সোয়াইন ফ্লু-র উপসর্গ নিয়ে আরও দু’জন হাসপাতালে

সোয়াইন ফ্লু-র উপসর্গ নিয়ে আরও দুজন রোগীকে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হল। বৃহস্পতিবার বিকেল নাগাদ জলপাইগুড়ি শহরের ওই দুই বাসিন্দাকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করে গলার কফ এবং সংক্রমিত জায়গার রসের নমুনা (সোয়াব) পরীক্ষার জন্য কলকাতায় ‘ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব কলেরা অ্যান্ড এনটেরিক ডিজিজে’ পাঠানো হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৫ ০২:৫৪
Share:

সোয়াইন ফ্লু ঠেকাতে সাবধানতা। বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ি হাসপাতালে সন্দীপ পালের তোলা ছবি।

সোয়াইন ফ্লু-র উপসর্গ নিয়ে আরও দুজন রোগীকে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হল। বৃহস্পতিবার বিকেল নাগাদ জলপাইগুড়ি শহরের ওই দুই বাসিন্দাকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করে গলার কফ এবং সংক্রমিত জায়গার রসের নমুনা (সোয়াব) পরীক্ষার জন্য কলকাতায় ‘ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব কলেরা অ্যান্ড এনটেরিক ডিজিজে’ পাঠানো হয়।

Advertisement

গত পয়লা মার্চ রাতে ধূপগুড়ি হাসপাতাল থেকে সোয়াইন ফ্লু আক্রান্ত যে ছাত্রকে সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল, সুস্থ হয়ে ওঠায় এদিন তাকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আক্রান্ত এই ছাত্রের চিকিত্‌সার সময় কেন সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেননি এবং কেন নাইসেডের রিপোর্ট আসার আগে সোয়াইন ফ্লু আক্রান্ত দুই চিকিত্‌সকের একজন হাসপাতালে রোগী দেখলেন, তার কারণ দর্শাতে নির্দেশ দিল জেলা স্বাস্থ্য দফতর। এ দিনই হাসপাতাল সুপার এবং দুই চিকিত্‌সককে শোকজ করা হয়েছে।

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ মৃধা বলেন, “কেন স্বাস্থ্য দফতরের গাইড লাইন মেনে কাজ হয়নি হাসপাতাল সুপার এবং দুই চিকিত্‌সকের কাছে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। সোয়াব পরীক্ষার রিপোর্ট পৌঁছনোর আগে কেন ওঁদের একজন কেন রোগী দেখলেন তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।” যে দুই চিকিত্‌সকের তত্ত্বাবধানে সোয়াইন ফ্লু আক্রান্ত ধূপগুড়ির বাসিন্দা স্কুলছাত্রের চিকিত্‌সা চলছিল, তাঁরাই ৭ মার্চ থেকে জ্বরে আক্রান্ত হন।

Advertisement

মঙ্গলবার দুই চিকিত্‌সকের সোয়াব সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্যকলকাতায় পাঠানো হয়। বুধবার সন্ধ্যায় পরীক্ষা রিপোর্ট থেকে জানা যায় তাঁরা সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত। তড়িঘড়ি এই চিকিত্‌সকদের আইসোলেশন ওয়ার্ডে রেখে চিকিত্‌সার ব্যবস্থা করা হয়। হাসপাতাল সূত্রেই জানা গিয়েছে, সোয়াইন ফ্লু আক্রান্ত অবস্থায় এক চিকিত্‌সক বুধবার সকাল থেকে হাসপাতালে ‘অন কল’ ডিউটিতে ছিলেন। ঘটনাটি জানাজানি হতে জেলা স্বাস্থ্য কর্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বৃহস্পতিবার এক স্বাস্থ্য কর্তা দুই চিকিত্‌সকের আচরণ নিয়ে কটাক্ষ করে বলেন, “ব্যক্তি বিশেষের সবজান্তা মনোভাবের জন্য এটা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাঁর আগে সুপার এবং দুই চিকিত্‌সকের বক্তব্য জানতে চাওয়া হয়েছে।” হাসপাতাল সুপার পার্থ দে ওই বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন।

হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও সোয়াইন ফ্লু আক্রান্ত রোগীর চিকিত্‌সা করতে গিয়ে কেন দুই চিকিত্‌সক জ্বরে আক্রান্ত হলেন কারণ অনুসন্ধান করেন জেলা স্বাস্থ্য কর্তারা। জানতে পারেন দুজনের কেউই চিকিত্‌সার সময় বিশেষ সরঞ্জাম ব্যবহার করেননি। এর পরেই জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, “গাইড লাইন ব্রেক হয়েছে। এটা কাঙ্খিত ছিল না।” পাশাপাশি তিনি জানান, দুই চিকিত্‌সকই সুস্থ আছেন। তাঁদের একজন বুধবার যে সমস্ত ওয়ার্ডে ঘুরে রোগী দেখেছিলেন, বৃহস্পতিবার জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকরা সেখানে যান। চিকিত্‌সক, নার্স এবং রোগীদের সঙ্গে তাঁরা কথা বলেন। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, প্রত্যেক রোগীর প্রতি বিশেষ নজর রাখা হয়েছে। এদিন বিকেলে সোয়াইন ফ্লু উপসর্গ নিয়ে দুজন রোগী ভর্তি করানোর পরে স্বাস্থ্য কর্তারা জানান, প্রয়োজনে হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ডের শয্যা বাড়ানো হবে। যে দুজন রোগীকে সোয়াইন ফ্লুর উপসর্গ নিয়ে ভর্তি করানো হয়েছে তাঁদের একজনের বয়স ২৯ এবং অন্যজনের বয়স ৫৫ বছর। দুজনেই পুরুষ। এদের একজন সোয়াইন ফ্লু আক্রান্ত এক চিকিত্‌সকের ঘনিষ্ট বলে জানা গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন