—নিজস্ব চিত্র।
শুয়োরের দৌরাত্ম্য চলছেই। জেলা সদর শহর জুড়ে অঘোষিত বাথানের ছড়াছড়ি। মাঠ থেকে নিকাশি নালা সবই বরাহ বাহিনীর দখলে চলে যেতে বসেছে। ফাঁক পেলে বাড়িতেও ঢুকে পড়ছে বলে অভিযোগ। শহরের এই পরিস্থিতি দেখে বোঝার উপায় নেই যে রাজ্যে সোয়াইন ফ্লু’র সর্তকতা চলছে। গত বছর এই জেলায় জাপানি এনসেফ্যালাইটিস রোগের প্রকোপ উদ্বেগজনক পর্যায়ে চলে গিয়েছিল।
গত ৩ অগস্ট পর্যন্ত এনসেফ্যালাইটিসে ১৭ জনের মৃত্যু হয়। জলপাইগুড়ি জেলায় অ্যাকুইট এনসেফ্যালাইটিস সিনড্রমে ৪৩ জন মারা যায় বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে জেলায় আসেন স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনের ভাইরোলজি বিভাগের তিন জনের বিশেষজ্ঞ দল এবং পুনের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব ভাইরোলজি, দিল্লির ভিক্টরবন ডিজিস কন্ট্রোল প্রোগ্রামের পাঁচ জন জীবাণু বিজ্ঞানী। জেলা জুড়ে সতর্কতা নেওয়া হয়। শুয়োর ধরে ময়নাগুড়ির কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের খামারে পাঠানো হয়। কিন্তু বছর ঘুরতে শহরের বিপজ্জনক কদর্য চেহারা দেখে বাসিন্দাদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়েছে।
শুয়োরের দৌরাত্ম্যের অভিযোগ সমস্যার অস্বীকার করেননি পুরসভার তৃণমূল চেয়ারম্যান মোহন বসু। তিনি বলেন, “সমস্যা বেড়েছে। শহরের কিছু ভদ্রলোক শুয়োরের ব্যবসার পিছনে রয়েছে। গত বছর অভিযান চালানোর পরে উপদ্রব কিছুটা কমেছিল। সামনে পুরভোট, অনেকে ধরে নিয়েছে এখন পুর কর্তারা কিছু করতে পারবে না। কয়েক দিনের মধ্যে ফের অভিযান শুরু করব।”
মহামায়া পাড়ার বাসিন্দা শেখর কর্মকার বলেন, “সোয়াইন ফ্লু-র প্রকোপ দেখা দিয়েছে। জানি না এই শহরের পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে।” জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের সুপার পার্থ দে জানান, সোয়াইন ফ্লু নিয়ে শহরে আতঙ্কের কিছু নেই। তিনি বলেন, “ওই রোগ আদতে শুয়োরের ইনফ্লুয়েঞ্জা। সেটা মানুষকে সরাসরি সংক্রমিত করার ঘটনা বিরল। কিন্তু যে মানুষ আক্রান্ত হয় তাঁর সংস্পর্শে এসে অন্যরা ওই রোগে আক্রান্ত হয়।” যদিও হাসপাতালের প্রাক্তন সুপার সুশান্ত রায় বলেন, “জনবহুল এলাকায় শুয়োরের উপদ্রব বাড়লে সোয়াইন ফ্লু-র মতো মারণ রোগের আশঙ্কা থেকেই যায়। কারণ ওই রোগের উত্স শুয়োর।” রোগের বিপদ নিয়ে বিতর্ক থাকলেও জনবহুল শহরে শুয়োর পালন যে বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে সেই বিষয়ে এক মত স্বাস্থ্য কর্তাদের সকলেই। পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “চুপ করে বসে থাকার ব্যাপার নেই। প্রচুর শুয়োর ধরে বাইরে পাঠানো হয়েছে। ফের ওই ব্যবসা শুরু হয়েছে জেনে অভিযানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
পোলিও নিয়ে প্রচার সাঁইথিয়ায়।