রাস্তার পাশে চরে বেড়াচ্ছে শুয়োর। দুর্গাপুরে। —নিজস্ব চিত্র।
সোয়াইন ফ্লু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে রাজ্যে। কয়েকটি জেলাতেও এই রোগে আক্রান্তের খবর মিলেছে। দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে এখনও কারও আক্রান্ত হওয়ার খবর না মিললেও শহরে শুয়োরের দাপাদাপি নিয়ে আতঙ্কে বাসিন্দারা। লোকালয়ের মধ্যে শুয়োরের অবাধ বিচরণ বন্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন শহরের অনেকেই। পুরসভার তরফে জানানো হয়, এ ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা চলছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সোয়াইন ফ্লু মূলত শুয়োর থেকে মশাবাহিত রোগ। চিকিৎসকেরা জানান, এই রোগের প্রাথমিক উপসর্গ জ্বর, তার সঙ্গে গায়ে-হাতে ব্যথা। বমি-বমি ভাব-সহ নানা উপসর্গ দেখা দিতে পারে। তাই জ্বর হলেই রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে প্রতি ব্লকে সতর্কতামূলক নির্দেশিকাও পাঠানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার দেবব্রত দাসের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুরে এখনও কোনও সোয়াইন ফ্লু-আক্রান্তের খবর মেলেনি। তিনি জানান, এই সময় আবহওয়া পরিবর্তনের জন্যও জ্বরও হচ্ছে। তাই ‘ভাইরাল ফিভার’ ভেবে । কিন্তু সব সময়ই যে ভাইরাল জ্বরই হবে তা নয়। তিনি বলেন, “জ্বরে আক্রান্ত রোগীকে বাড়িতে না রেখে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে এসে চিকিৎসা শুরু করাতে হবে।”
সোয়াইন ফ্লু নির্ণায়ক পরীক্ষা অবশ্য জেলায় হয় না। নমুনা সংগ্রহ করে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় কলকাতায়। সুপার দেবব্রতবাবু জানান, দুর্গাপুরের বিভিন্ন এলাকায় শুয়োরের সংখ্যা বহু। তাই এই শহরেও সোয়াইন ফ্লু হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। দেবব্রতবাবু বলেন, “আমাদের তরফে বিভিন্ন ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও অন্য জায়গায় নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। কোনও রকম সন্দেহজনক কিছু নজরে এলেই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
শহরের অনেক জায়গার বাসিন্দাদেরই দাবি, লোকালয়ে শুয়োর ঘুরে বেড়ানো বন্ধ করতে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। সিটি সেন্টারের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের এলাকার পাশেই ডিভিসি মোড়ের কাছে শুয়োরের দল ঘুরে বেড়ায়। নোংরা জমে থাকে। সে সব সরানোর ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।” এ ছাড়া এমএএমসি এলাকা, ইস্পাতনগরীর বিভিন্ন জায়গা-সহ শহরের অনেকাংশেই শুয়োরের সংখ্যা দিনের পর দিন বাড়ছে বলে দাবি বাসিন্দাদের। অন্য দিকে আবার ঠান্ডা কমতে না কমতেই শহরে মশার উপদ্রব বেড়েছে কয়েকগুণ। সে ব্যাপারেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। এ-জোনের বাসিন্দা অভিজিৎ ভট্টাচার্য বলেন, “সোয়াইন ফ্লু রোধে মশার উৎপাত কমানোর দিকেও নজর দেওয়া উচিত।”
দুর্গাপুর পুরসভার ডেপুটি মেয়র অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মশার উপদ্রব কমাতে নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। শুয়োরের যত্রতত্র চরে বেড়ানো বন্ধ করতে কী করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে।” দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক কস্তুরী সেনগুপ্ত বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আমাদের বৈঠকে আলোচনা করা হবে।”