নারায়ণগড়ে ম্যালেরিয়া, এলাকায় স্বাস্থ্য কর্তারা

ওড়িশা থেকে ফেরা পাঁচ শ্রমিক ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হওয়ায় এলাকায় সতর্কতা জারি করল স্বাস্থ্য দফতর। মঙ্গলবার পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড় গ্রাম পঞ্চায়েতের কিছু এলাকা ঘুরে দেখেন দফতরের প্রতিনিধিরা। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, এলাকার বাঁধগড়া, দাঁড়িমারা, ধানগেড়ি, পালাগেড়িয়া গ্রামে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৪ ০২:২৯
Share:

ওড়িশা থেকে ফেরা পাঁচ শ্রমিক ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হওয়ায় এলাকায় সতর্কতা জারি করল স্বাস্থ্য দফতর। মঙ্গলবার পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড় গ্রাম পঞ্চায়েতের কিছু এলাকা ঘুরে দেখেন দফতরের প্রতিনিধিরা। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, এলাকার বাঁধগড়া, দাঁড়িমারা, ধানগেড়ি, পালাগেড়িয়া গ্রামে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। ওড়িশা থেকে ফেরা ১৮ জনের মধ্যে এখনও পর্যন্ত পাঁচ জনের রক্তে ফ্যালসিপেরাম ম্যালেরিয়ার জীবাণু মিলেছে। আক্রান্তদের মধ্যে দু’জনকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল ও দু’জন বেলদা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “স্বাস্থ্য দফতর সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ করেছে। আতঙ্কের কারণ নেই।”

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস খানেক আগে ওই এলাকা থেকে ১৮ জন শ্রমিক এক ঠিকাদার সংস্থার হয়ে ওড়িশার কেওনঝড়ে রেললাইন সম্প্রসারণের কাজে যান। একত্রিশ দিন সেখানে কাটিয়ে গত ২৪ সেপ্টেম্বর তাঁরা ফেরেন। চলতি মাসের গোড়া থেকে সাত জনের মাথাব্যাথা ও জ্বরের উপসর্গ দেখা দেয়। রবিবার তাঁদের মধ্যে সাহেব হাঁসদার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়। এরই মধ্যে বাড়িতেই চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া বটু মুর্মু সংজ্ঞা হারানোয় তাঁকেও বেলদা গ্রামীণ হাসপাতাল পরে মেদিনীপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। সোমবার অসুস্থতা বাড়তে থাকায় খোকন মুর্মু, শুকলাল হাঁসদা ও করম সিংহকে বেলদা গ্রামীণে ভর্তি করানো হয়। এঁদের প্রত্যেকের শরীরেই ম্যালেরিয়ার জীবাণু মিলেছে। যদিও শুকলালের পরিবার তাঁকে কটকে নিয়ে গিয়েছে। বেলদা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খোকন মুর্মু বলেন, “আমরা কাজ সেরে ফেরার পর থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। প্রথমে ভেবেছিলাম জ্বর হয়েছে। বাড়িতেই চিকিৎসা করছিলাম। কিন্তু আরও অসুস্থ হয়ে পড়ায় সোমবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি।”

এ দিকে, একই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় একের পর এক ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হওয়ায় গ্রামবাসীরা সতর্ক রয়েছেন। ঘটনার কথা জানাজানি হতেই স্বাস্থ্য দফতর নড়েচড়ে বসে। মঙ্গলবার দুপুরে জেলা উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান ও নারায়ণগড় ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক আশিস মণ্ডলের নেতৃত্বে চিকিৎসক দল এলাকায় পৌঁছয়। শ্রমিকদের ও তাঁদের পরিবারের লোকেদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। জেলা উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তথা সংক্রমিত রোগের নোডাল অফিসার রবীন্দ্রনাথ প্রধান বলেন, “শরীরে জীবাণু থাকলে এই রোগ বেশ কয়েক দিন পরেও ধরা দিতে পারে। তাই আমরা একমাস ধরে প্রতি সপ্তাহে এলাকায় রক্ত পরীক্ষা চালাব।” স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, এলাকার মানুষকে প্রতিষেধক দেওয়া হচ্ছে। জোর দেওয়া হয়েছে সচেতনাতাতেও।

Advertisement

স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা এ দিন এলাকায় পৌঁছে বাড়ির আশেপাশে জমা জল না রাখা, মশারি ব্যবহার, অসুস্থতার কোনও লক্ষণ দেখা দিলেই হাসপাতালে যাওয়ার মতো বেশ কিছু পরামর্শ দেন। দাঁড়িমারা এলাকার বাসিন্দা বলাই সিংহ বলেন, “গ্রামের অনেকে আক্রান্ত হওয়ায় মনে একটা ভয় কাজ করছিল। কিন্তু স্বাস্থ্য দফতরের লোকেরা আসায় সেই ভয় কিছুটা কেটেছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন