এ যেন খানিকটা ‘ছিল রুমাল, হয়ে গেল বেড়াল’-এর মতো ঘটনা। তাতেই অবশ্য শেষ নয়। হিসাব-নিকাশ শেষে যখন হাতে শুধুমাত্র পেনসিল রইল, তখন আবার বেড়াল উবে গিয়ে রুমাল ফেরত এল।
দিল্লির হরিশ চহ্বাণের জীবন নিয়ে অনেকটা এমনই পরিহাস চলল সপ্তাহখানেক ধরে। তিন হাসপাতালের ছিনিমিনিতে প্রাণটাই চলে গেল বছর আটত্রিশের যুবকের।
রোগীর হয়েছিল ডেঙ্গি। কিন্তু, কোথাও সেই রোগের চিকিৎসা হল না। বরং দক্ষিণ দিল্লির দেওলি গ্রামের হরিশ চহ্বাণের যকৃতে সংক্রমণ ঘটেছে বলে চিকিৎসা চালাল হাসপাতাল। মৃত্যুর ঠিক আগে হাসপাতাল জানাল, হরিশের ডেঙ্গিই হয়েছিল। কিন্তু, মৃত্যুর পর পরিবারের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হল যকৃতের চিকিৎসা বাবদ সাড়ে তিন লক্ষ টাকার বিল। মৃতের পরিবারের এই ভয়ঙ্কর অভিযোগে ফের চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজধানীতে।
মৃতের ভাই মুকেশ জানাচ্ছেন, গত ১১ সেপ্টেম্বর জ্বর আসে হরিশের। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে ভর্তি করা হয় এক বেসরকারি হাসপাতালে। মুকেশের অভিযোগ, ওই হাসপাতাল ডেঙ্গির চিকিৎসা করেনি। অন্য কোনও অসুস্থতা রয়েছে বলে ধরে নিয়ে তাকে ইনজেকশন দেওয়া হয়। পর দিন সকালে হরিশের অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরিজনেরা ওই হাসপাতাল থেকে হরিশকে নিয়ে যান সফদরজঙ্গ হাসপাতালে। সেখানেও নাকি ডেঙ্গির ঠিকঠাক চিকিৎসা হচ্ছিল না। সরকারি হাসপাতাল ছেড়ে অবশেষে একটি বেসরকারি হাসপাতালে হরিশকে নিয়ে যায় তাঁর পরিবার। অভিযোগ, সেই হাসপাতাল প্রথমে জানায় হরিশের যকৃতে সংক্রমণ হয়েছে। সেই অনুযায়ী চিকিৎসা শুরু হয়। তার পর ১৭ সেপ্টেম্বর হরিশের পরিজনদের জানানো হয়, হরিশের ডেঙ্গিই হয়েছে। এর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মৃত্যু হয় হরিশের।
মৃতের পরিবারের অভিযোগ, ডেঙ্গি ধরতে না পেরে ভুল চিকিৎসা করা সত্ত্বেও বিন্দুমাত্র অনুশোচনা ছিল না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। বরং যকৃতের চিকিৎসার জন্য সাড়ে তিন লক্ষ টাকা চাওয়া হয়েছে। এই খবর প্রকাশ হতেই ফের বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে দিল্লির স্বাস্থ্য পরিকাঠামো। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন সফদরজঙ্গ হাসপাতাল এবং ওই বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।