এনসেফ্যালাইটিসের রোগীকে বাড়ি নিয়ে গেলেন পরিজনেরা

ঠিক মতো চিকিৎসা হচ্ছে না অভিযোগ তুলে জাপানি এনসেফ্যালাইটিসে (জেই) আক্রান্ত এক বৃদ্ধাকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে চলে গেলেন তাঁর পরিজনেরা। তবে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, অন্য রোগীদের মতো সুষমা সরকার নামে দক্ষিণ দিনাজপুরের হরিরামপুরের বাসিন্দা এই বৃদ্ধারও ঠিকই চিকিৎসা হচ্ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৪ ০২:৪৯
Share:

ঠিক মতো চিকিৎসা হচ্ছে না অভিযোগ তুলে জাপানি এনসেফ্যালাইটিসে (জেই) আক্রান্ত এক বৃদ্ধাকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে চলে গেলেন তাঁর পরিজনেরা। তবে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, অন্য রোগীদের মতো সুষমা সরকার নামে দক্ষিণ দিনাজপুরের হরিরামপুরের বাসিন্দা এই বৃদ্ধারও ঠিকই চিকিৎসা হচ্ছিল।

Advertisement

সুষমাদেবীকে প্রথমে জ্বর নিয়ে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। গত মঙ্গলবার তাঁকে সেখান থেকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে রেফার করা হয়। তারপরে রক্ত পরীক্ষা করে বোঝা যায়, তাঁর জাপানি এনসেফ্যালাইটিস হয়েছে। তাঁর ছেলে বাপ্পা সরকারের অবশ্য অভিযোগ, সুষমাদেবীর চিকিৎসা ঠিক মতো হচ্ছিল না। তাঁকে হাসপাতালের মেঝেতে শয্যায় রাখা হয়েছিল। চিকিৎসকেরাও বাড়ির লোকজনের প্রশ্নেরই ঠিক মতো জবাব দিচ্ছিলেন না। বাপ্পাবাবু বলেন, “এমআরআই করাতে বা ওষুধ কিনতে অনেক টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছিল। এ দিকে চিকিৎসাও ঠিক মতো হচ্ছে না। তাই মা’কে নিয়ে এসেছি।” তিনি জানান, সুষমাদেবীকে আপাতত তাঁরা বাড়িতেই রাখবেন। পরে টাকা পয়সা জোগাড় করে তাঁর ফের চিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন।

হাসপাতালের সুপার সব্যসাচী দাসের অবশ্য বক্তব্য, ওই রোগীর যা চিকিৎসা ঠিকই হচ্ছিল। হাসপাতালে ঠাঁই নেই, তাই অনেককেই মেঝেতে শয্যায় রাখতে হয়। তাঁকেও সেই ভাবেই রাখা হয়েছিল। কিন্তু জেই-র রোগীকে হাসপাতাল কি ছেড়ে দিতে পারে? সব্যসাচীবাবু বলেন, “জেই রোগীকে বাড়িতে নিয়ে গেলে কোনও সমস্যা নেই। এই রোগ ছোঁয়াচে নয়। তাই ওই রোগীর বাড়ির লোক জোর করায় বাধ্য হয়ে ছাড়তে হয়েছে।” তাঁর বক্তব্য, এনসেফ্যালাইটিস রোগীকে বাড়িতে রাখলে চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলেই ফের চিকিৎসাকেন্দ্রে ভর্তি করাতে হবে। সব্যসাচীবাবু জানান, সুষমাদেবীকে যে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়েছে তা দক্ষিণ দিনাজপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককেও জানানো হবে।

Advertisement

এই হাসপাতালে এখনও জ্বর নিয়ে ১৬ জন ভর্তি রয়েছেন। তার মধ্যে ৯ জনের রক্তের নমুনায় জেই পাওয়া গিয়েছে। তাঁদের বাড়ির লোকেরা অবশ্য চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে এ দিনই মেডিক্যাল কলেজে বামফ্রন্টের ৫ জন বিধায়ককে নিয়ে গঠিত পরিষদীয় দল গেলে রোগীর পরিবারের লোকজনেরা তাঁদের কাছে সমস্যার কথা বলেন। দলটির তরফে আনিসুর রহমান দাবি করেন, শুরু থেকেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হলে মৃত্যুর সংখ্যা কমানো যেত। তিনি বলেন, “চিকিৎসকদের ঘাড়ে দোষ চাপালে হবে না। মুখ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী, স্থানীয় মন্ত্রী জানতেন না তা হয় না।”

তবে এ দিনও এনসেফ্যালাইটিসের রক্ত পরীক্ষার কিট পৌঁছনি বালুরঘাট এবং রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে। রায়গঞ্জ হাসপাতালে এ দিন জ্বরের কোনও রোগী আসেননি বলে দাবি করা হয়েছে। বালুরঘাট হাসপাতালে অবশ্য এনসেফ্যালাইটিসের উপসর্গ নিয়ে দু’জন ভর্তি হয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন