রী দাবি করেন। তা ছাড়া অধ্যক্ষকে চেয়ারম্যান করে প্যাথলজির প্রধান এবং সুপারকে নিয়ে একটি কমিটি গড়া হয়েছে। সমস্যা নিয়ে এ দিন রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে প্রশ্ন তুলেছেন মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির বিধায়ক শঙ্কর মালাকার। তার ্ভিযোগ, ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান থেকে যে ওষুধ দেওয়া হচ্ছে তা যথাযথ নয়। একই ওষুধ কিন্তু কম ডোজের ওষুধ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পেয়েছি। সে সব খতিয়ে দেখতে কমিটি গঠন করা হয়েছে। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ক্যান্টিন চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। তা ছাড়া রোগীদের নিয়ে যে সমস্ত অ্যাম্বুল্যান্স যাতায়াত করে পরিবহণ দফতর থেকে তাদের রেট নির্ধারণ করে দেওয়ারর কথা ভাবা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন