হাসপাতালের ভিতরেই বাজার বসে, সমস্যায় নাকাল রোগীরা

এক দিকে বসেছে কাঁচা সব্জির বাজার। আর এক দিকে বসেছে জামা-কাপড়ের দোকান। তা ছাড়া রয়েছে মনোহারী সামগ্রী, আইসক্রীম-সহ বিভিন্ন খাবারের দোকান। এক কথায় বলা যায় একটি সুন্দর বাজার। এই পর্যন্ত ঠিক ছিল। কিন্তু হঠাৎ দেখা গেল বেশ কিছু অ্যাম্বুল্যান্স দাঁড়িয়ে রয়েছে ওই বাজারের মধ্যে। কৌতুহল বাড়ল। ভিতরে ঢুকতেই দেখা গেল শুধু অ্যাম্বুল্যান্স নয়, সঙ্গে রয়েছে রোগীদের ভিড়। এই বাজার আসলে বাজার নয়। এটি হল ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতাল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ডায়মন্ড হারবার শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:১১
Share:

এক দিকে বসেছে কাঁচা সব্জির বাজার। আর এক দিকে বসেছে জামা-কাপড়ের দোকান। তা ছাড়া রয়েছে মনোহারী সামগ্রী, আইসক্রীম-সহ বিভিন্ন খাবারের দোকান। এক কথায় বলা যায় একটি সুন্দর বাজার।

Advertisement

এই পর্যন্ত ঠিক ছিল। কিন্তু হঠাৎ দেখা গেল বেশ কিছু অ্যাম্বুল্যান্স দাঁড়িয়ে রয়েছে ওই বাজারের মধ্যে। কৌতুহল বাড়ল। ভিতরে ঢুকতেই দেখা গেল শুধু অ্যাম্বুল্যান্স নয়, সঙ্গে রয়েছে রোগীদের ভিড়। এই বাজার আসলে বাজার নয়। এটি হল ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতাল। দিনের পর দিন হাসপাতাল চত্বরেই বেআইনি ভাবে রমরমিয়ে চলছে এই বাজার। এতে সমস্যায় পড়ছেন রোগীরা। এ প্রসঙ্গে হাসপাতালের সুপার আনোয়ার হোসেন বলেন, “আমি বার বার এঁদের এই চত্বর থেকে বার করে দিলেও এঁরা এখানে এসে বাজার চালায়। এ বার পুলিশকেই দায়িত্ব নিতে হবে।”

হাসপাতালের দু’টি গেট। তার মধ্যে একটি গেট থেকে জরুরি বিভাগের গেট পর্যন্ত এই বাজারে সকাল থেকেই শুরু হয়ে যায় কেনাবেচা। চলে রাত পর্যন্ত। দুটি গেটের কাছে এমন ভাবে পসরা সাজিয়ে বসছে দোকানিরা যে ওই জায়গায় রোগীর বাড়ির লোক হাঁটাচলা করতে পারছেন না। হকারদের দাপটে পানীয় জলের কলের কাছে যাওয়া দুষ্কর হয়ে যাচ্ছে রোগী এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যদের। এই দোকান ঘিরে রাতে সমাজবিরোধীর আনাগোনা বাড়ছে হাসপাতালের ভিতরে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। হৃদরোগের গোলমাল নিয়ে ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন মন্দিরবাজারের ইমরান লস্কর। তাঁর কথায়, “জিনিস বিক্রির জন্য হকাররা প্রত্যেককেই হাঁকডাক শুরু করে দেয়। এমনিতেই মন মেজাজ খারাপ। এ সব ভাল লাগে না।”

Advertisement

সমস্যা আছে ওই হাসপাতালের বাইরে যে সমস্ত দোকানপাট রয়েছে সেই ব্যবসায়ীদেরও। তাঁদের কাছে ট্রেড লাইসেন্স রয়েছে। কর দিয়েই ব্যবসা করছেন। কিন্তু হাসপাতালের ভিতরে এ রকম ব্যবসা চলায় তাঁদেরও ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে বলে জানালেন। বাজারের জন্যই এই চত্বর অপরিষ্কার থাকে বলেও অভিযোগ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, “ছাই থেকে শুরু করে, কাপ, প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ যত্রতত্র পড়ে থাকে। ফলে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। কিন্তু অনেক সময় প্রশাসন থেকে আমাদের দায়ী করা হয়।” এ বিষয়ে সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই ব্যবসায়ীরা। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানান, পুলিশ এসে কয়েকবার হকারদের বের করে দিয়েছে। সে সময় তাঁরা ওখান থেকে চলে গেলেও দিন কয়েক পরে এসে আবার এলাকায় ব্যবসা জমিয়েছে।

কী বলছেন স্থানীয় বিধায়ক তথা রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান দীপক হালদার?

তিনি এই প্রসঙ্গে বলেন, “আমরা হকারমুক্ত হাসপাতাল চাই। বিষয়টিতে প্রশাসনের আরও নজর দিতে হবে। সমিতির শেষ কয়েকটি বৈঠকেও তা বলা হয়েছে।” প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগ হয়নি। অভিযোগ পেলেই যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন