এমআরআই চালু হল বহরমপুর মেডিক্যালে

মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে খোলা হল এমআরআই স্ক্যান ইউনিট। বুধবার এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওই এমআরআই স্ক্যান ইউনিটের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৪ ০৩:০৭
Share:

বুধবার ইউনিট উদ্বোধনের পরে। ছবি: গৌতম প্রামাণিক।

মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে খোলা হল এমআরআই স্ক্যান ইউনিট। বুধবার এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওই এমআরআই স্ক্যান ইউনিটের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই এমআরআই স্ক্যান ইউনিট চালু হওয়ায় এখন থেকে মুর্শিদাবাদবাসীকে কলকাতায় যেতে হবে না। বহরমপুরে একমাত্র লালদিঘি এলাকায় একটি বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এমআরআই স্ক্যান হয়ে থাকে। ফলে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ওই ইউনিট চালু হওয়ায় খুশি বহরমপুর তথা মুর্শিদাবাদ জেলার মানুষ। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার তথা সহ-অধ্যক্ষ মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “জিই নামে একটি বহুজাতিক সংস্থা ওই মেশিন বসানো থেকে শুরু করে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করবে এবং এমআরআই স্ক্যান ইউনিট চালানোর দায়িত্ব উইনমার্ক নামে অন্য একটি সংস্থাকে দেওয়া হয়েছে। কোনও রোগীর এখানে স্ক্যান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কলকাতায় বসে থাকা উইনমার্কের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল অন-লাইনে এমআরআই ফিল্ম দেখে অন-লাইনেই রিপোর্ট পাঠিয়ে দেবেন। এতে সময়ও কম লাগবে। ফলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রোগীর এমআরআই স্ক্যান রিপোর্ট পেয়ে গেলে চিকিৎসকের পক্ষে দ্রুত চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়াও সম্ভব হবে।”

Advertisement

এ দিন ওই এমআরআই স্ক্যান ইউনিট উদ্বোধন উপলক্ষে পৃথক একটি অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করে বহরমপুরের মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে হাজির ছিলেন মুর্শিদাবাদের অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলাপরিষদ) নেধারাম মণ্ডল। কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এমআরআই স্ক্যান ইউনিট উদ্বোধনের বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সরকারি ভাবে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জানতে পারে। তার পরেই তড়িঘড়ি ওই ইউনিট উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুতি নিতে হয়। ওই রাতেই উদ্বোধক হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম লেখা ফলকও তৈরি করতে দেওয়া হয়। এমআরআই স্ক্যান ইউনিট উদ্বোধনের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর ছবি-সহ বানানো হয় সুদীর্ঘ ফ্লেক্স। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও এবং জেলা পুলিশ সুপার সি সুধাকরের উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও আগাম প্রস্তুতি না থাকায় তাঁরা দুজনেই হাজির থাকতে পারেননি।

তবে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে উঠে মুর্শিদাবাদের অতিরিক্ত জেলাশাসক বলেন, “যে কোনও ইউনিট খোলার আগে ঘটা করে উদ্বোধন করা হয়। কিন্তু তার পরে মেশিন থাকলেও মেশিন চালানোর মত দক্ষ কর্মী থাকে না। মেশিনের ঠিক মত রক্ষণাবেক্ষণ হয় না। ফলে অনেক সময়ে ভুল রিপোর্ট আসে। রোগী ও রোগীর বাড়ির লোকজনের এখানে যাতে সুষ্ঠু পরিষেবা দেওয়া যায়, তার পদক্ষেপ করলে খুশি হব ।” মণিময়বাবু জানান, “আমাদের এখানে যে মেশিনটি বসানো হয়েছে, সেটি অত্যন্ত আধুনিক মানের। প্রায় ৭৭ সেন্টিমিটার জায়গা থাকার জন্য এমআরআই স্ক্যান করার সময়ে রোগী কোনও প্রকার অস্বস্তি অনুভব করবেন না। সেই সঙ্গে স্ক্যান করার সময়ে রোগী চাইলে কানে হোডফোন দিয়ে গানও শুনতে পারেন। তবে বেসরকারি যে কোনও সংস্থার চেয়ে প্রায় ৫০ শতাংশ কম টাকায় এমআরআই স্ক্যান করানোর সুবিধে বহরমপুর তথা জেলার মানুষ গ্রহণ করবেন বলে আমার বিশ্বাস।”

Advertisement

সেই সঙ্গে এমআরআই স্ক্যান ইউনিট চালানোর ভার যে সংস্থার উপরে রয়েছে, তারা ঠিক মত পরিষেবা দিচ্ছে কিনা দেখার জন্য নিয়মিত নজরদারিও চালানো হবে। এ জন্য কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চার জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলকে নিয়ে একটি কমিটিও গঠন করেছে। সুপার বলেন, “ওই সংস্থার সঙ্গে যে চুক্তি হয়েছে, তাতে সঠিক পরিষেবা দিতে না পারলে চুক্তি বাতিলও হতে পারে।” ওই সংস্থার কর্ণধার গৌরাঙ্গ রায় বলেন, “সঠিক পরিষেবা দিয়ে বহরমপুর তথা মুর্শিদাবাদ জেলার মানুষের আস্থা অর্জন করা আমাদের মূল লক্ষ্য।” বহরমপুরে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ঢুকেই বাম দিকে দুটো ঘর নিয়ে তৈরি হয়েছে ওই এমআরআই ইউনিট। সম্পূর্ণ শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ওই ইউনিট চালু করতে খরচ হয়েছে প্রায় ১০ কোটি টাকা। বিপিএল তালিকাভূক্ত সদস্যদের বিনামূল্যে ওই এমআরআই স্ক্যান করার সুযোগ রয়েছে বলেও মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন