মালদহ মেডিক্যাল

রোগী-মৃত্যুতে ভাঙচুর হাসপাতালে

চিকিৎসকের গাফিলতিতে রোগী মৃত্যুর অভিযোগে দুজন নার্স ও এক কর্মীকে মারধর ও হাসপাতালের কেবিনে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছে মৃতের আত্মীয়দের বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদে প্রায় আট ঘণ্টা মৃতদেহ আটকে বিক্ষোভ দেখান হাসপাতালের নার্সরা। বুধবার গভীর রাতে এর জেরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ইংরেজবাজার থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:৫৪
Share:

চিকিৎসকের গাফিলতিতে রোগী মৃত্যুর অভিযোগে দুজন নার্স ও এক কর্মীকে মারধর ও হাসপাতালের কেবিনে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছে মৃতের আত্মীয়দের বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদে প্রায় আট ঘণ্টা মৃতদেহ আটকে বিক্ষোভ দেখান হাসপাতালের নার্সরা। বুধবার গভীর রাতে এর জেরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ইংরেজবাজার থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। প্রথমে মৃতের তিন আত্মীয়কে পুলিশ আটক করে। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অভিযোগ দায়ের করলে তাদের গ্রেফতার করে মালদহ জেলা আদালতে পেশ করে পুলিশ।

Advertisement

জানা গিয়েছে, গত ২৭শে জানুয়ারি মঙ্গলবার মালদহের মানিকচকের ভুতনির বাসিন্দা রহিম শেখকে (৭০) অসুস্থ অবস্থায় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বৃদ্ধকে মেডিক্যাল কলেজের মেল মেডিক্যাল ওয়ার্ডে রাখা হয়েছিল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি,ওই বৃদ্ধের হার্টের সমস্যা ছিল। শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যাতেও ভুগছিলেন তিনি। বুধবার রাত আটটা নাগাদ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। সেই সময় তাঁকে ইঞ্জেকশনও দেওয়া হয়। কিন্তু রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর। সেই সময় ওয়ার্ডে ছিলেন দু’জন নার্স ও একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে তাঁদের উপরেই চড়াও হন মৃতের আত্মীয়রা। অভিযোগ,১৫ থেকে ২০ জনের একটি দল নার্সদের মারধর ও হাসপাতালে ভাঙচুর শুরু করে। হাসপাতালে থাকা পুলিশ কর্মী ও নিরাপত্তা রক্ষীরা গিয়ে কোনওমতে অবস্থা সামাল দেন। রাতেই মৃতের তিনজন আত্মীয়কে পুলিশ আটক করে নিয়ে যায়।

মৃতের এক আত্মীয় মতি শেখ বলেন, “ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরে আমাদের আত্মীয়ের মৃত্যু হয়। আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানাতে গেলে তারা আমাদের গালিগালাজ করেন। পরে নিরাপত্তা রক্ষীদের দিয়ে আমাদের বের করে দেওয়া হয়।”

Advertisement

এদিকে ঘটনার পরেই নিরাপত্তার দাবিতে রহিম শেখের মৃতদেহ আটকে বিক্ষোভ শুরু করেন নার্সরা। তাঁদের অভিযোগ, “হাসপাতালের নিরাপত্তা বলে কিছু নেই। প্রতিটি ওর্য়াডেই একজন রোগীর একাধিক আত্মীয় থাকছেন। তাদের বের হতে বললে তারা গালিগালাজ করেন। হাসপাতালে ঢুকে মারধরও রুটিন হয়ে উঠেছে। তবুও কর্তৃপক্ষ তাদের নিরাপত্তার বিষয়ে কোনও উদ্যোগ নিচ্ছে না।”

এই বিষয়ে মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার আব্দুর রশিদ বলেন, “কর্তব্যরত অবস্থায় নার্সদের মারধর ও তাদের কেবিনে ভাঙচুরের অভিযোগ পেয়েছি । থানায় জানিয়েছি। হাসপাতালের নিরাপত্তা বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। দেহ আটকে রাখার বিষয়ে মৃতের আত্মীয়রা আমার কাছে কোনও অভিযোগ করেননি। অভিযোগ এলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।”

পুলিশ জানায়, ধৃতেরা হল মকবুল হোসেন,মান্নান হোসেন এবং ডালিম শেখ। তাদের বাড়িও মানিকচকের ভুতনি এলাকায়। জেলার পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের আদালতে পেশ করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।” ধৃতদের ১৪ দিনের জেল হেফাজত হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন