বিশেষজ্ঞরা। —নিজস্ব চিত্র।
শিলিগুড়ি শহরতো বটেই, লাগোয়া বাগডোগরা, মাটিগাড়ার মতো বিভিন্ন এলাকাতেও ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন অনেকেই। বুধবার ওই সমস্ত এলাকা ঘুরে মশা, মশার লার্ভার নমুনা সংগ্রহ করলেন কলকাতা থেকে আসা পতঙ্গবিদরা। তারা অবশ্য মাটিগাড়া, বাগডোগরা এলাকায় ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা স্পষ্ট করে কিছু জানাননি। স্বাস্থ্য দফতরের কয়েকজন আধিকারিক জানান, ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে মাটিগাড়া,বাগডোগরা এলাকায় অনেকে অসুস্থ রয়েছেন। সে কারণেই পতঙ্গবিদদের এলাকায় পাঠিয়ে মশার প্রকৃতি, গতিবিধি সম্পর্কে তথ্য এবং তা নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে চাইছে দফতর। গত বছরও ডেঙ্গি হানা দিয়েছিল মাটিগাড়ায়। এ বছরের মাঝামাঝি এনসেফ্যালাইটিসেরও সংক্রমণ ঘটেছিল। তাই এই এলাকাগুলিতে মশা নিয়ন্ত্রণের কাজে ওই সমস্ত এলাকায় জোর দেওয়া জরুরি বলেই জেলা স্বাস্থ্য দফতর মনে করছে।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “বিশেষজ্ঞরা ঘুরে দেখছেন। স্বাস্থ্য দফতরও সাধ্যমত রোগ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। এটা এক দিনের দুই দিনের ব্যাপার নয়। ধারাবাহিক ভাবে রোগ নিয়ন্ত্রণের কাজ করতে হবে।”
এ দিন শিলিগুড়ির ১২ নম্বর ওয়ার্ড, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের জ্যোতিনগর এলাকা ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের গঙ্গানগর, গোয়ালাপট্টি এলাকাগুলিতে ঘুরে মশা ধরেন পতঙ্গবিদরা। এনসেফ্যালাইটিস এবং ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে গঙ্গানগরের বাসিন্দা সঞ্জয় খাতি নামে যে কিশোর সম্প্রতি মারা গিয়েছে তাঁর বাড়ি এবং লাগোয়া এলাকা থেকে মশা ধরেন তাঁরা। খালাপড়ার ডেঙ্গি আক্রান্ত পরিবার পবন অগ্রবালের বাড়ি লাগোয়া এলাকায় গিয়েও মশা ধরেন এবং বিভিন্ন জায়গায় জমে থাকা জল থেকে লার্ভা সংগ্রহ করেন। তবে ৭ নম্বর ওয়ার্ডে ঘোষপাড়ার যে বধূ অনিমা শেঠ ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে সম্প্রতি মারা গিয়েছেন তাঁদের বাড়ি বা এলাকায় যায়নি দলটি। দু’জন মহিলা পতঙ্গবিদ এবং এক জন টেকনিশিয়ানের এই দলটি জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে এ দিন জ্যোতিনগরে যান। এলাকার সাফাই পরিষেবা নিয়ে ক্ষোভ জানান বাসিন্দারা। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রেই খবর, ওই এলাকায় অনেকেই জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। এ দিন বিজেপি’র একটি প্রতিনিধি দল গঙ্গানগরের প্রয়াত সঞ্জয়ের বাড়িতে যান। সাফাই পরিষেবার বেহাল দশা তাঁদের দেখান সঞ্জয়ের বাবা মোহনবাবু। এলাকার অনেক বাড়িতে জ্বরে আক্রান্ত রোগী রয়েছেন। তাঁদের সঙ্গেও কথা বলেন বিজেপি’র জেলা সভাপতি রথীন্দ্র বসু এবং অন্যান্য প্রতিনিধিরা। পরে তারা ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মৃত অনিমা দেবীর বাড়িতে যান।