১১৫ নম্বর ওয়ার্ডের নতুন স্বাস্থ্যকেন্দ্র। ছবি: অরুণ লোধ।
বছর দশেকের মেয়ের প্রবল জ্বর। সঙ্গে মাথা ব্যথা। চিকিৎসার জন্য সোদপুরের ব্রিক ফিল্ড রোড থেকে গীতা নস্করকে দৌড়তে হয়েছিল টালিগঞ্জের এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালে। কারণ, পেশায় পরিচারিকা গীতাদেবীর পক্ষে মেয়েকে এলাকার চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার আর্থিক সঙ্গতি নেই।
এ জুলাই থেকে নিজের ওয়ার্ডেই বিনা খরচে চিকিৎসার সুযোগ পাবেন গীতা নস্করের মতো সাধারণ ওয়ার্ডবাসীরা। কারণ, দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরে কলকাতা পুরসভার ১১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ মানুষের জন্য পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্র কাজ শুরু করবে। ওয়ার্ড সূত্রের খবর, এখানে মশাবাহিত রোগের চিকিৎসা-সহ সাধারণ অসুখেরও চিকিৎসা হবে।
পুরসভা সূত্রের খবর, বেশিরভাগ ওয়ার্ডেই পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্র থাকলেও, ১১৫ নম্বর ওয়ার্ডে এত দিন পর্যন্ত কোনও স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার ব্যবস্থা ছিল না। কিছু হলে স্থানীয় চিকিৎসক, টালিগঞ্জে এম আর বাঙুর হাসপাতাল বা ১৩ নম্বর বরোর স্বাস্থ্য অফিসে যেতে হত। পুরসভা ও স্থানীয় ওয়ার্ড সূত্রের খবর, সাধারণ মানুষের দাবির কথা মাথায় রেখে তালতলা ব্যানার্জিপাড়া রোডে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্য জমি চিহ্নিত করা হয়। ১৯৭৭-এ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ভোলানাথ সেন। কিন্তু নানা আইনি জটিলতায় সেই কাজ আটকে যায়। তার পরে ৩৭ বছরের অপেক্ষা। সম্প্রতি এলাকারই করুণাময়ী ঘাট রোডে পুরসভার একটি খালি জায়গায় স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরির কাজ শুরু হয়।
১১৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেডিক্যাল অফিসার শুভাশিস ভাণ্ডারি জানান, চার তলা ভবনের প্রথম তলাতে আপাতত স্বাস্থ্য ইউনিটটি খোলা হবে। মূলত ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গির মতো মশাবাহিত রোগের চিকিৎসার পাশাপাশি টিবি, জ্বর, সর্দি, কাশির মতো রোগেরও চিকিৎসা হবে। থাকবে মশাবাহিত রোগের রক্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা। সকাল ৮ টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি খোলা থাকবে। ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৃণমূলের রত্না শূরের দাবি, এ মাসের শেষের দিকে স্বাস্থকেন্দ্রটি খুলবে। তখন ছ’দিনই সাধারণ মানুষ বিনা খরচে চিকিৎসার সুযোগ পাবেন।
পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ বলেন, “বিনামূল্যের এই পরিষেবায় সাধারণ মানুষ উপকৃত হবেন। আমরা চেষ্টা করছি অন্য যে সব ওয়ার্ডেও পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্র নেই, সেখানে যত তাড়াতাড়ি পারি তা তৈরি করার।”