বারান্দা-বিলাস

বারান্দা নিয়ে বিলাসিতা কমবেশি সকলেরই থাকে। ফ্ল্যাটের ঘরগুলো ছোট হলেও একফালি বারান্দা থাকলে যেন জায়গার অভাব পূরণ হয়ে যায়। যে বারান্দা নিয়ে এত পাগলামো, তাকে সামান্য সুন্দর করে সাজালেই, তা হয়ে উঠবে আপনার ‘ভাল-বাসা’।

Advertisement

রূম্পা দাস

শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৮ ০৮:০০
Share:

এই একচিলতে পরিসরে খেলা করে রোদ্দুর, বৃষ্টির আরাম, শীতের ওম আর কত না ভালবাসা! সেই ভালবাসাকে সঙ্গী করেই বারান্দায় বসুক আড্ডার আসর মেঘলা আকাশ। মনখারাপের মেজাজে রাইয়ের আস্তানা ফ্ল্যাটের বারান্দা। কখনও একা লাগলে বারান্দা দিয়েই চলে ইতিউতি চোখ ফেরানো। আবার আনন্দও ভাগ করে নিতে ইচ্ছে করে বারান্দা থেকে দেখতে পাওয়া একচিলতে আকাশ আর রোদ্দুরের সঙ্গে। গল্পটা রাইয়ের একার নয়। বারান্দা নিয়ে বিলাসিতা কমবেশি সকলেরই থাকে। ফ্ল্যাটের ঘরগুলো ছোট হলেও একফালি বারান্দা থাকলে যেন জায়গার অভাব পূরণ হয়ে যায়। যে বারান্দা নিয়ে এত পাগলামো, তাকে সামান্য সুন্দর করে সাজালেই, তা হয়ে উঠবে আপনার ‘ভাল-বাসা’। বারান্দা মানেই গরমে খটখটে রোদ আর বর্ষায় জলে ভেসে একাকার— এই ধারণা পাল্টে ফেলার সময় এসেছে। তাই বারান্দাতেই বসাতে পারেন আড্ডার আসর। দরকার শুধু সামান্য অদলবদল।

Advertisement

সবুজ গালচে

Advertisement

বারান্দায় অনেকেই ছোট ছোট গাছ রাখতে ভালবাসেন। সে ক্ষেত্রে এমন গাছ লাগান, যার পরিচর্যায় খুব বেশি কসরত করতে হয় না। ফ্ল্যাটের মূল অংশ থেকে বারান্দা কাচের দরজা দিয়ে বিচ্ছিন্ন থাকলে, বারান্দাকেই করে তুলুন সাধের বাগান। রেলিংয়ের ধার ধরে মানিপ্ল্যান্ট জাতীয় লতানে গাছ লাগান। বারান্দার মেঝেয় সবুজ ঘাসের গালচে লাগাতে পারেন। এতে কাচের দরজা পেরিয়ে বারান্দায় পা রাখলেই এক লহমায় পৌঁছে যাবেন সবুজের দুনিয়ায়। এক কোণে বসার জন্য বেতের চেয়ার রাখতে ভুলবেন না যেন!

প্রাতরাশ কিংবা সান্ধ্যকালীন মৌতাত

বারান্দা যদি সামান্য বড় হয়, সেখানে ছোট টেবিল এবং চেয়ারের বন্দোবস্ত করতেই পারেন। ঘুমচোখে চায়ের কাপ হাতে সূর্যস্নান বা সন্ধের হাওয়ায় মেজাজ ফুরফুরে হবেই, আবার চার দেওয়ালের মধ্যে ড্রয়িং রুমে বসে খাওয়ার একঘেয়েমিও কাটবে। এ ক্ষেত্রে আসবাব বাছুন অন্য রকম ভাবে। টেবিলে থাকুক কাঠের লগের ছোঁয়া। চেয়ার প্লাস্টিকের হওয়া বাঞ্ছনীয় নয়। রাখতে পারেন বেতের মোড়া।

দোলনার ছন্দ

বাড়িতে অনেকেই দোলনা রাখতে চান। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই পরিসরের অভাবে দোলনা রাখার জায়গা থাকে না। এ বার বারান্দাকেই কাজে লাগান। সিলিং থেকে দোলনা ঝুলিয়ে দিন। দোলনার ভিতরে কুশন রাখুন। পাশে থাকুক ছোট্ট টেবিল। তাতে কফির কাপ কিংবা ফ্রেমবন্দি ছবি রাখতে সুবিধেই হবে। এ বার একটা বই হাতে দোলনায় আরাম করে পা তুলে বসে পড়লেই হল!

পানীয়ের আড্ডা

অনেকের বাড়িতে বারান্দা থাকলেও রোদের আড়াল থেকে বাঁচতে চিক লাগানোর ব্যবস্থা থাকে। অনেক ক্ষেত্রে তা স্থায়ীও হয়। ফলে বারান্দার আমেজ থাকে, কিন্তু রোদ-জল ভিতরে তেমন ভাবে প্রবেশ করতে পারে না। এ রকম ব্যবস্থা থাকলে বারান্দাতেই রাখুন মিনি ফ্রিজ। উপরে ক্যাবিনেট লাগিয়ে ঝুলিয়ে দিতে পারেন কাচের হরেক গ্লাস। ফ্রিজে ফলের রস, স্মুদি থেকে শুরু করে নানা রকম পানীয় রাখতে পারেন। আলোটা নীলচে রাখাই ভাল। বাড়ির বারান্দায় মিনি বার তৈরি করার সুযোগ হাতছাড়া করবেন না!

রাতের তারা

সারা দিন অফিসে হাড়ভাঙা খাটুনি যায়। দু’জনে একান্তে সময় কাটানোর ফুরসতও পান না। অথচ সম্পর্কে সময় আর চমক— দুটোই বড্ড জরুরি। কেউ তাড়াতাড়ি ফিরে এলে বারান্দায় হালকা আলো ঝুলিয়ে দিন। মেঝেয় মোটা গালচে পেতে দিন। ইতিউতি ছড়ানো থাক নরম কুশন। কাঠের বাহারি ট্রে-তে থাকুক প্রিয় মানুষের পছন্দের খাবার। সঙ্গে বই আর পছন্দের গান। ভাল-বাসার বারান্দাকে সঙ্গী করে সম্পর্কেও লাগুক ভালবাসার ছোঁয়া।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন