বর্তমান ব্যবস্থায় কেউ হাসপাতালে ভর্তি হলে সেই রোগীর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত যাবতীয় ইতিহাস ঢুকে যায় কম্পিউটারে। তবে সেই তথ্যভাণ্ডার থেকে যায় শুধু সেই হাসপাতালেই। এ বার এক হাসপাতাল যাতে অন্য হাসপাতালের সঙ্গে রোগীদের তথ্যভাণ্ডার বিনিময় করতে পারে, তারই চেষ্টা শুরু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। শুধু দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল নয়, বিদেশের বিভিন্ন হাসপাতালের সঙ্গেও তথ্য বিনিময় করা যাবে প্রস্তাবিত নতুন ব্যবস্থায়। এটা সম্ভব করে তুলবে সর্বজনগ্রাহ্য একটি ভাষা আর বিশেষ কোড।
কী ভাবে চলবে এই বিনিময়? একটি সূত্রে জানানো হচ্ছে, এক জন মানুষ বিভিন্ন কারণে একাধিক হাসপাতালে ভর্তি হন। প্রস্তাবিত ব্যবস্থা চালু হলে সেই রোগীর ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট নম্বর থাকবে। সেই নম্বর যে-কোনও হাসপাতালে গিয়ে বললে কম্পিউটারের এক ক্লিকে বেরিয়ে আসবে সেই রোগীর যাবতীয় তথ্য। লহমায় জানা যাবে তাঁর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ইতিহাস। বিভিন্ন সময়ে তিনি যে-সব শারীরিক পরীক্ষানিরীক্ষা করিয়েছেন, তার ফলাফলও জানা যাবে। তবে খুবই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে এই প্রচেষ্টা। পুণের সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট অব অ্যাডভান্সড কম্পিউটিং (সিড্যাক)-কে এই কাজের দায়িত্ব দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। আপাতত কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতালের প্রতিনিধিদের ডেকে এই ব্যাপারে তিন দিনের একটি শিবিরের আয়োজন করেছে সিড্যাক।
অ্যাপোলো হাসপাতালের চিফ ইনফর্মেশন অফিসার অরবিন্দ শিবরামকৃষ্ণন জানান, তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের এই ধরনের একটি নম্বর দেওয়া হয়। কলকাতার রোগী গিয়ে কখনও যদি চেন্নাইয়ে ভর্তি হন, তা হলে ওই নম্বর বললেই বেরিয়ে আসবে যাবতীয় তথ্য। অরবিন্দের কথায়, ‘‘আমাদের যে-ভাষায় এবং যে-কোডে রোগীর তথ্য রাখা থাকে, তা অন্য হাসপাতালের পক্ষে হয়তো বোঝা সম্ভব নয়। তাই তথ্য বিনিময়ের ক্ষেত্রে ‘সকলেই বুঝতে পারবেন’, এমন একটি ইউনিফর্ম ভাষা ও কোডের কথা উঠছে। সেই ভাষা আর কোডই শেখাচ্ছে সিড্যাক।’’ সিড্যাকের কর্ত্রী অবন্তী জোশী জানান, ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া-সহ অন্তত ২৮টি দেশে এই ইউনিফর্ম কোড চালু রয়েছে। এ বার বিদেশ থেকে কেউ ভারতে চিকিৎসা করাতে এসে এখানকার কয়েকটি হাসপাতালে ওই কোড ব্যবহারের সুবিধা পাবেন।