দিদি + দিদি

পর্দায় আবার একসঙ্গে। আড্ডায় ‘পত্রিকা’ সতেরো বছরের বন্ধুতা। যদিও দেখা নেই বেশ কিছু দিন। তার পর এক ফাল্গুনী দুপুরে পাশাপাশি আগুন রঙা বাসন্তী শাড়ি আর নীল-সাদা সালোয়ার কামিজের হঠাৎই দেখা। একজন এখন রাজনীতির দিদি। অন্যজন পর্দার দিদি নাম্বার ওয়ান।

Advertisement

স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:০০
Share:

ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী

সতেরো বছরের বন্ধুতা। যদিও দেখা নেই বেশ কিছু দিন। তার পর এক ফাল্গুনী দুপুরে পাশাপাশি আগুন রঙা বাসন্তী শাড়ি আর নীল-সাদা সালোয়ার কামিজের হঠাৎই দেখা।একজন এখন রাজনীতির দিদি। অন্যজন পর্দার দিদি নাম্বার ওয়ান। রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়-লকেট চট্টোপাধ্যায়। হঠাৎই রচনা বললেন, ‘‘ভাবা যায় সেই লকেট! ওকে যখন প্রথম দেখি তখন ওর তিরিশ কেজি ওজন, আর কুড়ি ইঞ্চি কোমর! কী পিছনে লাগত তখন বুম্বাদা! যা নয় তাই বলত, আর লকেট শুধুই মিষ্টি হাসি হাসত।’’ দুজনেই ফিরে গেলেন মেয়েবেলায়। ‘‘আজ কিন্তু বুম্বাদা বলে সেই লকেট মাঠে নেমে এত কথা বলবে, লড়াই করবে, ভাবা যায় না।’’

Advertisement

সদ্য মুক্তি পেল ওঁদের ছবি ‘হঠাৎ একদিন’। তার আগে এলোমেলো আড্ডায় উঠে এল কখনও নোট বাতিল তো কখনও ইন্ডাস্ট্রি, কখনও আবার প্রেম-পিরিতিও।

Advertisement

নোট বাতিল

লকেট: নভেম্বর মাসটা চাপের ছিল। তার পরে সব ঠিক হয়ে গেছে। লোকে সিনেমাহলে গিয়ে দিব্যি ১০০০ টাকা খরচা করে ফেলছে। তবে কালো পয়সায় ইন্ডাস্ট্রিতে যে সব ছবি হত, সেগুলো বন্ধ হয়ে মঙ্গলই হয়েছে।

রচনা: কালো পয়সার ছবির পোস্টারে আঠা শুকোতে না শুকোতেই ছবিগুলো হল থেকে হাওয়া! এটা বন্ধ হয়ে খুব ভাল হয়েছে। আর আমাদের আর্টিস্টদের কিন্তু কোনও অসুবিধা হয়নি। আমরা তো বরাবর চেকেই পেমেন্ট পেয়েছি।

ইন্ডাস্ট্রি

রচনা: ২০০০ থেকে ২০০৫-এর মধ্যে খান ৩৫ ছবি করেছি। বেশির ভাগই বুম্বাদার সঙ্গে। এখন কেউ ভাবতে পারবে? আমরা কিন্তু ফলতার মতো জায়গাতে শ্যুট করেও প্রোডিউসারদের টাকা ফেরত দিতে পেরেছি। এখন প্যারিসে শ্যুটিং করে ছবি বানিয়ে কি টাকা ফেরত আসে? ইন্ডাস্ট্রি বাঁকুড়া বা বনগাঁর কথা ভেবে এখন আর ছবি বানায় না। আজকাল মাল্টিপ্লেক্সের জমানা। ক’জন দর্শক শাহরুখ ফেলে বাংলা ছবি দেখে?

লকেট: আমি সিরিয়াল আর সিনেমা পাশাপাশি করেছি। ওই সময় দুটো ফিল্ডে কিন্তু এক সঙ্গে কাজ করা যেত না। ২০০৯ সালে যখন অনিকেত চট্টোপাধ্যায়ের ‘ছ-এ ছুটি’ করেছিলাম, তখন ইন্ডাস্ট্রিতে এই ধরনের ছবির কদর ছিল না। তবে আমি স্বপন সাহার কমার্শিয়াল ছবিতেও কাজ করেছি। এখন ইন্ডাস্ট্রিতে চিটফান্ডের টাকা আসছে না বলে ছবি কম আসছে।

রাজনীতির দিদি বনাম সিরিয়ালের দিদি

রচনা: ডান্স বাংলা ডান্স-এর জাজ হয়ে টিভিতে ঢুকলাম। ওখান থেকেই মাচায় আমায় ডাকা শুরু হল ‘রচু’ বলে। তখন বাংলা ছবি করে কত টাকাই বা পেতাম! তার পর ‘দিদি নাম্বার ওয়ান’। সেখানে যা ভালবাসা-সম্মান পেয়েছি, সিনেমা করে পেতাম না। মাসের পনেরো দিন এটাই আমার ধ্যানজ্ঞান!

লকেট: ২০১১-য় তৃণমূলে যাই। কিন্তু সেখানে মাঠে-ঘাটে-কাদায় নেমে রাজনীতি করা হয়নি। গভীরে যাওয়ার জন্য পরে বিজেপি-তে আসি। এখন সবাই ‘লকেটদি’ হিসেবে সই নেয়। অভিনেত্রী হিসেবে নয়। সেটা এনজয় করছি। তবে ইন্ডাস্ট্রিতে যে রাজনীতির রং লেগেছে, তার জন্য খুব দুঃখ হয়। ভাবুন তো, আমি অন্য পার্টির লোক বলে, আমার মা চলে যাওয়ার খবরটা কাগজে দেখেও ইন্ডাস্ট্রির কেউ আমার একবারও ফোন করেনি। অথচ লোকে লকেটকে ভোলেনি, তাই আজও টেক্সট আসে, তোমার কাজ ভাল লাগল, কিন্তু ব্যক্তিগত কারণে ফেসবুকে ‘লাইক’ দিতে পারলাম না। কিন্তু ইন্ডাস্ট্রির লোক হয়েও রূপাদির (গঙ্গোপাধ্যায়) সঙ্গে শেয়ারিংটা ভাল।

প্রেম-পিরিতি

রচনা: নায়িকারা প্রচুর সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে, আবার সম্পর্কগুলো ভাঙেও। এটাই স্বাভাবিক। আমারও এমন হয়েছে। কিন্তু বিয়ে আমি একজনকেই করেছি। ছেলেই এখন আমার প্রায়োরিটি। প্রেম আসবে, যাবে। যেটুকু সংসার-ধর্ম করার করছি।

লকেট: ঘরই আমার প্রেম। যে-মানুষ খারাপ-ভাল সব পরিস্থিতিতে আমায় নেবে, সে-ই আমার মনের মানুষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন