রোগ বাগ মানেনি, অবশেষে প্রচারে পুরসভা

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৫ ০২:৫১
Share:

দেশ জুড়ে সোয়াইন ফ্লু-র দাপটের মধ্যে রাজ্যের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধিরা মঙ্গলবার ফিরে গিয়েছেন। কিন্তু রাজ্যে রোগ-পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার নামগন্ধ নেই। আশার কথা একটাই। এত দিন আমজনতাকে সতর্ক করার ব্যাপারে উদাসীন থাকার পরে সচেতনতার প্রচারে নামছে কলকাতা পুরসভা।

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী সোয়াইন ফ্লু রোধে পুরসভা এত দিন শুধু শুয়োর ধরার অভিযান চালাচ্ছিল। কিন্তু ফল হচ্ছে না দেখে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নির্দেশিকা মেনে এ বার শহর জুড়ে ব্যানার লাগিয়ে সচেতনতার প্রচারে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। মেয়র-পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ বলেন, “আমরা শহর জুড়ে ২০ হাজার ব্যানার লাগিয়ে সোয়াইন ফ্লু, জাপানি এনসেফ্যালাইটিস ও ডেঙ্গির ব্যাপারে সতর্ক করব। ওই সব রোগের স্বরূপ কী, কী ভাবে তাদের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়, কী কী সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া দরকার ব্যানারে সবই লেখা থাকবে।” পুরসভার সব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ওই তিনটি রোগের নির্দিষ্ট তথ্যও মিলবে বলে জানান অতীনবাবু।

প্রচারে নামতে এত দেরি কেন?

Advertisement

পুরকর্তারা এই বিষয়ে মুখ খুলতে না-চাইলেও রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের তরফে বলা হচ্ছিল, প্রচারে বিপরীত ফলের আশঙ্কা ছিল। তাতে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়তে পারত।

রোগটি যে-ভাবে ছড়াচ্ছে, তাতে অবশ্য আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার ব্যাপারটা আটকে নেই। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কলেরা অ্যান্ড এন্টেরিক ডিজিজেজ (নাইসেড)-এ আরও ১২ জনের থুতুর নমুনা পরীক্ষায় ওই রোগের ভাইরাস এইচ১এন১ ধরা পড়েছে। তাঁদের মধ্যে ন’জন কলকাতার বাসিন্দা। বাকি তিন জন উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং হাওড়ার। পশ্চিমবঙ্গে নতুন করে প্রাণহানির খবর না-মিললেও অন্যান্য রাজ্যে ওই রোগে আরও ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই নিয়ে সারা দেশে সোয়াইন ফ্লুয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১১৫৮।

স্বাস্থ্যসচিব মলয় দে জানান, রাজ্যে ১৪৬ আক্রান্তের মধ্যে ৮৩ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। ৫৫ জন আছেন হাসপাতালে। চিকিৎসকেরা জানান, কলকাতার মতো জনবহুল এলাকায় সোয়াইন ফ্লু-র তো রোগের জীবাণু দ্রুত ছড়ায়। বাতাস বা আক্রান্তের কফ-থুতুর সঙ্গে মিশে ওই রোগের ভাইরাস অন্যের শরীরে ঢোকে। হাঁচি, কাশি, জ্বর, গলা-ব্যথার উপসর্গ থাকলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে স্কুল, কলেজ, বাজারের মতো জনবহুল জায়গায় যেতে বারণ করছেন পরজীবী বিশেষজ্ঞেরা। এই মর্মে নির্দেশিকা জারি করেছে কেন্দ্র। এই অবস্থায় আড়মোড়া ভেঙে অবশেষে প্রচারে নামতে চলেছে পুরসভা।

স্বাস্থ্যকর্তারা জানান, মে মাসের মধ্যে রাজ্যে সোয়াইন ফ্লু নির্ণয়ের দ্বিতীয় কেন্দ্র কাজ শুরু করতে পারবে বলে তাঁরা আশা করছেন। স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনে তার পরিকাঠামোর কাজ শুরু হয়েছে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজেও রোগ নির্ণয় কেন্দ্র চালু করার কথা চলছে।

রোগ-পরিস্থিতি সব চেয়ে খারাপ গুজরাত ও রাজস্থানের। গুজরাতে মৃতের সংখ্যা ২৮৩ ছাড়িয়েছে। রাজস্থানে মৃত ২৭৭। রোগের থাবা এড়াতে চলতি সপ্তাহে কাজেই আসবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন আমদাবাদ জেলা ও দায়রা আদালতের প্রায় ১০ হাজার কৌঁসুলি। উত্তর ও মধ্য ভারতের বেশ কিছু জায়গায় অসময়ের বৃষ্টি এই সংক্রমণ বাড়াতে পারে বলে কেন্দ্রের আশঙ্কা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন