সংশয় কাটাতে ভেষজ আবিরে সরকারি স্বীকৃতি

খোলা আবিরের পাশাপাশি বাজারে বিভিন্ন রকম ভেষজ আবিরের প্রচলন বহু দিনের। দিন দিন পাল্লা দিয়ে বেড়েছে এর চাহিদাও। কিন্তু এ বিষয়ে কোনও সরকারি নজরদারি না থাকায় ভেষজ আবির বলে বাজারে যা বিকোচ্ছে, তার গুণমান নিয়ে ক্রেতাদের মনে সংশয় বহুদিনের। ওই সব ‘ভেষজ’ আবিরে কোনও ক্ষতিকারক রাসায়নিক মেশানো হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখার কোনও সরকারি ব্যবস্থাও গড়ে ওঠেনি এ রাজ্যে।

Advertisement

সুপ্রিয় তরফদার

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৪ ০২:১০
Share:

খোলা আবিরের পাশাপাশি বাজারে বিভিন্ন রকম ভেষজ আবিরের প্রচলন বহু দিনের। দিন দিন পাল্লা দিয়ে বেড়েছে এর চাহিদাও। কিন্তু এ বিষয়ে কোনও সরকারি নজরদারি না থাকায় ভেষজ আবির বলে বাজারে যা বিকোচ্ছে, তার গুণমান নিয়ে ক্রেতাদের মনে সংশয় বহুদিনের। ওই সব ‘ভেষজ’ আবিরে কোনও ক্ষতিকারক রাসায়নিক মেশানো হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখার কোনও সরকারি ব্যবস্থাও গড়ে ওঠেনি এ রাজ্যে। যদিও রাজ্য সরকারের দাবি, এ বছর দোলের পর থেকে এ বিষয়ে উদ্যোগী হবে তারা।

Advertisement

এ নিয়ে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের তরফে জানা গিয়েছে, দোলের পরে আবির ও রং প্রস্তুতকারি সংস্থাগুলিকে ডেকে তাদের আবির সরকারি ল্যাবে পরীক্ষা করা হবে। তার পর প্রতিটি ভেষজ আবির প্রস্তুতকারী সংস্থার জন্য মিলবে একটি স্ট্যাম্প, যা লাগানো থাকবে আবিরের প্যাকেটের গায়ে। এর থেকে সাধারণ মানুষ সহজেই বুঝতে পারবেন কোন ভেষজ আবির সরকার স্বীকৃত। যার ফলে স্বাভাবিক ভাবেই তাঁদের সংশয় কমবে বলেই দাবি ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের।

এ রাজ্যে বিভিন্ন সংস্থা ভেষজ আবির তৈরি করে। তাদের মধ্যেই একটি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। ২০০২ সাল থেকে বিভিন্ন ফুল, পাউডার মিশিয়ে তারা শুরু করে ভেষজ আবির তৈরি। আবির প্রস্তুতকারিদের অন্যতম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন টেকনিক্যাল ম্যানেজার (সিআরটিসি) অসীম চট্টোপাধ্যায় জানান, হলুদ রঙের ক্ষেত্রে গাঁদা, গোলাপির ক্ষেত্রে গোলাপ, সাদার জন্য রজনীগন্ধা ও নিম পাতার সংমিশ্রণ ও সবুজে ব্যবহৃত হয় অপরাজিতা ফুল। গড়িয়ার বাড়িতে তিনি এই আবির তৈরি করেন, যা গড়িয়া, যাদবপুর-সহ নানা এলাকায় বিক্রি হয়। তিনি বলেন ২০০২-এ ৫০ কেজি আবির তৈরি করে বিক্রি হয়েছিল। এ বার সেই পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২০০০ কেজিতে।

Advertisement

কিন্তু শুধু তো যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি আবির নয়, বাজারে বিকোচ্ছে বিভিন্ন রকম ভেষজ আবির। শ্যামবাজারের বাসিন্দা কৌশিক ঘোষ বলেন, “দোল এলেই ইন্টারনেটে খুঁজে ভেষজ আবির কিনি। কিন্তু শীলমোহর না থাকায় কোনটা আসল বা নকল, জানার উপায় থাকে না। সরকার এ নিয়ে তত্‌পর হলে ভাল হত।”

দোল উপলক্ষে দক্ষিণ কলকাতার একটি দোকানেও দেদার বিক্রি হচ্ছিল ভেষজ আবির। এক ক্রেতা শ্যামলী হালদার বলেন, “যেগুলি ভেষজ বলে বিক্রি হয় সেগুলি অন্যান্য আবিরের থেকে ভাল বলে মনে হয়, তাই কিনি। কিন্তু এই ভাল লাগার কোনও বিজ্ঞানভিত্তিক প্রমাণ নেই। ফলে ঠকে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়।”

একই অভিযোগ দক্ষিণ কলকাতার ভেষজ রং প্রস্তুতকারি এক সংস্থার কর্তার। তাঁর কথায়, “আমরা ফল ও সব্জি দিয়ে ভেষজ ভাবে রঙ তৈরি করি। কিন্তু বাজারে অনেকেই নিজেদের আবির ভেষজ বলে দাবি করেন। কিন্তু সেগুলি কতটা ভেষজ, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় আছে।” অসীমবাবু জানান, সরকার শিলমোহর দিলে ভালই হয়। কোনটা সত্যিই ভেষজ আবির, তা বুঝতে আর কোনও অসুবিধা হবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন