আরও বেশি ওষুধকে অত্যাবশ্যক তালিকায় এনে দামের ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দিতে পারে কেন্দ্র। যাতে সহজেই তা সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার নাগালে আসে। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কমিটি মঙ্গলবারই প্রথম বৈঠকে বসে। তবে কী সিদ্ধান্ত হল, তা নিয়ে মুখ খুলতে রাজি হয়নি মন্ত্রক।
২০১২ সালেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সায় পেয়েছিল ওষুধের দাম সংক্রান্ত জাতীয় নীতি। তার পর গত বছরেই দৈনন্দিন জীবনে অপরিহার্য এমন ৩৪৮টি ওষুধ সরকারের মূল্য নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার আওতায় আনার কথা ঘোষণা করা হয়। এই সিদ্ধান্তের আগে সেই সংখ্যা ছিল ৭৪। এ বার সেই সংখ্যা আরও বাড়ানো হতে পারে বলেই জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
তবে ওষুধ শিল্পের মতে, এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে ফের সমস্যার মুখে পড়তে পারে গ্ল্যাক্সো স্মিথক্লাইন, অ্যাবট, ফাইজারের মতো বিদেশি ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা। গত কয়েক বছরে ভারতে পেটেন্ট নিয়ে ঝামেলায় পড়েছে বিদেশি ওষুধ সংস্থাগুলি। উন্নয়নশীল দেশে যা তাদের অন্যতম আয়ের সূত্র। কয়েকটি ক্ষেত্রে দেশীয় সংস্থাগুলি কম দামে একই ধরনের ওষুধ তৈরির ছাড়পত্র পাওয়ায় সমস্যায় পড়েছে বিদেশি সংস্থারা।
পাশাপাশি বিশেষজ্ঞদের মতে, গত বছরে অত্যাবশ্যক ওষুধের সংখ্যা বাড়ানোর প্রভাব থেকেই এখনও বেরিয়ে আসতে পারেনি অনেক সংস্থা। এরই সঙ্গে ওখহার্ড, র্যানব্যাক্সির মতো দেশীয় সংস্থাগুলির ওষুধের মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় আয় কমেছে তাদেরও। যে কারণে ওষুধ শিল্পমহলের দাবি, ফের অত্যাবশ্যক ওষুধের সংখ্যা বাড়ানো হলে সমস্যাও বাড়বে। তবে ভারতে ১,৫০০ কোটি ডলারের বাজার থেকে বিদেশি সংস্থাগুলির বেরিয়ে যাওয়া সহজ নয় বলেই মনে করছে তারা।
নতুন সরকার এলে ওষুধের দাম সংক্রান্ত জনমোহিনী নীতি শিথিল করার যে প্রত্যাশা ছিল, এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে তা ধাক্কা খাবে বলে মনে করছে শিল্পমহল। ইতিমধ্যেই নাম না-করে বিদেশি ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থার এক কর্তা বলেন, “দাম সংক্রান্ত কমিটি ফের গঠন করা হল দেখে অবাক লাগছে। নতুন সরকারের প্রতিশ্রুতির সঙ্গে যা মেলে না।”
যদিও ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার পক্ষে ফের এক বার সওয়াল করেছেন জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত আন্দোলনকারীরা। অল ইন্ডিয়া ড্রাগ অ্যাকশন নেটওয়ার্কের সদস্য চিনু শ্রীনিবাসনের দাবি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তালিকায় থাকা অনেক অত্যাবশ্যক ওষুধই এখনও ভারতীয় তালিকায় নেই।