ইবোলা-নিয়ম ভেঙে প্রশাসনের কোপে সেই নার্স

নিয়ম অনুযায়ী ২১ দিন বাড়িতে নজরবন্দি থাকার কথা তাঁর। কিন্তু তার তোয়াক্কা না করে গত কাল প্রেমিকের সঙ্গে মেইনের রাস্তায় সাইকেল-সফরে বেরিয়েছিলেন মার্কিন নার্স কেসি হিকক্স। এ দিন তাঁর এই পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করলেন মেইনের গভর্নর পল লেপেজ। এ-ও জানালেন, প্রয়োজনে কেসিকে ঘরবন্দি রাখতে নিজের সব ক্ষমতা ব্যবহার করবেন তিনি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নিউ জার্সি শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৪ ০২:৫৯
Share:

নিয়ম অনুযায়ী ২১ দিন বাড়িতে নজরবন্দি থাকার কথা তাঁর। কিন্তু তার তোয়াক্কা না করে গত কাল প্রেমিকের সঙ্গে মেইনের রাস্তায় সাইকেল-সফরে বেরিয়েছিলেন মার্কিন নার্স কেসি হিকক্স। এ দিন তাঁর এই পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করলেন মেইনের গভর্নর পল লেপেজ। এ-ও জানালেন, প্রয়োজনে কেসিকে ঘরবন্দি রাখতে নিজের সব ক্ষমতা ব্যবহার করবেন তিনি। কারণ আপাতত কেসির ইবোলা ধরা না পড়লেও ‘বিপজ্জনক সময়’ এখনও কাটেনি। সুতরাং তাঁকে জনসমক্ষে আসতে দেওয়া উচিত নয়।

Advertisement

কিছু দিন আগেই সিয়েরা লিওন থেকে নিউ জার্সিতে ফিরেছিলেন কেসি। প্রথমে তাঁকে বিমানবন্দরে বহু ক্ষণ আটকে রাখা হয় ও তার পর হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানেই ২১ দিন কাটানোর নির্দেশ দিয়েছিল প্রশাসন। কিন্তু বিষয়টির তীব্র বিরোধিতা করায় কেসিকে তাঁর মেইনের বাড়িতে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। তবে নিয়ম ছিল ২১ দিনের মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাড়ি ছেড়ে বেরোবেন না তিনি। সে নিয়ম ভেঙেই গত কাল রাস্তায় বেরোন তিনি। তাঁর যুক্তি ছিল, আদালত তাঁর চলাফেরার উপর কোনও বিধিনিষেধ আরোপ করেনি। সুতরাং কেউ তাঁকে আটকাতে পারে না।

এ দিন লেপেজের দফতর জানিয়েছে, যাবতীয় চেষ্টা সত্ত্বেও কেসির সঙ্গে এ মর্মে কোনও রফাসূত্র বের করতে পারা যায়নি। তাই কেসিকে আটকাতে আইন মেনে গভর্নরের হাতে থাকা সব রকম ক্ষমতা ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছে মেইন প্রশাসন। এক চ্যানেলকে লেপেজ স্বয়ং বলেছেন, “আমি ওঁকে কারও ত্রিসীমানার মধ্যে থাকতে দিতে চাই না। ...ওঁর আচরণ বহু মানুষের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি করছে। আমি যা করতে পারি নিশ্চয়ই করব।” জবাবে কেসির আইনজীবীও জানিয়েছেন, কোনও ধরনের আইনি নিষেধাজ্ঞা এলে তার সঙ্গে লড়ার জন্য প্রস্তুত কেসি।

Advertisement

বস্তুত পশ্চিম আফ্রিকার ইবোলা আক্রান্ত দেশ থেকে ফিরে আসা মার্কিন ডাক্তার-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর ২১ দিনের নজরদারি এবং প্রয়োজনে তাঁদের আলাদা করে রাখার যে নিয়ম জারি করেছে আমেরিকার কিছু রাজ্য, তাতে বেশ ক্ষুব্ধ কিছু সংগঠন। কেসির মতোই বহু নার্স জানিয়েছেন, এ ভাবে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হলে কোনও স্বাস্থ্যকর্মী পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলিতে যেতে চাইবেন না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামারও একই মত। সম্ভবত সে কারণেই এত বিতর্কের মাঝেও মেইনে গিয়েছেন তিনি।

বিতর্ক ঠিক না ভুল, তা নিয়ে নিশ্চিত ভাবে কিছু বলা না হলেও হু এ দিন ইবোলা-আক্রান্ত দেশগুলিতে কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য নয়া নির্দেশিকা জারি করেছে। তাতে বলা হয়েছে, যাঁরা সরাসরি আক্রান্তদের মধ্যে কাজ করছেন, তাঁদের বিশেষ ধরনের পোশাক পরতে হবে, ব্যবহার করতে হবে দুটি থেকে তিনটি দস্তানা। কিন্তু তার পরেও যে সংক্রমণ রোখা যাবে, এমন কোনও নিশ্চয়তা নেই। আবার সংক্রমণ হলেও যে তাতে মৃত্যু হবেই, তেমন ভাবারও কোনও কারণ নেই। অন্তত তেমনই মনে করেন ওয়াশিংটন ও নর্থ ক্যারোলাইনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং মন্টানার জাতীয় স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের এক দল বিজ্ঞানী। সম্প্রতি তাঁরা ইঁদুরের উপর পরীক্ষা করে বুঝতে পেরেছেন, ইবোলায় আক্রান্ত হওয়ার পর মৃত্যু হবে কিনা, সেটা নির্ভর করছে প্রাণীটির জিনগত বৈশিষ্ট্যের উপর। অন্তত তেমনই তাঁদের পরীক্ষায় উঠে এসেছে। সেই পরীক্ষার ফলাফল ‘সায়েন্স’ জার্নালে প্রকাশিতও

হয়েছে। তবে এ কথা যে মানুষের ক্ষেত্রেও সত্যি, তা নিয়ে নিশ্চিত নন বিজ্ঞানীরা। সে জন্য আরও পরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন