স্বস্তি ডাব-গ্লুকোজে, ভরসা টুপি-ছাতায়

সামনেই ভোট। প্রচারে, মিছিলে, তর্কে-বিতর্কে পরিবেশ এমনিই গরম। তার উপর সুয্যি দেবতাও দিন দিন উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হচ্ছেন। এ হেন পরিস্থিতিতে পড়ুয়াদের স্কুলে কলেজে যাওয়া, বাবু-বিবিদের অফিস, দোকানে যাওয়া, গিন্নিদের সেলের বাজার ঘুরে দরদাম করা, সর্বোপরি প্রার্থীদের প্রচার বা রোড-শো, সবেই মুশকিল। বিশেষ করে গরম হাওয়ায় শরীর সুস্থ রাখাটাই যেন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চিকিৎসকদের মতেও, খুব প্রয়োজন না হলে বাইরে না বেরোনোই ভালো। তবু যদি বেরোতেই হয়, সেক্ষেত্রে শরীর ঠিক রাখতে কিছু সাধারণ স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। কিছুটা বদলাতে হবে রুটিন। তাহলেই ভ্যাপসা গরমে অনেকটা ‘কুল’ থাকা যাবে।

Advertisement

অর্পিতা মজুমদার

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৪ ০০:৪৮
Share:

চোখ-মুখ ঢেকে পথে। সোমবার দুর্গাপুরে সব্যসাচী ইসলামের তোলা ছবি।

সামনেই ভোট। প্রচারে, মিছিলে, তর্কে-বিতর্কে পরিবেশ এমনিই গরম। তার উপর সুয্যি দেবতাও দিন দিন উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হচ্ছেন।

Advertisement

এ হেন পরিস্থিতিতে পড়ুয়াদের স্কুলে কলেজে যাওয়া, বাবু-বিবিদের অফিস, দোকানে যাওয়া, গিন্নিদের সেলের বাজার ঘুরে দরদাম করা, সর্বোপরি প্রার্থীদের প্রচার বা রোড-শো, সবেই মুশকিল। বিশেষ করে গরম হাওয়ায় শরীর সুস্থ রাখাটাই যেন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চিকিৎসকদের মতেও, খুব প্রয়োজন না হলে বাইরে না বেরোনোই ভালো। তবু যদি বেরোতেই হয়, সেক্ষেত্রে শরীর ঠিক রাখতে কিছু সাধারণ স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। কিছুটা বদলাতে হবে রুটিন। তাহলেই ভ্যাপসা গরমে অনেকটা ‘কুল’ থাকা যাবে।

এ বছর মার্চের শেষেই তাপমাত্রা সাধারণের থেকে অনেকটা বেশি। সকাল ১০টা বাজতে না বাজতেই রাস্তাঘাটে মানুষজনের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। আসানসোল, রানিগঞ্জ থেকে দুর্গাপুর, অন্ডাল, পানাগড়সর্বত্র একই ছবি। গরমে উষ্ণতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এমনিতে কিছু রোগের জীবাণু বংশবিস্তার করে। অনেক ক্ষেত্রে সংক্রামক রোগও দেখা যায়। এ ছাড়া দিনের প্রচণ্ড গরমের পরে শেষ রাতের ঠান্ডা হাওয়া, এই তাপমাত্রার তারতম্যে হার্টের রোগ বাড়তে পারে বলেও চিকিৎসকদের একাংশের ধারনা। এছাড়া যাঁরা বাইরের ঘোরাঘুরি করেন, অত্যধিক ঘামে শরীর থেকে জল ও নুন বেরিয়ে যাওয়ায় হিট স্ট্রোক বা সান স্ট্রোকের সম্ভাবনা থাকে বলেও জানান চিকিৎসকেরা। তাই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে কাজ করতে করতে হঠাৎ বাইরে আসা বা বাইরের রোদ থেকে সটান ঠান্ডা ঘরে না ঢোকাই ভাল।

Advertisement

তবে সামনেই যেহেতু লোকসভা নির্বাচন তাই প্রার্থী বা দলের নেতা কর্মীদের পক্ষে চিকিৎসকদের বিধিনিষেধ পুরোপুরি মানা সম্ভব নয়। মাথার উপরে গনগনে সূর্য, গরম হাওয়ার হলকার মধ্যেই প্রচারে ব্যস্ত তাঁরা। সেক্ষেত্রে সকলের জন্যই চিকিৎসকদের পরামর্শ, সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে ঘন্টা খানেক ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ বা প্রাণায়াম সেরে নিতে হবে। এর পরে গ্রিন টি, সঙ্গে টোস্ট, বিস্কুট বা হালকা খাবার খেয়ে বেরিয়ে পড়তে হবে প্রচারে। খেয়াল করে ঘণ্টা খানেক অন্তর নুন-চিনির জল, ডাবের জল বা গ্লুকোজের জল খেতে হবে। খিদে পেলে মাঝে হাল্কা কিছু খেয়ে নেওয়াটাই ভাল। খালি পেটে থাকলে শরীর খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দুপুরের মেনুতে সুক্তো, পাঁচমিশালি সবজি, পাতলা ডাল, মাছের পাতলা ঝোল চলতে পারে। এর পরে কিছুক্ষণের জন্য বিশ্রাম নিতে পারলে ভালো হয়। বিকালে রোদ কমলে আবার প্রচারে বেরোতে হবে।

দুর্গাপুরের দ্য মিশন হাসপাতালের চেয়ারম্যান হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ সত্যজিৎ বসু বলেন, “তাপ থেকে বাঁচতে প্রচুর জল খেতে হবে। ফল খেতে হবে। সিদ্ধ সবজি খেতে হবে। তেল-মশলা যুক্ত খাবার, খাসির মাংস ইত্যাদি একেবারে বাদ। বাইরে বেরোনোর সময় ছাতা বা টুপি নিতে হবে। যাঁদের ‘কার্ডিও ভাসকুলার ডিজিজ’ রয়েছে তাঁদের রোদে না বেরোনোই ভালো। সতর্ক থাকতে হবে।” চক্ষু বিশেষজ্ঞ মনোজ হাজরা জানাচ্ছেন, বাইরে বেরোনোর সময় অবশ্যই রোদ চশমা ব্যবহার করতে হবে। তাতে চোখে সরাসরি রোদের আঁচ লাগার ভয় কমে। তা না হলে অ্যালার্জি হতে পারে। এছাড়া রোদ থেকে ত্বক বাঁচাতে ফুল হাতা জামা, মাথায় টুপি, ত্বকে সানস্ক্রিন লাগানোর পরামর্শ দিচ্ছেন দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক শর্মিষ্ঠা দাস। তিনি আরও জানাচ্ছেন, টক দই, শসা খেতে হবে। দিনে একাধিক বার স্নান করতে হবে।

অতএব, মাঝ চৈত্রে সঙ্গী ছাতা, ডাবের জলই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন