শিলিগুড়িতে আরও দু’জনের শরীরে সোয়াইন ফ্লু’র জীবাণু মিলল। এঁদের মধ্যে একজন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নার্স। মেডিক্যাল কলেজের আইডি বিভাগে কর্মরত ছিলেন তিনি। তাঁর বাড়ি দার্জিলিঙে।
সোয়াইন ফ্লু’র উপসর্গ নিয়ে গত শনিবার তাঁকে এই বিভাগে ভর্তি করানো হয়। চার বছরের একটি শিশুর দেহেও এ দিন সোয়াইন ফ্লুর জীবাণু মিলেছে। শনিবার ভক্তিনগরের বাসিন্দা ওই শিশুটির দেহরস পরীক্ষার জন্য পাঠানোর পরেই তার পরিবারের লোকজন নিজেদের দায়িত্বে তাকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে যান। এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী।
বিশ্বরঞ্জন বাবু বলেন, “উত্তরবঙ্গে আরও দুই জনের রক্তে সোয়াইন ফ্লু’র জীবাণু মিলেছে। এক জন নার্স এবং একজন শিশু। তাদের বাড়ি দার্জিলিং এবং জলপাইগুড়ি। তবে শিশুটিকে কেন আইসোলেশন ওয়ার্ডে না রেখে পরিবারের লোকের কথায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে তা দেখা হচ্ছে।” তাঁর কথায়, সোয়াইন ফ্লু আক্রান্ত রোগীদের নির্দিষ্ট ওষুধের কোর্স রয়েছে। তা শেষ না হওয়া পর্যন্ত রোগীকে আইলেশন ওয়ার্ডে রেখে চিকিৎসা করাই বিধেয়।”
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের যে নার্সের শরীরে সোয়াইন ফ্লু’র জীবাণু মিলেছে তিনি আইডি’তে কাজ করতেন। সেই কারণেই তিনি যথাযথভাবে মাস্ক বা অন্য প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিয়েছিলেন কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হাসপাতালের চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশও সোয়াইন ফ্লু নিয়ে উদ্বিগ্ন। তাঁরা নার্স, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতিষেধক দেওয়ারও দাবি তুলেছেন।
এ দিন শিলিগুড়ি হাসপাতাল এবং উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে সোয়াইন ফ্লু পরিস্থিতি নিয়ে খোঁজ নেন রাজ্যের স্বাস্থ্যবিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান তথা শিলিগুড়ির বিধায়ক রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য। রুদ্রবাবু জানান, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালেই যাতে সোয়াইন ফ্লু জীবাণু এন-১ এস-১ ভাইরাস নির্ণয়ের ব্যবস্থা করা যায় তারজন্য স্বাস্থ্য দফতর উদ্যোগী হয়েছে। সেই কাজ তাড়াতাড়ি করার চেষ্টা হচ্ছে।” সোয়াইন ফ্লু নিয়ে সচেতনতা প্রচারে এগিয়ে আসার জন্য তিনি স্থানীয় ক্লাব, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলিকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
এ দিকে সোয়াইন ফ্লু আক্রান্ত জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের দুই চিকিৎসক সুস্থ হওয়ায় এ দিন তাঁদের হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হয়েছে। তাঁরা বাড়িতে ফিরেছেন। তবে এ ব্যাপারে জেলা স্বাস্থ্য কর্তারা কোনও মন্তব্য করতে চাননি। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ মৃধা জানান, এ ব্যাপারে যা বলার স্বাস্থ্য ভবন থেকে বলা হবে।
জলপাইগুড়ি জেলা সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে রেখে একজন রোগীর চিকিৎসা চলছে। গত বৃহস্পতিবার বিকেল নাগাদ ওই রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। নতুন করে আর কাউকে সোয়াইন ফ্লুর উপসর্গ নিয়ে এই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়নি বলে জানা গিয়েছে।