এনসেফ্যালাইটিসের কারণ খুঁজতে ঘুরল দল

এনসেফ্যালাইটিসের সংক্রমণের কারণ খতিয়ে দেখতে গ্রামে দিয়ে আক্রান্তদের বাড়ির পরিবেশ দেখলেন কলকাতা থেকে আসা বিশেষজ্ঞ দলের সদস্যেরা। এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত ময়নাগুড়ির চূড়াভান্ডার এলাকার বাসিন্দা বিশ্বদীপ সরকারের বাড়িতে শনিবার সকালে গিয়েছিলেন দলের সদস্যরা। বিশ্বদীপবাবু উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পরে সুস্থ হয়ে সম্প্রতি বাড়ি ফিরেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৪ ০২:৩২
Share:

এনসেফ্যালাইটিস আক্রান্ত রোগীদের দেখতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব। নিজস্ব চিত্র।

এনসেফ্যালাইটিসের সংক্রমণের কারণ খতিয়ে দেখতে গ্রামে দিয়ে আক্রান্তদের বাড়ির পরিবেশ দেখলেন কলকাতা থেকে আসা বিশেষজ্ঞ দলের সদস্যেরা। এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত ময়নাগুড়ির চূড়াভান্ডার এলাকার বাসিন্দা বিশ্বদীপ সরকারের বাড়িতে শনিবার সকালে গিয়েছিলেন দলের সদস্যরা। বিশ্বদীপবাবু উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পরে সুস্থ হয়ে সম্প্রতি বাড়ি ফিরেছেন। বিশেষজ্ঞরা এ দিন বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন। বাড়ির চারপাশও ঘুরে দেখেছেন। গ্রামে কেউ শুয়োর পালন করেন কি না তাও খোঁজখবর করেছেন। গ্রামে শুয়োর পালন হয় শুনে বিশেষজ্ঞ দলে থাকা স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনের ভাইরোলজি বিভাগের প্রধান নিমাই ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, শুয়োরের থেকে মশার মাধ্যমে রোগের সংক্রমণ হয়ে থাকতে পারে। যেখানে শুয়োর পালন হয়, সেই পরিবারের কয়েকজনের রক্তের নমুনাও দলটি সংগ্রহ করেছে। বিশেষজ্ঞ দলটি ধূপগুড়ি এবং মালবাজারেও এ দিন গিয়েছিলেন।

Advertisement

শুধু শুয়োর নয় জাপানি এনসেফ্যালাইটিস ভাইরাসের অন্যতম প্রধান বাহক পরিযায়ী পাখিও বলে বিশেষজ্ঞ দলটি জানিয়েছে। তাঁরা জানান, কিউলেক্স মশার মাধ্যমে রোগের জীবাণু লোকালয়ে ছড়িয়ে পড়ে, ‘ফ্লেভি ভাইরাস’ গোত্রের ওই জীবানু মানুষের শরীরে বাসা বাধে।

এনসেফ্যালাইটিসের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে শুক্রবার রাতে নিমাইবাবুর নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিশেষজ্ঞ দলটি জলপাইগুড়িতে আসেন। দলের অন্য দুই সদস্য ছিলেন কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক অখিল বিশ্বাস এবং একজন টেকনিশিয়ান। শনিবার সকালে তাঁরা জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার ৩২ জন রোগীর রক্ত নমুনায় এনসেফ্যালাইটিসের ভাইরাস মিলেছে। তাঁদের মধ্যে চার জনের মৃত্যু হয়েছে।

Advertisement

পরিদর্শনে প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য ও সিপিএমের দার্জিলিং জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকার। শনিবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

এ দিন আক্রান্তদের গ্রামের পরিবেশ দেখে বিশেষজ্ঞরা জানান, জাপানি এনসেফ্যালাইটিস ভাইরাস ছড়িয়ে পরার অনুকূল পরিবেশ সেখানে রয়েছে। মানুষের শরীরে জীবানু ঢুকলে রোগীর কখন কী পরিস্থিতি দাঁড়াবে তা আগাম বলা সম্ভব নয় বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে তাঁদের সতর্কতা ভাইরাস বহনকারী কিউলেক্স মশা ধানখেতের জমা জলে দ্রুত বংশবিস্তার করে। স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনের ভাইরোলজি বিভাগের প্রধান বলেন, “জাপানি এনসেফ্যালাইটিস ছড়ানোর সব মাধ্যম এখানে রয়েছে। একবার কেউ আক্রান্ত হলে রোগী কোমায় আচ্ছন্ন হবেন নাকি পক্ষাঘাতগ্রস্ত হবেন তা বলা সম্ভব হয় না। তাই রোদ এড়াতে পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন করা ছাড়া উপায় নেই।”

বিশেষজ্ঞরা জানান, এবার প্রথম উত্তরবঙ্গে জাপানি এনসেফ্যালাইটিসের প্রকোপ দেখা দিয়েছে এমনটা নয়, প্রতি বছর বর্ষায় এই রোগ সংক্রমণ দেখা যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন