দিনের বেশির ভাগ সময় অকেজো থাকছে লিফট। মাঝেমধ্যেই জলের পাম্প চালানো যাচ্ছে না। গাদাগাদি করে থাকা রোগীর ঘরে পাখা ঘুরলেও আখেরে লাভ হচ্ছে না। এসি মেশিন কাজ না করায় অপারেশন থিয়েটারের যন্ত্রাংশে ক্ষতির আশঙ্কা আছে। সমস্যা হচ্ছে এক্সরে মেশিন চালানো নিয়েও।
প্রায় এক মাস ধরে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জেরে দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালের সব পরিষেবাই বিঘ্নিত হয়ে পড়েছে। ফলে গরমের মরসুমে ভোগান্তির মুখে পড়েছেন রোগী ও তাদের পরিজনেরা। তাও সমস্যা মেটাতে প্রশাসন বা স্বাস্থ্য দফতরে কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ। দিনহাটার মহকুমাশাসক, হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান কাজল সাহা এই ব্যাপারে বলেছেন, “সুপারের সঙ্গে কথা বলে নিয়ে সমস্যা মেটাতে উদ্যোগী হচ্ছি।”
তিন তলা হাসপাতালে শয্যাসংখ্যা ২৩০। গড়ে প্রতি মাসে ২৫০-৩০০ ভর্তি থাকেন। তার মধ্যে দোতলায় শিশু ওয়ার্ড ও তিন তলায় রয়েছে প্রসূতি বিভাগ। এক মাস ধরে ভোল্টেজ কমে যাওয়ায় বেশির ভাগ সময় লিফট চালানো যাচ্ছে না। সন্তানসম্ভবাদের ঝুঁকি নিয়ে স্ট্রেচারে সিঁড়ি ভেঙে উপরে তুলতে হচ্ছে। দুপুরের পর জলের পাম্প চালানোর সমস্যা ঘিরে ভোগান্তি আরও বেড়েছে। হাসপাতালের কয়েক জন কর্মী জানান, লো ভোল্টেজ সমস্যা এতটাই যে বাড়তি সময় জেনারেটর চালাতে ঘণ্টায় ৮ লিটার হিসেবে দিনে কমপক্ষে ৫০ লিটার ডিজেল দরকার। কিন্তু দিনে ২০ লিটারের বেশি ডিজেল বরাদ্দ করা হচ্ছে না। দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালের সুপার রঞ্জিত মণ্ডল সব মেনে নিয়ে বলেন, “হাসপাতালে বড় জেনারেটর রয়েছে। সেটা চালিয়ে অন্য সব পরিষেবা যতটা সম্ভব স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা হচ্ছে। তবে লিফট চালানো সম্ভব হচ্ছে না। লো ভোল্টেজের ওই সমস্যার কথা বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির কর্তাদের জানিয়েছি।”
এখানেই শেষ নয়, বিকেলের পর অনেক ওয়ার্ডে নাম কে ওয়াস্তে পাখা ঘুরছে আলো ঠিকঠাক জ্বলছে না। লো ভোল্টেজের সমস্যায় এক্সরে মেশিন, আলট্রাসোনোগ্রাফি মেশিন চালাতেও সমস্যা হচ্ছে। অপারেশন থিয়েটারে এসি বিকল হয়ে পড়ায় তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। এতে গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশের ক্ষতি সম্ভাবনা আছে। দিনহাটা নাগরিক মঞ্চের আহ্বায়ক জয়গোপাল ভৌমিক বলেন, “ভোগান্তি এড়াতে রোগীরা বাইরে থেকে বেশি টাকা খরচ করে এক্সরে করাতে বাধ্য হচ্ছেন। লিফটের বদলে সিঁড়ি দিয়ে প্রসূতিদের নিয়ে যাওয়ায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকছে। তাও সমস্যা মেটানোর উদ্যোগ নেই। তাই আমরা আন্দোলনে নামছি।”