এইচআইভি আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ করল একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। তাদের দাবি, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে কার্যত বিনা চিকিৎসায় মারা গেলেন এক এডস রোগী।
ওই সংগঠনের সভাপতি দীননাথ গড়াইয়ের অভিযোগ, হাসপাতালের সিবিএস পুরুষ বিভাগে চলতি মাসের ১০ তারিখে ভর্তি হন এডস আক্রান্ত ওই রোগী। তিনি লো পালসরেট, উচ্চরক্ত চাপ ও অ্যানিমিয়াতে ভুগছিলেন। ১৬ অক্টোবর ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। ওই ব্যক্তিকে কোনও চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হয় নি বলে অভিযোগ করে হাসপাতালের সুপার ও বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষের কাছে অভিযোগ দায়ের করে উপযুক্ত তদন্ত ও দোষী চিকিৎসকদের শাস্তির দাবি করল ওই সংগঠন। হাসপাতালের সুপার তথা বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সহ-অধ্যক্ষ উৎপল দাঁ বলেন, “আমরা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তির পায়ুছিদ্রে ক্যানসার হয়েছিল। অপারেশন করার কথা থাকলেও তা করা সম্ভব হয় নি। কারণ চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে বোঝেন অপারেশন হলে ওই ব্যক্তিকে আর বাঁচানো যাবে না। পুরো পরিস্থিতির কথা ওই ব্যক্তির বাড়ির লোকদের জানিয়েও দেওয়া হয়।” ওই সেচ্ছাসেবী সংগঠনের আরও অভিযোগ, কর্মী ঘাটতির কারণে হাসপাতালে এডস বা এইচআইভি আক্রান্তদের বিভিন্ন ডাক্তারি পরীক্ষা করার কেন্দ্রটিও বেহাল। ওই কেন্দ্রে এইচআইভি পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সিডি-৪ রিএজেন্ট মাঝেমধ্যেই থাকছে না বলে অভিযোগ। নিয়মিত মিলছে না এডস রোগীদের ওষুধ, টিএলএন। ফলে রোগীদের যেখানে একসঙ্গে দু’মাসের ওষুধ দেওয়ার কথা, সেখানে মোটে ৭ দিনের ওষুুধ দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। ওষুধ ঘাটতির কথা মেনে নিয়ে উৎপলবাবুও বলেন, “গোটা রাজ্যেই আপতত টিএলএনের তীব্র অভাব। ওই ওষুধটি সরাসরি ন্যাকো থেকে সরবরাহ করা হয়। তবে ওই ওষুধগুলি বা সিডি-৪ পরীক্ষার কিট আমরা স্থানীয় ভিত্তিতে কিনতে পারি। আমরা ন্যাকোর কাছে ওই ওষুধ ও কিটগুলি কিনতে চেয়ে মেলও পাঠায়। কিন্তু ন্যাকো আমাদের পাল্টা মেল করে কোনও অনুমতি দেয়নি। ফলে ওই ওষুধ বা রিজেন্ট কিনতে পারছি না। তবে ওই টিএলএন-র বিকল্প ওষুধ দিচ্ছি আমরা। ফলে এডস রোগীরা বিনা ওষুধে কাল কাটাচ্ছেন, এমন অভিযোগ ঠিক নয়।” তবে কর্মী ও চিকিৎসকের সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে উৎপলবাবু জানান।