চিকিৎসককে কলকাতায় বদলি করে দেওয়া হয়েছে। অথচ তাঁর জায়গায় অন্য চিকিৎসক না নেওয়ায় অনিদির্ষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে আলট্রাসোনোগ্রাফি বিভাগ। এমনই ঘটেছে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে। না জানা থাকায় দূরদুরান্ত থেকে আসা রোগীরা হাসপাতালে এসে আলট্রাসোনোগ্রাফি বিভাগ বন্ধের নোটিস দেখে হয়রান হচ্ছেন। পরিবর্ত চিকিৎসকের ব্যবস্থা না করে সংশ্লিষ্ট বিভাগের চিকিৎসককে বদলি করে দেওয়া নিয়ে ক্ষুব্ধ রোগ থেকে এলাকার মানুষ।
এর আগে যন্ত্র বিকল হয়ে যাওয়ার জন্য টানা দেড় বছর হাসপাতালের আলট্রাসোনোগ্রাফি বিভাগ বন্ধ ছিল। ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে নতুন যন্ত্র পাওয়া যায়। হাসপাতালের সুপার নির্মাল্য রায়ের অভিযোগ, “মহকুমা হাসপাতালের মতো গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতালে আলট্রাসোনোগ্রাফি পরিষেবা যাতে বন্ধ না থাকে সে জন্য পরিবর্ত চিকিৎসকের ব্যবস্থা না করে যাতে বিভাগীয় চিকিৎসককে না সরানো হয় সে বিষয়ে জেলা এবং রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু তাতে কোনও ফল হয়নি।”
চিকিৎসক না থাকার জন্য আরামবাগ হাসপাতালে আলট্রাসোনোগ্রাফি বিভাগ বন্ধে যে সমস্যা দেখা দিয়েছে সে ব্যাপারে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তনিমা মন্ডল বলেন, “স্বাস্থ্য দফতর গুরুত্ব সহকারে বিষয়টি দেখছে। খুব শীঘ্রই ওই বিভাগে চিকিৎসক দেওয়া হবে।”
আরামবাগ মহকুমা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসপাতালের পুরনো আলট্রাসোনোগ্রাফি যন্ত্রটি ২০১২ সালের মে মাসে খারাপ হয়ে যায়। সে সময় রোগীদের অনেক বেশি টাকা খরচ করে বাইরে থেকে আলট্রাসোনোগ্রাফি করাতে হচ্ছিল। ওই পরিষেবা না পাওয়াকে কেন্দ্র করে হাসপাতালে রোগীদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ লেগেই ছিল। কয়েকবার যন্ত্রটি সারানোর চেষ্টা করা হলেও লাভ হয়নি। শেষ পর্যন্ত গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে হাসপাতলে অত্যাধুনিক আলট্রাসোনোগ্রাফি যন্ত্র বসানো হয়। বিপিএল তালিকাভুক্তদের বিনা পয়সায় এই পরিষেবা দেওয়া হচ্ছিল। এমনকী প্রসূতি ও এক বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদেরও বিনামূল্যে এই পরিষেবা দেওয়া হচ্ছিল। বাইরের থেকে অনেক কম খরচে মাত্র ১২০ টাকায় সাধারণ রোগীরা আলট্রাসোনোগ্রাফি করাতে পারছিলেন। কিন্তু হঠাৎই ওই বিভাগের চিকিৎসককে কলকাতায় বদলি করে দেওয়ার জন্য বৃহস্পতিবার থেকে হাসপাতালে এই পরিষেবা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত ও অন্য জেলা থেকে আসা রোগীদের ফিরে যেতে হচ্ছে। বাধ্য হয়ে অনেকে বাইরে অনেক বেশি টাকা খরচ করে আলট্রাসোনোগ্রাফি করাচ্ছেন।