এক রোগীর সিটি স্ক্যান চলছে রামপুরহাট মহকুমা হাসপাতালে। ছবি: অনির্বাণ সেন
আসানসোল থেকে রামপুরহাট মহকুমা হাসপাতালের প্রথম সিটিস্ক্যান ইউনিটের উদ্বোধন করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরেই এক রোগীর সিটি স্ক্যানের মধ্যে দিয়ে চালু করে দেওয়া হয় হাসপাতালের পক্ষে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই ইউনিটের। জেলায় সরকারি হাসপাতালগুলির মধ্যে এটিই দ্বিতীয় সিটি স্ক্যান ইউনিট। এর আগে এখমাত্র সিউড়ি সদর হাসপাতালেই রোগীরা এই পরিষেবা পেতেন।
বস্তুত, বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ওই উদ্বোধন ঘিরে হাসপাতালে সাজো সাজো রব ছিল। পিপিপি (প্রাইভেট-পাবলিক পার্টনারশিপ) মডেলে তৈরি ওই ইউনিটের উদ্বোধন উপলক্ষে হাসপাতাল চত্বরে একটি ছোটখাটো অনুষ্ঠানও হয়। ওই অনুষ্ঠান শেষেই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মোতাবেক সিটি স্ক্যান ইউনিটের ফিতে কেটে ফলক উন্মোচন পর্ব সারলেন রাজ্যের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘণ্টা দেড়েকের ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রামপুরহাটের মহকুমাশাসক উমাশঙ্কর এস, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক কার্তিক কুমার মণ্ডল, রামপুরহাট হাসপাতালের সুপার সুবোধকুমার মণ্ডল, সিটি স্ক্যান ইউনিটের বেসরকারি মালিক অপূর্ব সাহা, বিধায়ক অসিত মাল প্রমুখ। উদ্বোধনের পরেই আশিসবাবু রোগীদের জন্য আরও সুসংবাদ দেন। তাঁর আশ্বাস, “খুব শীঘ্রই এই হাসপাতালে শিশুদের জন্য বারো শয্যাবিশিষ্ট একটি ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট এবং পাঁচ শয্যাবিশিষ্ট ডায়ালিসিস ইউনিট চালু করা হবে। ডায়ালিসিস ইউনিটের জন্য ৩০ হাজার লিটার জলের দরকার। সে ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।” অপূর্ববাবু জানান, এই সিটি স্ক্যান ইউনিটটি অত্যাধুনিক। এর মাধ্যমে অল্প খরচে মানুষের শরীরে সমস্ত অঙ্গের স্ক্যান করার সুযোগ আছে। তিনি আরও বলেন, “দারিদ্র্য সীমার নীচে বসবাসকারী পরিবারগুলির জন্য বিনামূল্যে সিটি স্ক্যান করার সুযোগ দেওয়া হবে।”
এ দিকে, উদ্বোধনের দু’দিন আগেই সিটি স্ক্যান ইউনিটের ঘর থেকে একটি কম্পিউটার চুরি যাওয়ায় বিতর্কে পড়েছিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পুলিশে অভিযোগ দায়ের হলেও সেই কম্পিউটার এখনও উদ্ধার করা যায়নি। সে প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, “এ ব্যাপারে পুলিশকে দোষীদের দ্রুত খুঁজে বের করতে বলা হয়েছে। চুরি যাওয়া কম্পিউটারও উদ্ধার করতে হবে।” অন্য দিকে, ওই চুরি যাওয়া কম্পিউটারের জন্য সিটি স্ক্যান পরিষেবায় কোনও সমস্যা হবে না বলে দাবি করেছে দায়িত্বপ্রাপ্ত বেসরকারি সংস্থা। অপূর্ববাবুর কথায়, “যে কম্পিউটার চুরি গিয়েছে, তাতে কেবলমাত্র অস্থি পরীক্ষা করার জন্য পৃথক একটি সফট্ওয়্যার ছিল। সেটি চুরি যাওয়ার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর জন্য পরিষেবায় কোনও বিঘ্ন ঘটবে না।” তবে, এ ভাবে হাসপাতাল থেকে যন্ত্রাংশ চুরি যাওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকেই সতর্ক থাকার পরামর্শও তিনি দেন।
অন্য দিকে, সিটি স্ক্যান ইউনিটের উদ্বোধনে হাসপাতাল চত্বরে সাউন্ড বক্স বাজানোয় বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সামনেই মাধ্যমিক পরীক্ষা। তার উপর জায়গাটিকে না ঘিরেই অনুষ্ঠান হয়েছে। মন্ত্রীর অবশ্য দাবি, “শব্দ সীমা নিয়ন্ত্রণ করেই বক্স বাজানো হয়েছে। তবু কোনও সমস্যা হয়ে থাকলে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।” মহকুমাশাসকের দাবি, এ ক্ষেত্রে কোনও শব্দবিধি ভঙ্গ হয়নি।