নায়কের দেশে ১২ জুলাই ফিরিয়ে আনতে চান বেঞ্জিমা

রিয়াল মাদ্রিদের ভয়ঙ্কর ত্রিফলা। পুরো বিশ্ব তাঁদেরকে চেনে বিবিসি নামে। যাঁদের এক জন বিশ্বকাপে আসতে পারেননি। আর অন্য জন বিশ্বকাপ থেকে বিদায়ের মুখে। গ্যারেথ বেল এবং ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর অভাব যেন ঢেকে দিতে বদ্ধপরিকর ত্রিফলার তৃতীয় শক্তিকরিম বেঞ্জিমা। ২০১০ বিশ্বকাপে সুযোগ পাননি দলে। অনেক তাবড় তাবড় ফুটবল বিশেষজ্ঞ তাঁকে ‘ম্লান হয়ে যাওয়া তারা’র আখ্যা দিয়েছিলেন। কিন্তু সমালোচকদের মুখ বন্ধ করে ব্রাজিল বিশ্বকাপে বেঞ্জিমা প্রমাণ করেছেন, ওস্তাদের মার শেষ রাত্রে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৪ ০৫:৩২
Share:

রিয়াল মাদ্রিদের ভয়ঙ্কর ত্রিফলা। পুরো বিশ্ব তাঁদেরকে চেনে বিবিসি নামে। যাঁদের এক জন বিশ্বকাপে আসতে পারেননি। আর অন্য জন বিশ্বকাপ থেকে বিদায়ের মুখে।

Advertisement

গ্যারেথ বেল এবং ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর অভাব যেন ঢেকে দিতে বদ্ধপরিকর ত্রিফলার তৃতীয় শক্তিকরিম বেঞ্জিমা।

২০১০ বিশ্বকাপে সুযোগ পাননি দলে। অনেক তাবড় তাবড় ফুটবল বিশেষজ্ঞ তাঁকে ‘ম্লান হয়ে যাওয়া তারা’র আখ্যা দিয়েছিলেন। কিন্তু সমালোচকদের মুখ বন্ধ করে ব্রাজিল বিশ্বকাপে বেঞ্জিমা প্রমাণ করেছেন, ওস্তাদের মার শেষ রাত্রে। ফ্রান্সকে দুটো ম্যাচে আট গোল করতে সাহায্য করেছেন। নিজে তিনটে গোল করেছেন ও দুটো গোলমুখী পাস বাড়িয়ে সোনার বুট জয়ের লড়াইয়ে রয়েছেন তিনি।

Advertisement

তবে ফর্মে থাকলেও এখনও পা মাটিতেই রিয়াল মাদ্রিদের সেন্টার ফরোর্য়াডের। বলেন, “আমার খুব ভাল লাগছে দেশের জার্সিতে ভাল পারফরম্যান্স করতে পেরে। দক্ষিণ আফ্রিকায় বিশ্বকাপ দলে সুযোগ না পাওয়াটা খুব খারাপ সময় ছিল। এ বার সেই যন্ত্রণাটা ভুলতে চাই।” আগের বারের থেকে এ মরসুমে ফর্মে। রিয়ালকে লা ডেসিমা জিততেও সাহায্য করেছেন।

বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পেয়ে পরিশ্রম বাড়িয়ে দিয়েছেন বহুগুণ। অনুশীলনে তো সবার আগে আসতেনই। সবার প্র্যাকটিস হয়ে গেলেও অন্যদের থেকে অতিরিক্ত দু’তিন ঘণ্টা বেশি সময় দিতেন। বলছিলেন, “ভাল ফর্ম আমার অনেক সাধনার ফল। ২০১০-এর সময় দেখেছিলাম দলে আরও সেন্টার ফরোয়ার্ড আছে যারা আমার থেকে ভাল। আমার লক্ষ্য ছিল তাদেরকে টপকে দলে ঢোকা। দেশঁকে গিয়ে আমিই প্রথম বলেছিলাম অনেক উন্নতি করতে হবে বিশ্বকাপ দলে থাকতে হলে।” ফরাসি এই ফরোয়ার্ড আবার জিদানের নয়, রিয়াল ও ব্রাজিলের প্রাক্তন ফুটবলার রোনাল্ডোর ভক্ত। ছোটবেলায় ‘ও ফেনোমেনো’-কে দেখেই স্ট্রাইকার হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। বড় রোনাল্ডোর ঘরের মাঠে খেলতে আসাই কি উদ্বুদ্ধ করছে তাঁকে সেরাটা দিতে? বেঞ্জিমা বলেন, “কোনও দিনও গোপন রাখিনি আমি কার ভক্ত। সব সময় বলে এসেছি আমি বড় রোনাল্ডোর ভক্ত। ওর খেলার ভিডিও দেখেই সব কিছু শিখেছি। জিদানের খেলাও দেখেছি। কিন্তু রোনাল্ডোই আমায় স্বপ্ন দেখিয়েছিল স্ট্রাইকার হতে।”

