কার্যকর হয়নি পুরনো সিদ্ধান্ত, অসন্তোষ রোগী সমিতির বৈঠকে

পুরনো কিছু সিদ্ধান্ত কার্যকর না- হওয়ায় রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে নিজের অসন্তোষ গোপন করলেন না সমিতির চেয়ারম্যান তথা মেদিনীপুরের বিধায়ক মৃগেন মাইতি। মেডিক্যাল সূত্রে খবর, বৈঠকে তিনি বলেছেন, “যে সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, সেগুলো কার্যকরও করতে হবে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে, অথচ পরবর্তী সময় তা কার্যকর হবে না, এটা হতে পারে না।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৪ ০৪:৩০
Share:

পুরনো কিছু সিদ্ধান্ত কার্যকর না- হওয়ায় রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে নিজের অসন্তোষ গোপন করলেন না সমিতির চেয়ারম্যান তথা মেদিনীপুরের বিধায়ক মৃগেন মাইতি। মেডিক্যাল সূত্রে খবর, বৈঠকে তিনি বলেছেন, “যে সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, সেগুলো কার্যকরও করতে হবে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে, অথচ পরবর্তী সময় তা কার্যকর হবে না, এটা হতে পারে না।”

Advertisement

বৃহস্পতিবার মেদিনীপুর মেডিক্যালে রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠক হয়। সমিতির চেয়ারম্যান মৃগেনবাবু ছাড়াওত ছিলেন মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ তমালকান্তি ঘোষ, হাসপাতাল সুপার যুগল কর প্রমুখ। গত বছরের নভেম্বরে সমিতির বৈঠকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হয়। এরমধ্যে যেমন ছিল ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) এবং ডায়ালিসিস ইউনিটে শয্যা সংখ্যা বাড়ানো, তেমন ছিল রোগীর পরিজনদের সঙ্গে চিকিৎসকেরা যাতে নির্দিষ্ট একটা সময় দেখা করতে পারেন, তা নিয়ে পদক্ষেপ করা। অথচ, এই সময়ের মধ্যে রোগীর পরিজনদের সঙ্গে চিকিৎসকদের নির্দিষ্ট একটা সময় দেখা করা নিয়ে কোনও পদক্ষেপই করা হয়নি। বৈঠকে এ নিয়েই নিজের অসন্তোষ প্রকাশ করেন মৃগেনবাবু। হাসপাতালের আধিকারিকেরা অবশ্য তাঁকে আশ্বস্ত করেন, সিদ্ধান্তটি দ্রুত কার্যকর করার জন্য এ বার পদক্ষেপ করা হবে। অন্যদিকে, প্রস্তাবিত ‘মা ও শিশু সুরক্ষা কেন্দ্র’ নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। প্রায় এক বছর আগে এই প্রকল্পের শিলান্যাস হয়। তবে এরপর আর কাজ বিশেষ এগোয়নি। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শিশু ও মহিলা বিভাগের পরিষেবা নিয়ে মাঝেমধ্যে নানা অভিযোগ ওঠে। কখনও কখনও চিকিৎসার গাফিলতিতে প্রসূতি কিংবা সদ্যোজাতর মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। মাস খানেক আগেও শিশু- মৃত্যু নিয়ে শোরগোল পড়ে মেডিক্যালে। মেদিনীপুরে শয্যার অভাবে অনেক সময় একই শয্যায় দু’জনকে থাকতে হয়। অন্যদিকে, হাসপাতালে শিশু ও মহিলা বিভাগগুলোও রয়েছে ছড়িয়ে- ছিটিয়ে। এরফলে, মাঝেমধ্যে নানা সমস্যাও হয়। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে একই ছাদের তলায় শিশু ও মহিলা বিভাগকে নিয়ে আসার উদ্যোগ শুরু হয়। প্রকল্প মঞ্জুরও হয়। নতুন ভবন তৈরির জন্য প্রায় ১ হাজার ৮০০ বর্গমিটার জায়গার প্রয়োজন ছিল। হাসপাতাল চত্বরেই এই পরিমান জায়গা মেলে। জায়গাটি প্রস্তাবিত এই কেন্দ্র তৈরির জন্য চিহ্ণিতও করা হয়। আপাতত, চারতলা ভবন তৈরি হওয়ার কথা। এ জন্য বরাদ্দ হয়েছে প্রায় ১৬ কোটি টাকা। এ ক্ষেত্রে অর্থ সাহায্য করেছে ‘ন্যাশনাল রুরাল হেলথ মিশন’ (এআরএইচএম)। নতুন ভবনে একশোটিরও বেশি শয্যা থাকবে। সঙ্গে কয়েকটি বিভাগও থাকবে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, যেখানে এই কেন্দ্র গড়ে উঠবে, সেখানে পুরনো কয়েকটি ঘর রয়েছে। কাজ শুরুর আগে ঘরগুলো ভাঙা দরকার। এ জন্য রাজ্যের অনুমতি লাগে। অনুমতির জন্য পদক্ষেপও করা হয়। বৈঠকে পূর্ত দফতরের আধিকারিক জানান, রাজ্যের অনুমতি মিলে গিয়েছে। এ বার কাজ শুরু হবে। বৈঠকে অবশ্য নতুন কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।

মেডিক্যাল সূত্রে খবর, যেহেতু লোকসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়েছে, আচরণবিধি লাগু হয়েছে, সেহেতু নতুন কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। পুরনো সিদ্ধান্তগুলোরই পর্যালোচনা করা হয়েছে। বৈঠক শেষে রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান মৃগেনবাবু বলেন, “পুরনো কিছু সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়নি, এটা ঠিক। আধিকারিকদের বলেছি, যে সব সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যে নেওয়া হয়েছে, যত দ্রুত সম্ভব সেগুলো কার্যকর করতে।”

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন