আসানসোল জেলা হাসপাতালে চালু হয়ে গেল ডিপ্লোমা ইন ন্যাশনাল বোর্ডের (ডিএনবি) পাঠ্যক্রম। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৩ অক্টোবর থেকে সাত জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে এই পাঠক্রমটি চালু হয়েছে।
২০১২ সালের গোড়ায় আসানসোলকে স্বাস্থ্য জেলা হিসেবে ঘোষনা করেছিলেন এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পর আসানসোলে জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক নিয়োগ করা হয়। সঙ্গে সঙ্গে আসানসোল মহকুমা হাসপাতালকে জেলা হাসপাতাল হিসেবে উন্নীতও করা হয়। তার পরেই জেলা হাসপাতালে ডিএনবি-র পাঠ্যক্রম শুরু করার উদ্যোগ করে স্বাস্থ্য দফতর। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারের এই পাঠক্রমে চিকিৎসকেরাই গবেষণা করার সুযোগ পান।
একাধিক বার পরিকাঠামো পরিদর্শন করার পর ২০১৩ সালে মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া-র সদস্যরা ডিএনবি-র পাঠ্যক্রমের পাঁচটি বিষয় পড়ানোর অনুমোদন দেন। সেই পাঠক্রমগুলি হল স্ত্রীরোগ, আ্যনাসথেসিয়লজি, শিশুরোগ, অস্ত্রোপচার এবং মেডিসিন। মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া জানিয়ে দেয়, তিন বছরের এই পাঠ্যক্রমে পাঁচটি বিষয়ে মোট ১২ জন করে ছাত্রছাত্রী ভর্তি করা যাবে। অনুমোদন পাওয়ার পরে গত জুলাই মাসে ডিএনবি-র দুই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হাসপাতাল পরিদর্শন করে যান। রাজ্য সরকার ডিএনবি পাঠ্যক্রম চালু করার জন্য ১২ লক্ষ টাকার অনুদান দেয়।
জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সদ্য চালু হওয়া এই পাঠক্রমে মেডিসিন ও অস্ত্রোপচার বিভাগে দু’জন করে, স্ত্রীরোগ, আ্যনাসথেসিয়লজি, ও শিশুরোগ বিভাগে এক জন করে ভর্তি হয়েছেন। হাসপাতালের সুপার নিখিলচন্দ্র দাস বলেন, “আমরা প্রথম বছরে ১০ জন ছাত্রছাত্রী ভর্তি করার পরিকল্পনা করেছিলাম। কিন্তু সাত জনের বেশি পাওয়া যায়নি।’’ তিনি জানান, হাসপাতালের প্রবীণ ও অভিজ্ঞ চিকিৎসকেরা পড়ানোর দায়িত্ব নিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি বলেন, “একটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে হাসপাতালে সিটি স্ক্যান ও ডায়ালেসিস ইউনিট বানানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। ট্রমা সেন্টার তৈরির কাজও দ্রুততার সঙ্গেই চলছে।
ডিএনবি-র পাঠ্যক্রমের পড়াশোনা চালু হওয়ায় খুশি এলাকার চিকিৎসক মহল। তবে একই সঙ্গে হাসপাতালের পরিকাঠামোর উন্নতির দাবিও করেছেন তাঁরা।
আইএমএ-র জেলা সহ সভাপতি সৈকত বসু বলেন, “আসানসোল জেলা হাসপাতালে ডিএনবি স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে আসানসোলের গুরুত্ব এ বার আরও বেড়ে গেল।’’ জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক ললিত রায় বলেন, “এই পাঠ্যক্রম চালু রাখতে হলে হাসপাতালের পরিকাঠামোর আরও উন্নতি করতে হবে। এতে সাধারণ রোগীরাই উপকৃত হবেন।’’ স্থানীয় চিকিৎসক অরুনাভ সেনগুপ্তর আশা, ডিএনবি-র পাঠক্রম চালু হওয়ায় পর হাসপাতালে গবেষণার সুযোগ তৈরি হবে। তবে সব থেকে আগে প্রয়োজন পরিকাঠামোর উন্নতি। পরিকাঠামোর সমস্যার কথা স্বীকার করে নিখিলচন্দ্রবাবু বলেন, “পড়ুয়ারা থাকা, খাওয়া-সহ বেশ কিছু পরিকাঠামোগত উন্নতির দাবি তুলেছেন। দাবিগুলি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।”