—ফাইল চিত্র।
শাওন গগনে ঘোর ঘনঘটা... মনটা যেন কেমন কেমন করে উঠল না? নাহ, এ লেখা প্রেমের লেখা নয়। আসলে বৃষ্টি মানে শুধু প্রেম নয়। ঘনঘোর আকাশ, বৃষ্টিমুখরতায় আপনার টবগুলিও হেসে ওঠে ফুলের সাহচর্যে। এই সময় ফুলগাছ লাগানোর জন্যও যথার্থ। দোপাটি, জবা, বেলি, জুঁই, কামিনী... ফুলের গন্ধে রঙে আপনার অন্দরের ভিতর-বাহির যেন নতুন জীবন পায়।
আসলে ব্যস্ত জীবনের একঘেয়েমি কেটে যায় রঙের প্লাবনে। কিন্তু গাছের পিছনে খাটার মতো সময় অনেকেরই নেই, কারও আবার অনীহাও। তাই গাছ লাগানোর কথা ভেবেও পিছিয়ে আসেন। তবে ইচ্ছে থাকলে উপায় ঠিকই হয়। গাছ লাগানোর জন্য এই সিজ়ন এক্কেবারে সঠিক সময়। বর্ষার গাছের সবচেয়ে সুবিধে, খুব একটা জল দিতে হয় না। শুধু খেয়াল রাখতে হবে, গাছের গোড়ায় যেন জল না জমে। সারেরও বিশেষ দরকার হয় না এই সময়ে।
বর্ষার ফুলের মধ্যে দোপাটি ফুলের কথা বলব। তার হরেক রং। অতিথি এলে দোপাটি ফুল তুলে প্লেটে এনে সাজিয়ে রাখতে পারেন। ঘর তার পরশে স্নিগ্ধতা পাবে। তবে মনে রাখবেন, দোপাটিতে নানা রকমের পোকা হয়। তার জন্য নিমপাতা জলে ফুটিয়ে ঠান্ডা করুন। পাতাগুলো নীচে থিতিয়ে পড়লে উপর থেকে জল তুলে নিয়ে, স্প্রে করলে পোকা চলে যাবে। এ ছাড়াও খৈনির ডাঁটা জলে চব্বিশ ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে, সেই জল ছেঁকে স্প্রে করলেও চলবে।
এই সময়ে বহু রকমের জবাও হয়। বর্ষার শেষে বা শুরুতে লাগাতে পারেন কামিনী, কদম। ভরা বর্ষায় অবশ্য এগুলো হয় না। জবা গাছেও ফুল ফুটতে এক-দেড় বছর লাগে। জবা গাছ এই সময়ে খুব তাড়াতাড়ি বড় হয়, কিন্তু ফুল কম হয়। কামিনী গাছেও দু’-তিন বছর পর ফুল ফোটে। কদমও তাই। প্রত্যেক বছর গাছ লাগিয়ে মনের মতো ফুল পাবেন যে গাছে, তা হল দোপাটি। বর্ষার শুরুতে এই গাছ লাগাতে হয়। পঁচিশ-তিরিশ দিনের মাথায় ফুল ফোটে। ফুল থাকে প্রায় তিরিশ-চল্লিশ দিন।
অবশ্য যে কোনও গাছই বর্ষায় লাগালে ভাল। শুধু মাটি তৈরি করে রাখতে হবে বর্ষার আগে। টানা দু’-তিন দিন বৃষ্টি হলে গাছগুলো একটু সরিয়ে রাখুন, যেখানে বৃষ্টির জল বেশি পড়ে না।