‘সপ্তপদী’র ত্রয়ী
সনৎ, সনৎ কোথায়?... খামগুলো ঠিকমতো পাঠানোর ব্যবস্থা হয়েছে তো?’’
১৯৮৯। ২৬ সেপ্টেম্বর। মধ্য কলকাতার নার্সিংহোমে শুয়ে শেষ বিদায়ের কয়েক ঘণ্টা আগে বলেছিলেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। সনৎ ওঁর ড্রাইভার কাম সেক্রেটারি। শেষ দিকে ওঁর প্রায় সব কিছু দেখত ওই সনৎই।
হেমন্তদার ক্ষীণ গলা। ক্লান্ত স্বর। নিশ্চিত জানেন, হাতে আর সময় বেশি নেই। তবু তার মধ্যেই খোঁজ নিচ্ছেন, প্রতি মাসের পয়লা তারিখে খামে করে আঠেরো-উনিশজনকে যে অর্থসাহায্য তিনি পাঠান, তার কী হল? চল্লিশ বছর ধরে এটাই তো নিয়ম। শেষ সময়েও তার যেন অন্যথা না হয়।
ঘটনাটি আমার এক ছাত্র ডাক্তারের কাছে শোনা। ওই সময়ে যে ছিল হেমন্তদার চিকিৎসকদের একজন। কিন্তু শুনে আমার এতটুকু অবিশ্বাস্য লাগেনি, কারণ এমন উপুড়হস্ত, উদার, স্পর্শকাতর, স্নেহপ্রবণ, সহমর্মী মানুষটিকেই তো আমি পঞ্চাশ-ষাট দশক থেকে দেখে আসছি।
আমার সঙ্গে যখন আলাপ, তখন হেমন্তদা থাকতেন ভবানীপুরের রূপনারায়ণ নন্দন লেনের পৈতৃক বাড়িতে। আমার পিসতুতো দাদা ওঁর বাড়ির কাছেই থাকতেন। ওঁর সঙ্গে হেমন্তদার বন্ধুত্ব ছিল। সেই সূত্রেই যোগাযোগ।
একবারের কথা। ‘বসুশ্রী’ সিনেমা হলে পয়লা বৈশাখে মন্টু বসুর সেই বিখ্যাত জলসা। প্রতি বার যে অনুষ্ঠানে হেমন্তদাকে সবার শেষে মঞ্চে উঠে পনেরো-ষোলোটা গান গাইতেই হত। সে বার বাড়ি বয়ে এসে অন্যতম উদ্যোক্তা অজয় বিশ্বাস অগ্রিম টাকা দিয়ে গেলেন। আমি তখন ওঁর পাশেই বসে। হেমন্তদা টাকাটা ড্রয়ারে রেখে দিলেন।
অজয়বাবু চলে যাওয়ার কিছু বাদেই এক মহিলা এলেন। এক বিখ্যাত শিল্পীর স্ত্রী। তাঁর স্বামী তখন প্রয়াত। ছেলে-মেয়ে নিয়ে প্রায় পথে বসার জোগাড়। কিছু সাহায্য না করলেই নয়। কালক্ষেপ না করে ড্রয়ারে রাখা টাকার বান্ডিলটা বের করে মহিলার হাতে তুলে দিলেন হেমন্তদা।
শুধু অর্থের ব্যাপারে নয়, জাগতিক অনেক কিছুতেই হেমন্তদা ছিলেন গড় মানুষের অনেকটাই ঊর্ধ্বে।
’৭২ সাল। হেমন্তদার পরিচালনায় শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়-মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়ের ‘অনিন্দিতা’ মুক্তি পেল। ছবিতে ‘দিনের শেষে ঘুমের দেশে’ গানটি ব্যবহার করেছিলেন হেমন্তদা।
এর আগে পঙ্কজ মল্লিক ‘মুক্তি’ ছবিতেও এই একই গান নিয়েছিলেন। কিন্তু হেমন্তদা নিলেন দুটো স্তবক বেশি। রেকর্ডে দু’পিঠ ধরে গানটি ছিল। দু’পিঠেই সুরকার হিসেবে পঙ্কজ মল্লিকের নাম। কিন্তু খুঁটিয়ে শুনে আমার কেমন যেন সন্দেহ হল, বর্ধিত অংশটিরও সুরকার কি উনিই? বরং এতে কেমন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের শৈলী চলে এসেছে না!
সরাসরি জিজ্ঞেস করলাম হেমন্তদাকে। বেশ কিছু কথার পর শেষে চুপ করে বসে রইলেন। তার পর বললেন, ‘‘অনিন্দিতা-র গান করার সময়ই মনে হয়েছিল, পঙ্কজদার সুরটা রাখব। তাই পরিবর্ধিত অংশটি নিয়ে ওঁকে শুনিয়ে সম্মতি চাইলাম। খুশি হয়েই অনুমোদন দিলেন। পুরো গানটারই সুরকার হিসেবে ওঁর নাম রাখলাম। তার দুটো কারণ। ওঁর প্রতি আমার শ্রদ্ধা। আর দুই, এতে ছবির অন্যতম সুরকার হিসেবে পঙ্কজদার কিছু অর্থপ্রাপ্তি হবে!’’
এ যদি ওঁর উদারতার এক পরিচয় হয় তো, ‘বালিকাবধূ’-র ঘটনাটি কী গোত্রে ফেলব?
তরুণ মজুমদারের ছবি। ’৬৭ সালে রিলিজ করল। তার আগে আবহসঙ্গীত তৈরির সময় এক জায়গায় পরিচালক হেমন্তদাকে বললেন, এইখানটা একটু অন্য রকম করলে ভাল হয়। হেমন্তদা বদলটা চাননি। কিন্তু পরিচালককে সম্মান দিতেই আবহের কিছু অংশে নির্দ্বিধায় পরিবর্তন আনলেন। মনে রাখবেন, তখন কিন্তু বাংলা ছবিতে ওঁর কাজের বয়স কুড়ি বছর পেরিয়েছে। বম্বেতে পনেরো বছর।
তার পরেও একটা ব্যাপার খেয়াল করার থাকে। ছবিতে আবহসঙ্গীতে হেমন্তদা যে গভীরতা নিয়ে কাজ করতেন, তা তাবড় বিশেষজ্ঞকে চমকে দিত।
‘সপ্তপদী’-তে কৃষ্ণেন্দু-রিনা ব্রাউনের বিয়ে নিয়ে সঙ্কটের সময়ের একটি আবহের কথা মনে পড়ছে। রিনাকে বিয়ে করতে হলে কৃষ্ণেন্দুকে খ্রিস্টান হতে হবে। তা নিয়ে পরিবারে সঙ্ঘাত। দোলাচলে কৃষ্ণেন্দু।
হেমন্তদার আবহ শুরু হচ্ছে অনসম্বল সিম্ফোনির স্ট্রিং দিয়ে। তারপর হিন্দু মন্দিরের ঘণ্টা। শেষে চার্চের ঢং ঢং ঢং শব্দটা এসে মিলে যায় সেই ধারায়! একটাও সংলাপ নেই, ধর্ম থেকে ধর্মান্তরের চলাচলকে ধরতে হেমন্তদার আবহর টেক্সটা অনেককেই মুগ্ধ করে।
খুব সম্ভবত ‘ইন্দিরা’-তে প্রিমিয়ার শো হয়েছিল ‘বালিকা বধূ’-র। শো চলাকালীন ওই বিশেষ জায়গাটা পেরতেই তরুণ মজুমদারকে বাইরে ডেকে নিলেন হেমন্তদা। বললেন, ‘‘ভাগ্যিস, আপনার কথাটা মেনে নিয়েছিলাম, এখন বুঝতে পারছি, আপনি যেটা বলেছিলেন, সেটা একদম ঠিক।’’
কুণ্ঠাহীনভাবে এমন করেই নিজের দোষ কবুল করতে পারতেন হেমন্তদা। তার জন্য বহু গুণী মানুষের সম্মান আদায় করে নিতেন। মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে।
আমি তখন নর্থ বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি মেডিকেল কলেজে পড়াই। শিলিগুড়িতে থাকি। ওখানে গেলে হেমন্তদা আমার বাড়িতেই উঠতেন। সে বারও শিলিগুড়িতে অনুষ্ঠান। অনেক গায়ক-গায়িকা গিয়েছেন। অনুষ্ঠান চলছে। আমি হেমন্তদার পাশে বসে। গ্রিনরুমে মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়। হঠাৎই গোলমাল বেধে গেল।
তাঁর বহু কালের সঙ্গী সাহিত্যিক-বন্ধু আশুতোষ মুখোপাধ্যায়
কী ব্যাপার? কয়েক জন শ্রোতা মানববাবুকে তাঁর জনপ্রিয় আধুনিক গান গাইতে অনুরোধ করেছেন। উনি কিছুতেই সে সব গাইবেন না। শুধু নজরুলগীতি শোনাবেন। এ নিয়ে বাদানুবাদ। তার মধ্যেই কোনও এক উদ্যোক্তা বলে ফেলেছেন, ‘‘আপনি পেশাদার শিল্পী। টাকা নিয়ে গাইতে এসেছেন যখন, শ্রোতাদের অনুরোধ আপনার রাখা উচিত।’’
তাতে মানববাবু আরও উত্তেজিত, ‘‘কী, আমায় টাকা দেখাচ্ছেন! টাকা ফেরত নিন। আমি গাইব না।’’
অবস্থা ক্রমশ হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে মানববাবুকে ডেকে নিলেন হেমন্তদা। বললেন, ‘‘বোস, সব সময় আসর বুঝে গান গাইবি। নিজের জেদ ধরে থাকবি না। মনে রাখিস, শ্রোতাদের আনন্দ দেওয়াটাই আমাদের কাজ। কয়েকটা নয় আধুনিক গেয়ে নজরুলগীতি গাইবি। এত রাগ করিস কেন?’’ মুহূর্তের মধ্যে দেখলাম, হেমন্তদার পায়ে হাত ছুঁইয়ে মানববাবু বলছেন, ‘‘আমার ভুল হয়ে গেছে। আর কখনও অমন হবে না।’’
মানববাবু গান গেয়ে নেমে আসার পর হেমন্তদা ওঁকে বললেন, ‘‘আমি উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। ওঁরা খুব তাড়াতাড়ি একটা রবীন্দ্র-নজরুল সন্ধ্যা করবেন। তাতে আমি রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইব। তুই নজরুলগীতি।’’
ছ’সপ্তাহর মধ্যে অনুষ্ঠানটি হল। পনেরোটি রবীন্দ্রসঙ্গীত গেয়ে হেমন্তদা নেমে যাওয়ার পর মঞ্চে উঠলেন মানববাবু। আমি বললাম, ‘‘বাড়ি যাবেন তো?’’ উত্তর দিলেন, ‘‘দাঁড়াও, মানবের কয়েকটা গান শুনে যাই।’’ উইংসের পাশে বসে তন্ময় হয়ে মানববাবুর বেশ কয়েকটা গান শুনে তবে উঠলেন হেমন্তদা।
ওঁর এই তদ্গত ভাবটা যে কীসের প্রতি— সঙ্গীত, সহশিল্পী নাকি দুইয়ে মিলিয়ে কোনও নৈর্ব্যক্তিক অনুভূতির, কোনও দিন বুঝিনি!
তাঁর অনুজ আরেক সঙ্গীত পরিচালক অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে শুনেছি, ‘‘হেমন্তদার কাছে ওঁর সুরে গান গাইবার অনুরোধ নিয়ে গেলে উনি বলতেন, গানটা কবে শেখাবে বলো।’’ তোলাবে নয়, শেখাবে। অনুজকেও এ ভাবে শিক্ষকের সম্মান দিতেন উনি। সেই সম্মানটাই বোধহয় মাঝে মাঝেই ফিরে ফিরে এসেছে ওঁর জীবনে। অনেকটা যেন সেই, ‘রাজা সবারে দেন মান, সে মান আপনি ফিরে পান।’
এক দিকে এই সম্মান-প্রদর্শন, অন্য দিকে ওই আকাশছোঁওয়া প্রতিভাধর হয়েও নতজানু থাকা, এই দুইয়ের আশ্চর্য সমাহার হেমন্তদার দ্যুতি যেন আরওই বাড়িয়ে দিয়েছিল।
‘বাল্মীকি প্রতিভা’ লং প্লেইং রেকর্ড বেরনোর পাঁচ-ছ’য় বছর কেটে গিয়েছে। এমনই এক সময় হেমন্তদা শিলিগুড়ি এলেন। যথারীতি আমার বাড়িতে উঠলেন। খুব আড্ডা দিচ্ছেন, রেকর্ড চালিয়ে গান শুনছেন। যখন তখন গেয়েও উঠছেন। হঠাৎ ‘বাল্মীকি প্রতিভা’র লং প্লেইং-এর দিকে চোখ পড়াতে বললেন, ‘‘ও, তোমার আছে দেখছি ওটা। শোনাও তো! আমার এখনও শোনা হয়নি।’’ বললাম, ‘‘এ কী, আপনার কাছে তো একটা কপি থাকার কথা। যেটা রেকর্ড কোম্পানি পাঠিয়ে দেয়।’’
তরুণ মজুমদারের পাশে
বললেন, ‘‘হ্যাঁ, ওরা পাঠিয়েছিল। ব্যস্ততা থাকায় শোনা হয়নি। আমি তো গাইতেই চাইনি। সন্তোষদাকে (গ্রামাফোন কোম্পানির অন্যতম কর্ণধার, রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী) বলেওছিলাম, ও আমার দ্বারা হবে না। উনি এত জোর করলেন, গাইতেই হল। ভোরবেলা গ্রামাফোন কোম্পানির স্টুডিয়োতে পৌঁছে গেলাম। সুচিত্রা (মিত্র) তিন-চার লাইন করে শেখাচ্ছে, আমি রেকর্ড করছি। এ ভাবে সন্ধের আগেই রেকর্ডিং শেষ হয়ে গেল। আমি ওখান থেকেই এয়ারপোর্টে গিয়ে বম্বের ফ্লাইট ধরলাম।’’
রেকর্ড বাজালাম। শুনলেন। বললাম, ‘‘কী অসাধারণ গেয়েছেন!’’ মাথা নেড়ে বললেন, ‘‘ঠিক ভাবে গাইতেই পারিনি। ওটা রত্নাকরের গান হয়নি। হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের গান হয়েছে।’’
রবীন্দ্রগানকে যে কী ভাবে নিতেন! তরুণ মজুমদারের ‘আলোর পিপাসা’ ছবির সময়ের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। অনেক সংস্কৃত শব্দ উচ্চারণ করতে হবে বলে, শাস্ত্রজ্ঞ গোবিন্দগোপাল মুখোপাধ্যায়ের এক ছাত্রীর কাছে উচ্চারণ শিখতেন। নানা ভাষায় গান গেয়েছেন, প্রত্যেক বার এই একই ধরনের অধ্যবসায়ের মধ্যে দিয়ে গেছেন।
হেমন্তদার সবচেয়ে প্রিয় রবীন্দ্র-নৃত্যনাট্য ছিল ‘চণ্ডালিকা’। চণ্ডালিকার সব চরিত্রের সব ক’টি গান অনায়াস দক্ষতায় গাইতেন।
একবারের কথা জানি। কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যর মৃত্যুর কয়েক দিন আগে ওঁর চিকিৎসার খরচ তুলতে কবির বন্ধুরা একটা ঘরোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করলেন। সেখানে ‘চণ্ডালিকা’র গান গাওয়ার কথা সুচিত্রা মিত্র আর হেমন্তদার। শেষ মুহূর্তে কোনও এক কারণে সুচিত্রা মিত্র আসতে পারেননি। উদ্যোক্তারা মহা বিপাকে। হেমন্তদা বললেন, ‘‘কোনও চিন্তা নেই। আমি গেয়ে দিচ্ছি।’’
অথচ এই হেমন্ত মুখোপাধ্যায়কেই কী অদ্ভুতভাবে সমালোচনার মুখে পড়তে হল রবীন্দ্রসঙ্গীতের একটি রেকর্ড বেরনোর পর। যার এক পিঠে ‘যখন ভাঙল মিলনমেলা’, অন্য পিঠে ‘আমার এ পথ’। ট্রেনার ছিলেন প্রখ্যাত রবীন্দ্রসঙ্গীত-বিশেষজ্ঞ অনাদি দস্তিদার। প্রথম গানটিতে সঞ্চারীতে এসে উনি গাইলেন, ‘ভেবেছিলেম ভুলব না আর আমার চোখের জল’। গাইছিলেন ‘গীতমালিকা’ দেখে। সেখানে কথায়, স্বরলিপি-তে অমনই লেখা ছিল। অথচ শেষে শুদ্ধিপত্রে লেখা ছিল, ‘ভুলব না’ নয়, হবে ‘ঝরবে না’। কারও খেয়াল হয়নি। সে ভাবেই রেকর্ড বেরিয়ে গেল। ব্যস, পুরো দায় তখন যেন একা হেমন্তদার। অজস্র বাক্যবাণে বিদ্ধ হতে হল আজীবন মিতভাষী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়কে।
রবীন্দ্রনাথের গানে এমন বিভ্রাট ওঁকে যে কতটা বিপন্ন করে তুলেছিল, যাঁরা কাছের মানুষ, প্রত্যেকে জানতেন।
রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইতে বসে, উনি যেন ঠিক গান নয়, সাধনায় বসতেন। আর ওঁর এই ভাবটা ছড়িয়ে পড়ত শ্রোতাদের মধ্যেও।
রঞ্জি স্টেডিয়ামের একটা অনুষ্ঠানের কথা মনে পড়ছে। মঞ্চে মহম্মদ রফি। দর্শক উত্তেজনায় ফেটে পড়ছে। তাদের উল্লাস সাগরের ঢেউকেও হার মানায়। তুমুল চিৎকারের মধ্যে মঞ্চ ছাড়লেন রফি।
এর পরেই উঠবেন হেমন্তদা। আমরা রুদ্ধশ্বাস। এমন উত্তাল জনতাকে কী করে বাগে আনবেন তিনি?
মঞ্চে উঠলেন। হারমোনিয়াম ধরলেন। তার পরেই অতি পরিচিত সেই জলদগম্ভীর স্বরে বেজে উঠল— ‘আমার কণ্ঠ হতে গান কে নিল…’।
তখন কোথায় সেই আছড়ে ওঠা সাগর-ঢেউ! মুহূর্তে কোন এক জাদুমন্ত্রের মায়ায় নিশুত রাতের নৈঃশব্দ্য ঘনিয়ে এল যেন…