আতঙ্কের কিছু নেই বলে স্বাস্থ্যকর্তারা আশ্বাস দিচ্ছেন। কিন্তু সোয়াইন ফ্লু-র পরীক্ষা ও চিকিৎসা নিয়ে হাজারো বিভ্রান্তির মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। মঙ্গলবার আরও পাঁচ জনের থুতু পরীক্ষা করে ‘পজিটিভ’ রিপোর্ট পাওয়া গিয়েছে। তাঁদের সকলেই কলকাতা এবং আশপাশের জেলার বাসিন্দা। বিধানচন্দ্র রায় শিশু হাসপাতাল এবং কলকাতার কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছেন তাঁরা। স্বাস্থ্যকর্তারা জানান, সব রোগীরই শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল।
রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব মলয় দে জানান, সব দিক থেকেই সোয়াইন ফ্লু-র সংক্রমণজনিত পরিস্থিতির মোকাবিলা করা হচ্ছে। আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা এবং হুগলির পাঁচ জন বাসিন্দার রিপোর্টে এ দিন সোয়াইন ফ্লু-র জীবাণু পাওয়া গিয়েছে। ওই পাঁচ জনকে নিয়ে রাজ্যে সোয়াইন ফ্লু রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৩৬। তাঁদের মধ্যে মাত্র এক জনই ভেন্টিলেশনে রয়েছেন। বাকিদের অবস্থা স্থিতিশীল।
এ দিনও রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে জ্বর এবং হাঁচি-কাশির উপসর্গ নিয়ে বহু মানুষ ভিড় করেছেন। কিন্তু রাজ্যে সোয়াইন ফ্লু-র পরীক্ষা হয় একমাত্র কলকাতার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কলেরা অ্যান্ড এন্টেরিক ডিজিজেজ-এ। তাই বাকি সর্বত্র নমুনা সংগ্রহ ছাড়া এই রোগ মোকাবিলার অন্য কোনও কাজ হয়নি। এই নিয়ে একই সঙ্গে আতঙ্ক ও ক্ষোভ ছড়িয়েছে। স্বাস্থ্যকর্তারা জানান, কলকাতার স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনে রোগ পরীক্ষার একটি কেন্দ্র গড়ার প্রক্রিয়া চলছে। কিছু দিনের মধ্যেই সেই কাজ সম্পূর্ণ হবে।
সপ্তাহখানেক আগে কলকাতায় সোয়াইন ফ্লুয়ে দুই মহিলার মৃত্যু হয়। সেটাই চলতি দফায় রাজ্যে ওই রোগে প্রথম প্রাণহানি। তার পরে ওই রোগের দাপট বাড়তে থাকলেও মহানগর-সহ রাজ্যে আর মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। কিন্তু অন্যান্য রাজ্যে গত তিন দিনে সোয়াইন ফ্লুয়ে শতাধিক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জে পি নড্ডা জানান, সব মিলিয়ে সোমবার রাত পর্যন্ত দেশে এই রোগে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৬২৪। আক্রান্তের সংখ্যা ৮৪২৩। রাজস্থান, গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্রের বিস্তীর্ণ এলাকায় মহামারির আকার নিয়েছে এই রোগ। পরিস্থিতি মোকাবিলায় হাসপাতালগুলিতে সোয়াইন ফ্লু পরীক্ষার পর্যাপ্ত কিট, ওষুধ এবং সুরক্ষা-মাস্ক সরবরাহ করা হচ্ছে।