মগডালে উঠে দেখেছেন ১৯১১-র শিল্ড ফাইনাল

তিনি সাহিত্যিক হেমেন্দ্রকুমার রায়। ছিলেন গড়ের মাঠের নিয়মিত ফুটবল-দর্শক।ছিলেন পাঁড় মোহনবাগানি। ফুটবল হলে নাওয়া-খাওয়া শিকেয় তুলতেন। নিয়মিত ফুটবল খেলা দেখতে যেতেন মাঠে। আর মোহনবাগানের খেলা থাকলে তো কথাই নেই। অন্ধ ভক্ত ছিলেন শিবদাস ভাদুড়ীর। ১৯১১ সালে ‘শিল্ড ফাইনাল’-এ গোরাদের হারিয়ে মোহনবাগানের ঐতিহাসিক জয়ের সাক্ষী ছিলেন হেমেন্দ্রকুমার রায়। সেদিনের সেই অভিজ্ঞতাও অদ্ভুত রকমের।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০১৬ ০০:০৩
Share:

ছিলেন পাঁড় মোহনবাগানি। ফুটবল হলে নাওয়া-খাওয়া শিকেয় তুলতেন। নিয়মিত ফুটবল খেলা দেখতে যেতেন মাঠে। আর মোহনবাগানের খেলা থাকলে তো কথাই নেই।

Advertisement

অন্ধ ভক্ত ছিলেন শিবদাস ভাদুড়ীর। ১৯১১ সালে ‘শিল্ড ফাইনাল’-এ গোরাদের হারিয়ে মোহনবাগানের ঐতিহাসিক জয়ের সাক্ষী ছিলেন হেমেন্দ্রকুমার রায়।

সেদিনের সেই অভিজ্ঞতাও অদ্ভুত রকমের। মাঠের কাছাকাছি পৌছে দেখলেন গোটা দেশের মানুষ প্রায় জড়ো হয়ে গিয়েছে খেলা দেখতে। জনসমুদ্র যেন!

Advertisement

বহু চেষ্টা করেও মাঠের ধারেকাছে পৌঁছতে পারলেন না। তাহলে উপায়?

মন খারাপ করে ইডেন গার্ডেনে ফিরে এলেন। গার্ডেনের সিকিউরিটি গার্ড দয়াপরবশ হয়ে সাহায্য করলেন। তাঁরই দেওয়া লম্বা মইতে চেপে বিশাল এক দেবদারু গাছে উঠে বসলেন হেমেন্দ্র। ওখান থেকে মাঠ দেখা যায়। সেই গাছেও আগে থেকে অনেকে ঝুলে রয়েছে খেলা দেখার জন্য।

খেলার শুরুতেই সাহেবরা গোল দিয়ে দিল। বাঙালি দর্শক বজ্রাহত। তার পরেই মোহনবাগানের শিবদাস ভাদুড়ী তাঁর জাদু দেখাতে শুরু করলেন।

শিবদাসের পায়ে বল। বাকিটুকু হেমেন্দ্রকুমারের কলমেই পড়া যাক— ‘‘গোল! গোওল! গোওওওল। বিশাল জনসাগরের সেই গগনভেদী কোলাহল গঙ্গার ওপার থেকেও শোনা গিয়েছিল। আমার পাশের গাছের একটা উঁচু লম্বা ডালে মাথার উপরকার আরেকটা ডাল ধরে শাখামৃগের মতো সারি সারি বসেছিল দশ বারোজন লোক। উত্তেজনায় আত্মবিস্মৃত হয়ে উপরকার ডাল ছেড়ে তারা দুই হাতে তালি দিতে গেল এবং সঙ্গে সঙ্গে ঝুপ ঝুপ ক’রে মাটির উপরে গিয়ে অবতীর্ণ হল সশব্দে। তাদের আর্তনাদ শুনতে শুনতে সভয়ে আমি কোঁচা খুলে গাছের গুঁড়ির সঙ্গে নিজের দেহকে বেঁধে ফেললুম। কি জানি বাবা, বলা তো যায় না। আমারও যদি দৈবাৎ হাততালি দেবার শখ হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন