সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে ‘ডেঙ্গির ছুটি’

এ বছর ডেঙ্গি পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে দাবি করেছিল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। তারাই এ বার ডেঙ্গিতে নাকাল হয়ে খড়দহের সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পঠনপাঠন ১০ দিনের জন্য বন্ধ করে দিতে বাধ্য হল। ডেঙ্গির ভয়ে শনিবার থেকেই ওই মেডিক্যাল কলেজের হস্টেল খালি করে ছাত্রছাত্রীরা চলে যেতে শুরু করেছেন। পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে পরীক্ষাও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৪ ০০:১৩
Share:

এ বছর ডেঙ্গি পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে দাবি করেছিল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। তারাই এ বার ডেঙ্গিতে নাকাল হয়ে খড়দহের সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পঠনপাঠন ১০ দিনের জন্য বন্ধ করে দিতে বাধ্য হল। ডেঙ্গির ভয়ে শনিবার থেকেই ওই মেডিক্যাল কলেজের হস্টেল খালি করে ছাত্রছাত্রীরা চলে যেতে শুরু করেছেন। পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে পরীক্ষাও।

Advertisement

স্বাস্থ্যকর্তারাও স্বীকার করছেন যে, মশাবাহিত রোগের ভয়ে কোনও মেডিক্যাল কলেজের পড়াশোনা বন্ধ করে ছাত্রছাত্রীদের ছুটি দিয়ে দেওয়ার নজির প্রায় নেই বললেই চলে। রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “আসলে প্রায় চার-পাঁচ বছর ধরে ওখানে নতুন মেডিক্যাল কলেজের নির্মাণকাজ চলছিল। এখনও কাজ শেষ হয়নি। খোঁড়াখুঁড়ির ফলে ছোটবড় গর্ত রয়েছে। সেখানে বৃষ্টির জল জমে মশার লার্ভা তৈরি হয়েছে। তা থেকেই ডেঙ্গি ছড়াচ্ছে। ছাত্রছাত্রীরা ভয় পেয়ে গিয়েছেন। আতঙ্ক নিয়ে তো ক্লাস চালানো যায় না। তাই ছুটি দিতে হয়েছে। দ্রুত যাতে লার্ভা ও মশা মারার কাজ শেষ করা হয়, সে বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছি।”

হাসপাতাল সূত্রের খবর, গত এক সপ্তাহে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজের এমবিবিএস পড়ুয়াদের মধ্যে সাত জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। এঁদের মধ্যে চার জনই কলেজের হস্টেলে থাকেন। তাঁরা ওই মেডিক্যাল কলেজের হাসপাতালেই আপাতত ভর্তি। বাকি তিন জন হস্টেলে থাকেন না। তাঁরা নিজেদের বাড়িতে চিকিত্‌সাধীন। ডেঙ্গির প্রকোপ শুরু হওয়ার পর থেকেই ছাত্রছাত্রীরা লাগাতার অভিযোগ করছেন, ময়লা জমে হাসপাতাল চত্বর নরক হয়ে আছে। ঘরে এবং ক্লাসঘরে মশার কামড়ে তাঁরা টিঁকতে পারছেন না। এ ভাবে চললে সকলেরই ডেঙ্গি হবে।

Advertisement

শনিবার ছাত্রছাত্রীরা দল বেঁধে অধ্যক্ষ দেবাশিস ভট্টাচার্যের কাছে গিয়ে ডেঙ্গি থেকে বাঁচতে ছুটির আবেদন জানান। বেশ কিছু ক্ষণ আলোচনার পরে অধ্যক্ষ তা গ্রাহ্য করেন। ঠিক হয়েছে, পঞ্চম ও সপ্তম সেমেস্টারের পরীক্ষাও পিছিয়ে যাবে। দেবাশিসবাবুর কথায়, “আতঙ্কের কোনও ওষুধ হয় না। তার থেকে বরং কিছু দিন ছুটি থাকা ভাল।” মেডিক্যাল কলেজের চিকিত্‌সকদের একাংশ মুচকি হেসে মন্তব্য করেছেন, “মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া পরিকাঠামোর জন্য পঠনপাঠনে বাদ সাধতে পারে, এমন আশঙ্কা ছিল। তার আগেই মশারা সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজের পড়াশোনা বন্ধ করে দিল।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন