পায়ে বেঁধা কাঁটা নিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়েও চিকিৎসা পেল না বছর দশেকের এক বালক। চিকিৎসক না থাকায় ওই বালকের কাঁটা তুলবে কে, তা নিয়ে ঘণ্টাখানেক ধরে দুশ্চিন্তায় কাটালেন তার পরিবার। মঙ্গলবার ঝালদা ১ ব্লকের মাহাতোমারা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ঘটনা। শেষে বিধায়কের পাঠানো অ্যাম্বুল্যান্সে সেই বালককে ঝালদা শহরে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানো হয়।
এ দিন সকালে কলমা গ্রামের বছর দশেকের বালক মন্টু মাঝি বাড়ির লোকজনের সঙ্গে জঙ্গলে জ্বালানি সংগ্রহে গিয়েছিল। সেই সময় তার ডান পায়ের একটি আঙুলে বড় কাঁটা ফুটে যায়। কাঁটা বিঁধে এফোঁড় ওফোঁড় হয়ে গলগল করে রক্ত ঝরতে থাকায় বাড়ির লোকজন সাইকেলে চাপিয়ে তাকে চার কিলোমিটার দূরের মাহাতোমারা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায়। তার মামা ভুবনেশ্বর মাঝি ও পড়শি লক্ষ্মণ মাঝির কথায়, “ছেলেটা যন্ত্রণায় কাঁদছিল। কিন্তু ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে দেখি সেখানে কোনও চিকিৎসক নেই। শুধু কয়েকজন জিডিএ কর্মী রয়েছে। তাঁরা কাঁটা বের করতে পারবে না বলে জানায়। উল্টে ৮-১০ কিলোমিটার দূরে ঝালদা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে বললেন। ওই অবস্থায় ছেলেটাকে কী ভাবে সেখানে নিয়ে যাব ভেবে পাচ্ছিলাম না।”
তাঁরা মোবাইলে বিধায়ক নেপাল মাহাতোর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। লক্ষ্মণবাবু বলেন, “নেপালবাবুই আমাদের জন্য একটি অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করে দেন। তাতেই ঝালদা নিয়ে যাই। কিন্তু এ ভাবে আমরা জঙ্গল ঘেরা এলাকার মানুষজন স্বাস্থ্যকেন্দ্র থাকা স্বত্ত্বেও কেন চিকিৎসক পাব না?” মাহাতোমারা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মী রাজেন কর্মকার বলেন, “আজ চিকিৎসক নেই। কিন্তু আমাদের পক্ষে ওই কাঁটা বের করা সম্ভব ছিল না।” বিধায়ক বলেন, “চিকিৎসা ক্ষেত্রে এখনও জঙ্গলমহলের মানুষ যে কত অসহায়, তা ওই ঘটনাই প্রমাণ।” ঝালদার বিএমওএইচ দেবাশিস মণ্ডল বলেন, “ওই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক নিজেই এ দিন একটা সমস্যায় পড়ে আশতে পারেননি। আমি ওই বালকের পায়ে অস্ত্রোপচার করে কাঁটা বের করে দিয়েছি।” জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মানবেন্দ্র ঘোষ বলেন, “আমি ঘটনাটি শুনেছি। ওই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসককে সতর্ক করা হয়েছে।”