পুরুলিয়া হোমিওপ্যাথি কলেজ। —ফাইল চিত্র
রাজ্য সরকার পুরুলিয়া হোমিওপ্যাথি মেডিক্যাল কলেজ অধিগ্রহণ করলে কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রকের অধীন সংস্থা আয়ুষের তাতে কোনও আপত্তি নেই।
পুরুলিয়া হোমিওপ্যাথি মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের এক আবেদনের প্রেক্ষিতে রাজ্য সরকারকে এ কথা জানিয়ে দিয়েছে আয়ুষ। হোমিওপ্যাথি মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে খবর, আয়ুষের নির্দেশ মতো ২০০৮ সালে রাজ্য সরকার আচমকা এই কলেজে ছাত্রছাত্রী ভর্তি বন্ধের নির্দেশ দেওয়ার পরে কলেজ বন্ধ হয়ে যায়।
এর ফলে জঙ্গলমহলের এই অনুন্নত জেলার একমাত্র মেডিক্যাল কলেজটি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি কলেজের ২৫ জন শিক্ষক ও ১৮ জন শিক্ষাকর্মী দীর্ঘ দিন মাইনে না পেয়ে নিদারুণ অর্থকষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। এ কথা জানিয়ে উপ-রাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারিকে চিঠি লেখেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। এই কলেজটি যাতে সরকার অধিগ্রহণ করে সেই মর্মে অনুরোধ জানিয়ে তাঁকে হস্তক্ষেপ করার জন্যও অনুরোধ করেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।
পুরুলিয়া হোমিওপ্যাথি মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ (বন্ধ হওয়ার সময় এই পদে ছিলেন) মণীন্দ্রনাথ জানা বলেন, “আমরা মাননীয় উপ-রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ চেয়েছিলাম। তিনি আমাদের আবেদন আয়ুষের কাছে পাঠিয়েছিলেন। সেই সংস্থার নির্দেশেই ২০০৮-এ ছাত্রছাত্রী ভর্তি বন্ধ হয়ে যায়। আয়ুষ আমাদের চিঠিতে জানিয়েছে, তৎকালীন রাজ্য সরকারই আয়ুষকে জানিয়েছিল পুরুলিয়া হোমিওপ্যাথি মেডিক্যাল কলেজে পড়াশোনা করার মত কোনও পরিকাঠামো নেই। তাই এই কলেজের অমুমোদন বাতিল করে দেওয়া হয়েছিল। এখন রাজ্য সরকার যদি এই কলেজ অধিগ্রহণ করে তা হলে ফের কলেজ চালু করার প্রশ্নে তাঁদের কোন আপত্তি নেই।”
আয়ুষ এই চিঠির প্রতিলিপি রাজ্য সরকারের ডিরেক্টরেট অফ হোমিওপ্যাথি দফতরের পাশাপাশি পুরুলিয়ার কলেজে পাঠিয়েছে। এখন অপেক্ষা রাজ্য সরকারের সম্মতির। মণীন্দ্রনাথবাবু জানান, জঙ্গলমহলের একাধিক বিধায়ক এই কলেজ চালু করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অনুরোধ করেছেন। ২০১২-এর ডিসেম্বরে পুরুলিয়ার হুটমুড়া স্কুল ময়দানের প্রকাশ্য প্রশাসনিক সভা থেকেও মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করে গিয়েছেন, এই কলেজ সরকার অধিগ্রহণ করবে।
এই প্রেক্ষিতে মণীন্দ্রনাথবাবুর প্রশ্ন, “২০০৮ সালে তৎকালীন রাজ্য সরকার তা হলে কীসের ভিত্তিতে কলেজে পরিকাঠামো নেই বলে আয়ুষকে রিপোর্ট দিয়েছিলেন!” পুরুলিয়ার তৃণমূল বিধায়ক কে পি সিংহ দেও বলেন, “এই কলেজ অধিগ্রহণের বিষয়টি প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরই বিষয়টি দেখছে।”. জেলাশাসক তন্ময় চক্রবর্তী বলেন, “কলেজ পরিদর্শনের কাজ হয়েছে। আমরা শীঘ্রই রাজ্যস্তরে রিপোর্ট পাঠাব।”