আরও তিন শিশুর মৃত্যু, কাঁচা লিচুকে দায়ী করলেন চন্দ্রিমা

গত ২৪ ঘন্টায় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে জ্বর, বমি, খিঁচুনিতে মৃত্যু হয়েছে আরও একটি শিশুর। এই নিয়ে ওই উপসর্গে আক্রান্ত হয়ে ওই হাসপাতালে ১৩টি শিশুর মৃত্যু হল। আরও দু’টি শিশু মারা গিয়েছে গ্রামের বাড়িতে। একই উপসর্গ ছিল তাদেরও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০১৪ ০২:১৯
Share:

গত ২৪ ঘন্টায় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে জ্বর, বমি, খিঁচুনিতে মৃত্যু হয়েছে আরও একটি শিশুর। এই নিয়ে ওই উপসর্গে আক্রান্ত হয়ে ওই হাসপাতালে ১৩টি শিশুর মৃত্যু হল। আরও দু’টি শিশু মারা গিয়েছে গ্রামের বাড়িতে। একই উপসর্গ ছিল তাদেরও।

Advertisement

পরপর শিশুমৃত্যুর কারণ কী, তা অবশ্য বুধবারও স্পষ্ট হয়নি। এ দিন বিধানসভায় রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানান, কাঁচা লিচু খেয়েই কালিয়াচকে শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। বাম আমলেও এই ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি জানান। মন্ত্রীর যুক্তি, কাঁচা লিচুতে টক্সিন থাকে, যা শরীরের পক্ষে বিপজ্জনক। টক্সিন রক্তে শর্করার হার কমাতে থাকে। চন্দ্রিমাদেবীর দাবি, অধিকাংশ শিশুকেই যখন হাসপাতালে আনা হয়েছিল তখন তাদের অবস্থা খুব খারাপ ছিল। সরকারি চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ নেই।

মন্ত্রীর ওই ব্যাখ্যায় অবশ্য সংশয় প্রকাশ করেছেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও চিকিৎসক সূর্যবাবুর বক্তব্য, “বাম আমলেও এক বার এই রকম ঘটনা ঘটেছিল। লিচুর বৃন্তে কীটনাশক থেকে বিষক্রিয়া হয়েছিল বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছিল। কিন্তু কাঁচা লিচুতে টক্সিন থাকে বলে কখনও শুনিনি।” লিচি ভাইরাস থেকে সংক্রমণের যে তত্ত্ব উঠে এসেছে, তাকে একেবারে উড়িয়ে না দিয়ে নাইসেড, এনআইসিডি-র মতো প্রতিষ্ঠানের সাহায্য নেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন সূর্যবাবু।

Advertisement

কাঁচা লিচু খাওয়ার জেরে মৃত্যু ঘটেছে, এই ব্যাখ্যায় মালদহের লিচু চাষিরাও ক্ষুব্ধ। কালিয়াচকের লিচু ব্যবসায়ী আবদুর মতিন, লিয়াকত আলিরা বলেন, “যে দিন থেকে শিশুমৃত্যু শুরু হয়েছে তার তিন-চারদিন আগে থেকেই লিচু পাকতে শুরু করেছে। কাঁচা লিচু গাছে ছিলই না বললে চলে। পাকা লিচু থাকতে কেন শিশুরা কাঁচা লিচু খেতে যাবে?” স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী অবশ্য এ দিন বিধানসভায় তাঁর বিবৃতিতে পাকা লিচু ভাল করে ধুয়ে খাবার পরামর্শ দেন।

মৃত্যুর কারণের এখনও অনুসন্ধান চলছে। মালদহে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যান পালন দফতরের সহ অধিকর্তা রাহুল চক্রবর্তী জানান, লিচুতে ব্যবহৃত কীটনাশকের কতটা অবশিষ্ট রয়েছে, তা নিয়ে বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে বুধবার পরীক্ষা শুরু হয়েছে। কালিয়াচক থেকে সংগৃহীত লিচুর খোসা, পাতা, শাঁস পাঠানো হয়েছে সেখানে। অন্য দিকে, কালিয়াচকের জালালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের খাড়িয়াডোবা গ্রামে নিজেদের বাড়িতে যে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে, তাদের বাড়িতে গিয়ে রিপোর্ট সংগ্রহ করা হয়েছে, জানান জেলার উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অমিতাভ মণ্ডল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন