সারা দিনের ক্লান্তি কাটাতে ভরসা রাখতে পারেন রাতে। ঘুম যেমন দূর করে শরীরের ক্লান্তি, তেমনই ত্বকের ক্লান্তি দূর করতে পারে রাত্রিকালীন রূপচর্চা। এমনিতেও সারা দিন ঘোড়দৌড়ের মাঝে সময় পাওয়া যায় না রূপচর্চার। তাই রাতে ঘুমের সময়টাই বেছে নিতে পারেন রূপরুটিনের জন্য। তবে জেগে থাকার দরকার নেই। বরং ছোট ছোট টিপ্স মেনে ঘুমোতে গেলেই চলবে।
রাতে রূপচর্চা কেন করবেন?
দিনের বেলায় সাজের জন্য বা ত্বকের রক্ষার জন্যই স্কিন প্রডাক্ট বাছা হয়। যেমন সানস্ক্রিন, ফাউন্ডেশন ইত্যাদি। সারা দিনে ত্বকও ক্লান্ত হয়ে পড়ে শরীরের মতো। তাই রাতের ঘুম যেমন শরীরের ক্লান্তি দূর করে, তেমনই ত্বকের ক্লান্তি দূর করাও জরুরি। খেয়াল রাখবেন, রাতের রূপচর্চায় যেন ত্বক পুষ্টি পায়। তার জন্য দরকার কিছু নিয়ম মেনে চলা।
সিটিএম
রূপরুটিনের গোড়ার কথা এই সিটিএম। ভেঙে বললে যা হয় ক্লেনজ়িং, টোনিং ও ময়শ্চারাইজ়িং। রাতে শুতে যাওয়ার আগে ভাল করে ত্বক পরিষ্কার করা জরুরি। তার জন্য ভাল কোনও ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এ বার টোনার লাগান। মিনিট দশেক অপেক্ষা করে নাইটক্রিম লাগান। নাইট ক্রিমেই মিশিয়ে নিতে পারেন ভিটামিন ই।
টুকরো টিপ্স
• বালিশের কভার যেন সাটিনের হয়। তা হলে চুল উঠবে কম।
• মুখে কোনও প্যাক মেখে ঘুমোতে যাবেন না। কোনও তেল বা ক্রিম জাতীয় বিউটি প্রডাক্টই ব্যবহার করতে পারেন রাতের রূপচর্চায়
ভুরু বা চোখের ল্যাশের জন্য
অনেকেরই ভুরুর গ্রোথ কম, আইল্যাশও পাতলা। ঘন আইল্যাশ ও ভুরু পেতে ঘুমোতে যাওয়া আগে ব্যবহার করতে পারেন ক্যাস্টর অয়েল। ইয়ার বাডে ক্যাস্টর অয়েল নিয়ে ভুরুতে ও আইল্যাশে লাগিয়ে নিন। তবে আইল্যাশে লাগানোর সময়ে সাবধান, তা যেন চোখের ভিতরে চলে না যায়।
ঠোঁটের যত্নে
ফাটা ঠোঁটের সমস্যা থাকলে শোওয়ার আগে ঠোঁটে আমন্ড অয়েল লাগিয়ে নিতে পারেন। ঘুমের মধ্যেই ঠোঁট নরম হয়ে যাবে।
নখের যত্নে
ভাঙা নখ, নখের কোণের চামড়া ওঠার মতো সমস্যা অনেকেরই থাকে। শিয়া বাটার বা নারকেল তেল লাগিয়ে নিন নখে ও তার চারপাশে। এতে কিউটিক্লও নরম থাকবে আর নখও শক্ত থাকবে।
চোখের যত্নে
রাতে ঘুম না হলে ফোলা চোখ বা চোখের নীচে কালি পড়ার মতো সমস্যা এখন খুব সাধারণ। এই সমস্যার মোকাবিলা করতে চোখের চারপাশে কফি অয়েল বা আমন্ড অয়েল মাসাজ করতে পারেন। আন্ডার আই ক্রিম লাগাতে চাইলে রাতটাই আদর্শ সময়।
ব্রণর দাওয়াই
গালে ব্রণ ও ব্রণর দাগ থাকলে তা-ও গায়েব করে দিতে পারেন রাতের অন্ধকারে। তার জন্য সেই ব্রণ বা দাগের উপরে লাগিয়ে নিন টি ট্রি অয়েল। ত্বক খুব স্পর্শকাতর হলে চন্দনবাটাও লাগিয়ে রাখতে পারেন সেই জায়গায়। সকালে উঠে দেখবেন ব্রণ প্রায় নেই। পরপর তিন রাত লাগিয়ে দেখুন, ব্রণ সারবে নিমেষে।
যত্নে থাকুক চুলও
ঈষদুষ্ণ তেল মাসাজ করতে পারেন মাথার স্ক্যাল্পে ও চুলে। আগা ফাটার সমস্যা থাকলে আমন্ড অয়েলের সঙ্গে ল্যাভেন্ডার অয়েল মিশিয়ে চুলে লাগিয়ে নিন। এতে আগা ফাটার সমস্যা মিটে যাবে। আবার ল্যাভেন্ডার অয়েলের সুবাসে ঘুমও আসবে তাড়াতাড়ি।
ঘুম প্রয়োজন
সবশেষে হলেও দরকার সারা রাতের নিশ্চিন্ত ঘুম। তার জন্য কোনও এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহার করতে পারেন বালিশে বা পোশাকে। অনিদ্রার সমস্যায় নেরোলি অয়েল ব্যবহার করতে পারেন।
সারা দিনের পরে রাতে এত কিছু মেনে চলতে হবে ভাবলেই ভয় করে। সে ক্ষেত্রে একটা একটা করে রূপচর্চা শুরু করুন। রাতের এটুকু যত্ন কিন্তু সারা দিন আপনার ত্বককে রাখবে প্রাণবন্ত।
মডেল: তৃণা, ছবি: দেবর্ষি সরকার, মেকআপ: উজ্জ্বল দত্ত, লোকেশন: সুইসোতেল