ছিল ৩৬। চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে রাজ্যে সোয়াইন ফ্লুয়ে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৪২। বুধবার আরও ছ’জনের থুতু পরীক্ষায় ‘পজিটিভ’ রিপোর্ট এসেছে। তবে একই দিনে দুই মহিলার মৃত্যুর পরে আর কোনও প্রাণহানি ঘটেনি।
নতুন করে আক্রান্ত ছ’জনই কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব মলয় দে জানান, সকলের শারীরিক অবস্থাই আপাতত স্থিতিশীল। তাঁর বক্তব্য, সোয়াইন ফ্লু-র উপসর্গ নিয়ে কোনও রোগী এলে প্রাথমিক ভাবে ডাক্তারদেরও যদি মনে হয় তিনি ওই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন, তা হলে থুতুর নমুনা সংগ্রহের সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করে নেওয়া হচ্ছে। “রাজ্যের চিকিৎসার প্রোটোকল এটাই। সরকারি হাসপাতালে ভর্তি কোনও সোয়াইন ফ্লু রোগীর অবস্থার অবনতি হয়নি। আমরা সব দিক থেকে প্রস্তুত আছি,” বলেন স্বাস্থ্যসচিব।
পশ্চিমবঙ্গে সোয়াইন ফ্লু পরীক্ষার একমাত্র কেন্দ্র বেলেঘাটার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কলেরা অ্যান্ড এন্টেরিক ডিজিজেজ (নাইসেড)। এ দিন নাইসেড সূত্রে জানা গিয়েছে, জমা পড়া নমুনার সংখ্যা ক্রমশ বাড়লেও তাতে সোয়াইন ফ্লু-র জীবাণু পাওয়ার হার আগের তুলনায় কমছে।
এর কারণ কী?
নাইসেডের বিজ্ঞানীদের মতে, মানুষের মধ্যে আতঙ্ক একটু বেশিই ছড়িয়েছে। তাই নমুনা অনেক বেশি জমা পড়ছে। কারণ, সামান্য জ্বরজ্বালা হলেই অনেকে থুতুর নমুনা নিয়ে হাজির হচ্ছেন। সতর্কতা ভালই। তবে এ ব্যাপারে অযথা আতঙ্কিত না-হওয়ারই পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা।
বাংলায় সোয়াইন ফ্লুয়ে আর কেউ মারা না-গেলেও দেশের অন্যত্র প্রাণহানি ঘটছেই। এই মারণ রোগে সারা দেশে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৬৬৩। আক্রান্ত ১০ হাজার। তবে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জে পি নড্ডা জানান, সোয়াইন ফ্লু-র চিকিৎসার সরঞ্জাম নিয়ে প্রায় প্রতিটি হাসপাতালই তৈরি। ওষুধেরও অভাব নেই। তবে রাজস্থান, গুজরাত, মহারাষ্ট্র, তেলঙ্গানা-সহ বিভিন্ন রাজ্যের পরে নাগাল্যান্ডেও মিলেছে ওই রোগের এইচ১এন১ ভাইরাস। এক জন মহিলা আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছে সেখানকার স্বাস্থ্য দফতর। জম্মু-কাশ্মীরে সোয়াইন ফ্লুয়ে মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। ভাইরাসটি যাতে মহামারির আকার নিতে না-পারে, সেই জন্য ভূস্বর্গে আপাতত সব স্কুল বন্ধ রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। পর্যটকদেরও বিশেষ ভাবে সাবধান হতে বলেছে রাজ্য প্রশাসন।