দিল্লি ও কলকাতার পরে এ বার জলপাইগুড়ি। পুজোর মুখে গত আটচল্লিশ ঘণ্টায় ডেঙ্গি উপসর্গ নিয়ে তিনজনকে শহরের দুটি নার্সিং হোমে ভর্তি করানো হয়েছে। প্রত্যেকেরই বয়স ষোল থেকে আঠারো বছরের মধ্যে। প্রত্যেকেই শহরের বাসিন্দা। তাঁদের রক্ত নমুনার প্রাথমিক পরীক্ষায় ডেঙ্গি জীবাণু পাওয়া গেলেও আরও নিশ্চিত হতে মেকএলাইজা পরীক্ষার জন্য জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে মঙ্গলবার ফের তাদের রক্ত নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে রোগীদের বাড়ির এলাকায় কেউ জ্বরে আক্রান্ত কি না, জানতে খোঁজ শুরু হয়েছে।
নার্সিংহোমের চিকিৎসক সুমন্ত্র মুখোপাধ্যায় বলেন, “ডেঙ্গি আক্রান্ত তিনজনের চিকিৎসা চলছে। রোগীদের পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে।’’ জেলা মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ মৃধা বলেন, “এনএস-১ পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ ডেঙ্গি সংক্রমণের কথা বলেছেন। আমরা আরও নিশ্চিত হতে মেকএলাইজা পরীক্ষার জন্য রক্তের নমুনা সংগ্রহ করেছি। তবে প্রতি মুহূর্তে নার্সিং হোমের সঙ্গে যোগাযোগ করে রোগীদের পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ রাখা হচ্ছে।” জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার দুই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে ডেকে জ্বর নিয়ে কোনও রোগী ভর্তি হওয়া মাত্র খবর দিতে বলা হয়। পাশাপাশি পুরসভাকেও সতর্ক করা হয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, রোগীরা জলপাইগুড়ি শহরের বাসিন্দা। জেলার কোনও ব্লকে ওই রোগের উপসর্গ নিয়ে কোন রোগী হাসপাতাল অথবা নার্সিংহোমে ভর্তি হয়নি। ওই কারণে পুরসভা কর্তাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে।
জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু বলেন, “জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে খবর পাওয়া মাত্র পুরসভা এলাকায় স্প্রে করা এবং মশা মারার তেল ছড়ানোর কাজ শুরু হয়েছে। এ ছাড়াও পুরকর্মীরা স্বাস্থ্য কর্মীদের সঙ্গে বাড়িতে ঘুরে কেউ জ্বরে আক্রান্ত আছে কিনা খোঁজ নিতে শুরু করেছে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে জেলা স্বাস্থ্য দফতর এবং নার্সিংহোম থেকে ডেঙ্গি উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন তিন রোগীর নাম এমনকি বাড়ির ঠিকানা গোপন রাখা হয়েছে।’’ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, পৃথক পরিবারের ওই তিন রোগী সম্প্রতি কলকাতা থেকে ফিরেছে। তাঁরা সেখান থেকে ডেঙ্গি বহন করে আনতে পারেন। যদিও বিষয়টিকে হাল্কা করে না দেখে ডেঙ্গি কি, কেমন করে ওই রোগ থেকে নিজেকে রক্ষা করা সম্ভব সেই বিষয়ে ফের প্রচারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।