পরিষেবা নেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে, নালিশ মন্ত্রীকে

রোগী আছে, ওষুধ নেই। সাফাইকর্মী আছে মাত্র একজন। কিন্তু তাতে নিয়মিত হাসপাতাল পরিস্কার করা সম্ভব হয় না। তার উপরে তিনি ছুটি নিলে হাসপাতালের সাফাই বিশ বাঁও জলে চলে যায়। তখন কর্তব্যরত চিকিত্‌সক ও নার্সরা মিলে এদিক ওদিক থেকে লোক ধরে এনে কয়েকদিন চালান। এ ভাবে চালানো হলেও স্থায়ী কর্মী না হওয়ায় তাঁরা মনোযোগ দিয়ে কাজ করেন না।

Advertisement

সংগ্রাম সিংহ রায়

বিধাননগর (ফাঁসিদেওয়া) শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:৫১
Share:

বিধাননগর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মন্ত্রী। বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি।

রোগী আছে, ওষুধ নেই। সাফাইকর্মী আছে মাত্র একজন। কিন্তু তাতে নিয়মিত হাসপাতাল পরিস্কার করা সম্ভব হয় না। তার উপরে তিনি ছুটি নিলে হাসপাতালের সাফাই বিশ বাঁও জলে চলে যায়। তখন কর্তব্যরত চিকিত্‌সক ও নার্সরা মিলে এদিক ওদিক থেকে লোক ধরে এনে কয়েকদিন চালান। এ ভাবে চালানো হলেও স্থায়ী কর্মী না হওয়ায় তাঁরা মনোযোগ দিয়ে কাজ করেন না।

Advertisement

ফলে হাসপাতালের পরিবেশ বজায় রেখে কাজ করা মুশকিল হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রেরই চিকিত্‌সক থেকে অন্যরা। এ ভাবেই ধঁুকে ধঁুকে চলছে বিধাননগর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র। অথচ রেকর্ড সংখ্যাক প্রসব করিয়ে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রই রাজ্যের মধ্যে সেরা হয় দু’বছর আগে। এতদিন অভিযোগের পাহাড় জমলেও তা শোনার কেউ ছিল না। সোমবার উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবকে সামনে দেখে অভিযোগ জানান বাসিন্দারা।

ঘটনাচক্রে এদিন ফাঁসিদেওয়ায় তিনটি নতুন উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র উদ্বোধন করেন তিনি। গৌতমবাবু বলেন, “আমি দ্রুত স্বাস্থ্য বিভাগকে জানাব। সেখান থেকে সরবরাহ নিয়মিতকরণ করার ব্যবস্থা করা হবে।”

Advertisement

তবে দার্জিলিং জেলা উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তুলসি প্রামাণিক ওষুধ নেই বলে স্বীকার করেননি। তিনি মন্ত্রীকে জানান সমস্ত ওষুধ রয়েছে। তিনি বলেন, “কোনও রকম সমস্যা নেই। ওষুধ নিয়ে কোনও অভিযোগও নেই।’’ এর পরেই মন্ত্রী ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিত্‌সককে ডেকে এ ব্যপারে জানতে চান। তখনই মন্ত্রী জানতে পারেন, ওষুধ সরবরাহ নিয়মিত হচ্ছে না। ফলে কয়েকদিন পর পর ওষুধ শেষ হয়ে যাচ্ছে। ফলে, মাঝে মধ্যেই রোগীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন বলে পরিষেবা দিতে সমস্যা হচ্ছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। এক স্থানীয় বাসিন্দা বিনয় সরকার অভিযোগ করেন, “বেশির ভাগ সময়ই চিকিত্‌সকরা আন্তরিকভাবে পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু ওষুধ চাইতে গেলে খালি হাতে ফিরতে হয়। বেশি দাম দিয়ে বাইরে থেকে কিনতে হয়।”

সাফাইয়ের অবস্থাও খুব খারাপ বলে অভিযোগ। বর্তমানে ১ জন সাফাইকর্মী রয়েছেন। তিনি কোনও কারণে না আসলে বাইরে থেকে সাফাইকর্মী নিয়ে আসা হয়। সেও শৌচাগার সাফাই করেই চলে যায়। বাকি এলাকা ঠিকমত পরিস্কার করা হয় না বেল জানা গিয়েছে। এক বাসিন্দা গণেশ অধিকারীর অভিযোগ, এদিন মন্ত্রী যাতে দুরবস্থার চিত্রটা বুঝতে না পারেন, সে কারণে লোক দিয়ে বিশেষভাবে পরিস্কার করানো হয়েছে।” যদিও সে কথা মানতে চাননি উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। তবে চিকিত্‌সক কল্যাণবাবু জানান, অন্তত আরও ২ জন সাফাইকর্মী দরকার। এ ছাড়া একজন চিকিত্‌সক হলে ভাল হয়। বর্তমানে জন চিকিত্‌সক, একজন সহকারী চিকিত্‌সক, ৫ জন নার্স, ৫ জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী রয়েছে। জানা গিয়েছে এটি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র হলেও গড়ে রোজ ৩০০ রোগী বহির্বিভাগে চিকিত্‌সার জন্য আসেন। লাগোয়া উত্তর দিনাজপুর ও বিহারের কিছু এলাকার লোকজনও চিকিত্‌সার জন্য আসেন। মন্ত্রী সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।

এদিন ফাঁসিদেওয়া ব্লকের তিনটি উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উদ্বোধন করেন মন্ত্রী। হেঁটমুড়ি-সিঙ্গিঝোরা গ্রাম পঞ্চায়েতের রায়জিজোত, ঘোষপুকুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ভালোমানষি এবং বিধাননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিধাননগরে এগুলি চালু হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন