মারা গেল নাগেশ্বরী চা বাগানের অসুস্থ সদ্যোজাত শিশুকন্যাটি। শনিবার বিকালে জলপাইগুড়ি জেলা সদর হাসপাতালে মৃত্যু হয় ১৬ দিনের শিশুকন্যাটির।
বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য দফতরের অতিরিক্ত জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তারক বর্মন অসুস্থ শিশুটিকে দেখতে নাগেশ্বরী চা বাগানে যান। মাত্র দেড় কেজি ওজনের এই শিশুকন্যাটিকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। এরপর সেদিনই শিশুটিকে প্রথমে চালসার মঙ্গলবাড়ি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়। তারপর সেখান থেকে পাঠানো হয় জলপাইগুড়ি জেলা সদর হাসপাতালে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ট্র্যাকিও ইসোপেজা ফিসচুলা নামের রোগে আক্রান্ত ছিল শিশুটি। নাগেশ্বরী চা বাগানের গোপাল লাইনের বাসিন্দা জিতবাহান ওঁরাও ও সঞ্চিতা ওঁরাও এর তৃতীয় সন্তান এই শিশুটির জন্ম হয় গত ১২ নভেম্বর। অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতাল যাওয়ার সময় মাঝ পথেই প্রসব হয় সঞ্চিতার।
জন্মের পর থেকেই অসুস্থ ছিল শিশুটি। তাই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ১২ থেকে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত ১০ দিন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি থাকার পর কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয় শিশুটিকে। কিন্তু ডানকান গোষ্ঠীর অচল হয়ে পড়া নাগেশ্বরী চা বাগানের শ্রমিক পরিবারটি আর্থিক সমস্যার কারণে শিশুটিকে কলকাতায় নিয়ে যেতে পারে নি। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে সোজা বাগানেই ফিরে যায় তারা।
এদিকে শিশুটির ডান পায়ে একটি ক্ষত সৃষ্টি হয়েছিল। সেই অবস্থাতেই বাড়িতে রাখা হয়েছিল অসুস্থ শিশুটিকে। শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের মারফত ফের ব্লক স্বাস্থ্য দফতরে খবর যায়। এরপর গত বৃহস্পতিবার অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শিশুটিকে দেখে যাওয়ার পর জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করান। শিশুটির পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কলকাতাতে পাঠাবে বলে জানিয়েছিল জেলা স্বাস্থ্য দফতর। এ দিন জলপাইগুড়ি জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ মৃধা বলেন, ‘‘শিশুটিকে বাঁচাতে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলাম। আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা চলছিল তার। কিন্তু শারীরিক সমস্যা এতটাই তীব্র ছিল যে চিকিৎসায় সারা মেলেনি।’’
স্বাস্থ্যদফতর সূত্রের খবর, শিশুটির খাদ্য ও শ্বাসনালীর মধ্যে একটি সংযোগ নালী তৈরি হয়েছিল যেটাকে চিকিৎসা পরিভাষায় ট্র্যাকিও ইসোপেজা ফিসচুলা বলা হয়। এই জন্মগত ত্রুটি নিয়েই শিশুটি জন্মেছিল বলে স্বাস্থ্যদফতর সূত্রের খবর।