একই সঙ্গে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি হল, পেসমেকারও বসল।
এটা অবশ্য নতুন কিছু নয়। কিন্তু ৬২ বছরের দেবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রে বিষয়টা একটু অন্যরকম।
আশৈশব দুটো পা অকেজো তাঁর। ফলে অন্য রোগীদের মতো পা দিয়ে ক্যাথিটার প্রবেশ করিয়ে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করা সম্ভব নয়। তা হলে উপায়? একই সঙ্গে হাত ফুটো করে তাঁর অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করা হয়েছে। আর গলা ফুটো করে সেই পথ ধরে বুকে বসেছে সাময়িক পেসমেকার। সাধারণ ভাবে যে ধরনের চিকিৎসা জেলা স্তরে সম্ভব নয় বলে এতদিন জানানো হত, সেটাই করে দেখালেন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকেরা।
বুকে অসহ্য ব্যথা নিয়ে দিন কয়েক আগে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন দেবপ্রসাদবাবু। চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে বোঝেন, পরিস্থিতি জটিল। হার্ট অ্যাটাক তো হয়েইছে, পাশাপাশি হার্টে অনেকটা অংশ ব্লকও রয়েছে। দ্রুত অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি প্রয়োজন। বসাতে হবে পেকমেকারও। কিন্তু কী ভাবে? দেবপ্রসাদবাবুর শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কথা বুঝে তখনই বিকল্প পন্থার কথা ভাবেন তাঁরা। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের হৃদরোগ বিভাগের প্রধান চিকিৎসক বিশ্বকেশ মজুমদার বলেন, “এই হাসপাতালে গত তিন বছরে পাঁচ হাজার করোনারি অ্যাঞ্জিওগ্রাফি হয়েছে। হয়েছে বেশ কিছু ভালভ প্রতিস্থাপনও। কিন্তু এই অস্ত্রোপচারটি একেবারেই আলাদা। চিকিৎসক বিশ্বরূপ মুখোপাধ্যায় ও তাঁর দল অস্ত্রোপচারটি করে ওই প্রৌঢ়কে নতুন জীবন দিয়েছেন।”
আপাতত দেবপ্রসাদবাবু সম্পূর্ণ সুস্থ। হার্ট ব্লকের সমস্যার সমাধান হওয়ায় তাঁর টেম্পোরারি পেসমেকারটিও খুলে নেওয়া হয়েছে।