মৃত সোমা ওঁরাওয়ের দেহের পাশে তাঁর ছেলে।—নিজস্ব চিত্র।
এনসেফ্যালাইটিস রোগের উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হয়ে বুধবার মালবাজার মহকুমা হাসপাতালে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হল। এ দিন সকালে তিনি মারা যান। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম সোমা ওঁরাও (৬২)। বাড়ি মেটেলি ব্লকের চালসা লাগোয়া মঙ্গলবাড়ি বস্তির টিক লাইনে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত রবিবার জ্বর নিয়ে তাঁকে চালসার মঙ্গলবাড়ি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে তাঁকে রেফার করলে সোমবার মালবাজার মহকুমা হাসপাতালে আনা হয়। কার্যত অচৈতন্য অবস্থায় থাকা সোমা ওঁরাওকে মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ফের রেফার করেন চিকিত্সকরা। পরিবারের তরফে অবশ্য মালবাজার মহকুমা হাসপাতালেই রেখেই তাঁর চিকিত্সার সিদ্ধান্ত নেন পরিবারের লোকেরা। অন্য দিকে ইসলসামপুর হাসপাতালে এনসেফ্যালাইটিসের উপসর্গ নিয়ে ভর্তি দাড়িভিটের বাসিন্দা ধনিবুল্লা (৪৫) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালের কর্মীরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাত দু’টো নাগাদ জ্বরে অসুস্থ অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। এক ঘণ্টা পর তাঁর মৃত্যু হয়।
মালবাজার হাসপাতালের সুপার মাসুদ আলি বলেন, “মৃত সোমা ওঁরাওয়ের শবীরে এনসেফ্যালাইটিসের উপসর্গ ছিল।” এ দিন সোমা ওঁরাও মারা যাওার পর তাঁর ছেলে রাজেশ ওঁরাও বলেন, “তিন-চার দিনের জ্বরেই বাবা মারা যাবে ভাবতে পারিনি।” কেন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলেন না? রাজেশবাবু বলেন, “অ্যাম্বুল্যান্স মিললেও অন্য খরচের কথা ভেবেই সেখানে নিয়ে যাইনি।” সোমবার জাপানি এনসেফ্যালাইটিস নির্ণয়ে সোমা ওরাওঁয়ের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। কিন্তু সেই রিপোর্ট এখনও মেলেনি। জ্বরের ওষুধ, স্যালাইন, সঙ্গে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ দিয়েই চিকিত্সা চলছিল।
এই নিয়ে গত ৭ দিনে মালবাজার মহকুমায় এনসেফ্যালাইটিসের উপসর্গ নিয়ে ৪ জনের মৃত্যু হল। এ বছরে এনসেফ্যালাইটিসে মহকুমায় মৃত্যু হল ১৮ জনের। মহকুমা শাসক জোতির্ময় তাঁতি বলেন, “মহকুমার সব এলাকা থেকেই এনসেফ্যালাইটিসের উপসর্গ নিয়ে অসুস্থের খবর মিলছে। তাই মহকুমা জুড়েই নজর রাখা হচ্ছে।” দক্ষিণ হাঁসখালি, মেটেলি, নাগরাকাটা এবং মালবাজার পুর এলাকায় মশা মারার ধোঁয়া ছড়ানোর কথা থাকলেও ওই কাজের যন্ত্র অপ্রতুল থাকায় সমস্যায় পড়েছে মহকুমা প্রশাসন।