বিশ্বকাপ শুরুর আগেই ফ্রান্স ধাক্কা খেয়েছিল। চোটের জন্য ফ্র্যাঙ্ক রিবেরি দলের থেকে নাম তুলে নিতে বাধ্য হন। যে কারণে আরও দায়িত্ব নিতে হয় বেঞ্জিমাকে। কিন্তু ১৯৯৮ বিশ্বকাপ ফাইনালে ফরাসি সমর্থকদের চিৎকার আজও ভেসে ওঠে তাঁর চোখের সামনে। যে কারণে ব্রাজিল থেকে কাপ নিয়ে যাওয়ার জেদটা তার মধ্যে দিনের পর দিন আরও বেড়ে চলেছে। “জুলাই ১২, ১৯৯৮। ফাইনালের সেই দিনটা আজও মনে আছে। আমি বোনের সঙ্গে ক্যাম্পে ছিলাম সে দিন। সন্ধেতে আবার ফ্রান্স জার্সি পরে ছোটখাটো একটা ম্যাচে খেলি। প্রথমে রোনাল্ডোকে সমর্থন করছিলাম ঠিকই কিন্তু ফরাসি হওয়ায় জিদানের গোলে আমিই সবথেকে বেশি চিৎকার করি।” সোমবার আবার ফ্রান্সের সেই ১৯৯৮ সালের নায়ক জিদানের ৪২তম জন্মদিন। টুইটারে তাঁকে শুভেচ্ছাও জানিয়ে দিলেন বেঞ্জিমা। টুইট করেন, “জন্মদিনের শুভেচ্ছা আমার দাদা জিদানকে।”

দলের অধিনায়ক হুগো লোরিস বলেন, “করিম এমন একজন ফুটবলার যে দায়িত্ব নিতে ভালবাসে। এ বার রিবেরি না থাকায় ওকে আরও চাপ নিতে হবে। কিন্তু প্রথম ম্যাচ থেকেই ও ভাল ছন্দে আছে। বিশ্বকাপ ভাল ভাবে শুরু করার জন্য হন্ডুরাস ওর পক্ষে উপযুক্ত ম্যাচ ছিল” রিয়াল তারকার অনেক চড়াই উতরাই দেখেছেন দলের কোচ দেশ।ঁ জানেন, এই সেন্টার ফরোয়ার্ডের মধ্যে লুকিয়ে আছে এমন একজন ফুটবলার যে নিজেকে প্রমাণ করতে মরিয়া। “গত দুই বছরে ভাল আর খারাপ সময়ে ওর সঙ্গে থেকেছি। আমি চাই ওর বিশ্বকাপ খুব ভাল কাটুক।”

পাশাপাশি দু’ম্যাচে আট গোল করে এখন দেশঁর দলই অন্যতম ‘ইউএসপি’ হয়ে উঠেছে এই টুর্নামেন্টের। ফরাসি কোচ বলেন, “১৯৯৮তে এই জেদটা দেখেছিলাম দলের মধ্যে। তখনকার সঙ্গে কোনও তুলনা হয় না আমার এই দলের। কিন্তু এটা বলাই যায় বর্তমান দল লক্ষ্যে স্থির আছে। যারা বেশি খেলতে পারছে না তারাও নেপথ্যে থেকে সাহায্য করার চেষ্টা করছে দলকে। যার ফলে আমাদের আত্মবিশ্বাস আরও বেড়ে যাচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন