খড়্গপুরের গ্রামে ম্যালেরিয়ায় মৃত্যু

ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হলেন খড়্গপুর ২ ব্লকের পপরআড়া গ্রামের ১৭ জন। এঁদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে একজনের। অভিযোগ, ওড়িশা গিয়ে তাঁরা ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হন। এলাকায় আতঙ্ক দূর করতে সোমবার দুপুরে পপরআড়া গ্রামে যায় স্বাস্থ্য দফতরের এক প্রতিনিধি দল। গত ১৬ জুন থেকে শুরু হয়েছে ম্যালেরিয়া-বিরোধী মাস। এমন সময়ে এক আক্রান্তের ম্যালেরিয়াতেই মৃত্যু হওয়ায় উদ্বেগে স্বাস্থ্যকর্তারা। স্থানীয়দের আতঙ্ক কাটাতে ম্যালেরিয়া বিরোধী লোকগান বাজানোর ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৪ ০৫:০৮
Share:

ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হলেন খড়্গপুর ২ ব্লকের পপরআড়া গ্রামের ১৭ জন। এঁদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে একজনের। অভিযোগ, ওড়িশা গিয়ে তাঁরা ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হন। এলাকায় আতঙ্ক দূর করতে সোমবার দুপুরে পপরআড়া গ্রামে যায় স্বাস্থ্য দফতরের এক প্রতিনিধি দল।

Advertisement

গত ১৬ জুন থেকে শুরু হয়েছে ম্যালেরিয়া-বিরোধী মাস। এমন সময়ে এক আক্রান্তের ম্যালেরিয়াতেই মৃত্যু হওয়ায় উদ্বেগে স্বাস্থ্যকর্তারা। স্থানীয়দের আতঙ্ক কাটাতে ম্যালেরিয়া বিরোধী লোকগান বাজানোর ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরিশচন্দ্র বেরা বলেন, “ম্যালেরিয়া বিরোধী মাসেই একজন ম্যালেরিয়ায় মারা গেলেন এটা দুর্ভাগ্যের। তবে সংক্রমণ ওড়িশা থেকে ছড়িয়েছে। গ্রামের মানুষের আতঙ্কের কারণ নেই।” প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে থাকা জেলা উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তথা সংক্রমিত ও অসংক্রমিত রোগের নোডাল অফিসার রবীন্দ্রনাথ প্রধান বলেন, ‘‘আতঙ্কের কিছু নেই। শুধু কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। আমরা ওষুধ দিয়েছি, গ্রামবাসীর রক্ত পরীক্ষা করিয়েছি।” এক মাস নজরদারি চলবে বলে তিনি জানান।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৭ মে পপরআড়া থেকে বিদ্যুতের টাওয়ারের কাজে ওড়িশার অঙ্গারে গিয়েছিলেন এলাকারই নিমাই মণ্ডল, অরূপ পাত্র-সহ ১৭ জন। সেখানে তাঁরা কাজ শেষে তাঁবু টাঙিয়ে রাত কাটাতেন বলে স্থানীয়েরা জানান। স্বাস্থ্যকর্তাদের অনুমান, সেখানেই রাতের বেলায় তাঁদের অ্যানোফেলিস-স্ত্রী মশা কামড়ায়। সেখান থেকেই ম্যালেরিয়ার জীবাণু সংক্রমিত হয় তাঁদের শরীরে। ১৭ জুনের পর থেকেই শ্রমিকেরা একে-একে অসুস্থ হয়ে ফিরতে শুরু করেন। এঁদের সকলেরই উপসর্গ বলতে ছিল, জ্বর সঙ্গে মাথাব্যথা। ক্রমশ অবস্থার অবনতি হওয়ায় নিমাই মণ্ডলকে (৫৭) ভর্তি করানো হয় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। গত ২১ জুন সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। চিকিৎসকেরা জানান, নিমাইবাবু ‘সেরিব্রাল ম্যালেরিয়া’য় আক্রান্ত হওয়ায় তাঁকে বাঁচানো যায়নি।

Advertisement

এ দিকে ইতিমধ্যে জ্বরে আক্রান্ত অনেকেরই অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। আক্রান্তদের মধ্যে ভীম ঘোড়ই ও বিমল ঘোড়ইকে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়। এ ছাড়াও আরও চার জন স্থানীয় নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন। তবে স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধিদের দাবি, প্রত্যেকেই জটিল ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন এমন নয়। তবে আক্রান্তদের মধ্যে থেকে সংক্রমণ ছড়াতে পারে গ্রামবাসীদেরও। তাই এ দিন আতঙ্ক নয়, সতর্কতা বজায়েই জোর দিতে ওই প্রতিনিধি দল এলাকায় পৌঁছন। ঘুমোনোর সময়ে মশারি ব্যবহার, জমা জল না জমতে দেওয়া, জ্বর হলেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে রক্ত পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন