মরসুমে ম্যালেরিয়ার প্রথম বলি মহানগরে

উত্তরবঙ্গ জুড়ে যখন এনসেফ্যালাইটিস-উপসর্গের দাপট, এমনকী দক্ষিণবঙ্গেও তার আঁচ টের পাওয়া যাচ্ছে, তখনই কলকাতায় নতুন বিপদ নিয়ে হাজির ম্যালেরিয়া। মঙ্গলবার রাতে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত এক ব্যক্তির রক্তে প্লাসমোডিয়াম ফ্যালসিপেরাম এবং ভাইভাক্স, দু’ধরনের ম্যালেরিয়ার জীবাণু ধরা পড়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৪ ০২:৪৮
Share:

উত্তরবঙ্গ জুড়ে যখন এনসেফ্যালাইটিস-উপসর্গের দাপট, এমনকী দক্ষিণবঙ্গেও তার আঁচ টের পাওয়া যাচ্ছে, তখনই কলকাতায় নতুন বিপদ নিয়ে হাজির ম্যালেরিয়া। মঙ্গলবার রাতে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত এক ব্যক্তির রক্তে প্লাসমোডিয়াম ফ্যালসিপেরাম এবং ভাইভাক্স, দু’ধরনের ম্যালেরিয়ার জীবাণু ধরা পড়েছে। স্বাস্থ্যভবন জানাচ্ছে, চলতি মরসুমে মহানগরে ম্যালেরিয়ায় এটাই প্রথম প্রাণহানি।

Advertisement

নিতাই বাগ (৬৫) নামে হাওড়ার ডোমজুড়ের বাসিন্দা ওই প্রৌঢ়কে মঙ্গলবারই সকালে প্রবল জ্বর আর কাঁপুনি নিয়ে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়েছিল। সে দিন রাতে তাঁর মৃত্যু ও রোগের কারণ জানার পরে স্বাস্থ্য দফতর যারপরনাই উদ্বিগ্ন।

উদ্বেগের কারণ, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালটি মহানগরীর যে এলাকায়, সেখানে ম্যালেরিয়াবাহী মশার অভাব নেই। কলেজ স্ট্রিট, কলুটোলা স্ট্রিট, আরপুলি লেন বা মির্জাপুর স্ট্রিট তো বলতে গেলে অ্যানোফিলিস স্টিফেনসাই মশার আঁতুড়ঘর! ফি বছর ওই তল্লাটে ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ ঘটে। এমনকী, মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি অন্য রোগীদেরও কেউ কেউ তাতে আক্রান্ত হন। উপরন্তু কলকাতা মেডিক্যালে এই মুহূর্তে আট জন ডেঙ্গি রোগী চিকিৎসাধীন। আর ডেঙ্গির ভাইরাসবাহী এডিস ইজিপ্টাই মশারও কমতি কিছু নেই কলকাতায়।

Advertisement

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ তপনকুমার লাহিড়ি জানান, ম্যালেরিয়া-ডেঙ্গির সংক্রমণ ঠেকাতে যথাসাধ্য চেষ্টা করা হচ্ছে। দেখা হচ্ছে, রোগীদের যাতে মশা না-কামড়ায়। তবে ঘটনা হল, বর্ষাকালে এত বড় হাসপাতালের সর্বত্র জমা জল সরানো সম্ভব নয়। তাই কর্তৃপক্ষের তরফে রোগীর বাড়ির লোকজনকে বলা হচ্ছে সঙ্গে মশারি নিয়ে আসতে।

তবে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্তাদের কাছে একটাই স্বস্তি জাপানি এনসেফ্যালাইটিস সংক্রমণের বাহক যে কিউলেক্স বিশনোই মশা, কলকাতার পরিবেশ তার বংশবিস্তারের পক্ষে অনুকূল নয়। বস্তুত কলকাতায় এ মরসুমে জাপানি এনসেফ্যালাইটিসের যে ক’জন রোগী মিলেছে, তাঁরা মোটামুটি সকলেই বাইরে থেকে রোগ নিয়ে এসেছেন। গত সপ্তাহে মেডিক্যাল কলেজে এক জনের মৃত্যু হয়েছে, তাঁর সংক্রমণ হয়েছিল অসমে থাকাকালীন। স্বাস্থ্য দফতরের খবর, গত রবিবার জাপানি এনসেফ্যালাইটিসে এক মহিলা মারা গিয়েছেন ন্যাশনাল মেডিক্যালে। হুস্না বেগম নামে ওই মহিলা ঈদ উপলক্ষে বিহার থেকে এসেছিলেন বেনিয়াপুকুরে। অন্য দিকে এসএসকেএমে জাপানি এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত এক কিশোরীর চিকিৎসা চলছে। ইয়াসমিন পরভিন নামে বারো বছরের মেয়েটির বাড়ি মালদহের চাঁচলে। তার অবস্থার উন্নতি হচ্ছে বলে হাসপাতালের দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন